ভূমিকা: ঢেকিয়া শাক (বৈজ্ঞানিক নাম: Diplazium esculentum) এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে সর্বত্রে জন্মে।
ঢেকিয়া শাক-এর বর্ণনা:
গ্রন্থিক উপ-বৃক্ষবৎ, ব্যাপক লতানো, শাখান্বিত তবে খাড়া ঘন, শল্কযুক্ত শীর্ষ বিশিষ্ট, শল্ক গাঢ় বাদামী, রেখাকার-বল্লমাকার অথবা বল্লামাকার, ৫.০ x ১.৫ মিমি পর্যন্ত, দীর্ঘাগ্রী, পিড়কা (প্যাপিলি) সহ সপক্ষল (ciliate)। পত্রদন্ড ১০-১৫ সেমি লম্বা, দৃঢ়, খাড়া, গুচ্ছিত, হালকা বর্ণের, সামান্য শল্কযুক্ত, কমবেশী চার কোণ বিশিষ্ট, খাঁজযুক্ত। পাতা মুকুট আকারে সজ্জিত, ৬০-১৫০ সেমি পর্যন্ত লম্বা (পত্রদন্ড সহ), পত্রফলক ৪০-৯৫ X ১৮-২৫ সেমি, কখনো কখনো সরল পক্ষল, পত্রক ১৩-২২ x ৪-১১ সেমি, একান্তর, বেশ দূরে দূরে, গৌণ পত্রক অথবা পক্ষক ৩.০-৬.০ X ০.৬-০.৯ সেমি, একান্তর, উপবৃন্তক, শীর্ষ ভোতা দীর্ঘাগ্রী, প্রান্ত কমবেশী গভীরভাবে খন্ডিত, গোড়া হঠাৎ সরু, বয়ণ উপ-চর্মবৎ, পত্রকঅক্ষ রোমশ, শিরা সূক্ষ্ম, পক্ষল, সুস্পষ্ট অনুর্বর কেন্দ্রীয় মধ্যশিরা সহ প্রতি খন্ডের উভয় পার্শ্বে ৫-৬ এবং শীর্ষভেদী ক্ষুদ্র শিরা বিশিষ্ট। সোরাস রেখাকার, প্রতি উপশিরায় একটি। সোরাসছত্র দূরস্থ শীর্ষে বিচ্ছিন্ন, শিরার উভয় পার্শ্বে সমানভাবে সৃষ্ট (diplazoid), রেণু এক-কেন্দ্রিক, ত্রি-কেন্দ্রিক, পার্শ্বীয় দৃষ্টিকোণে অবতলীয়-উত্তল এবং মেরু দৃষ্টিকোণে আয়তাকার, বহি:ত্বক (এক্সাইন) বাদামী, পেরিন অনুপস্থিত।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: x = ৪০, ৪১ (Kato and Kramer, 1990) ।
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: ভেজা স্যাতসেঁতে ছায়াযুক্ত স্থান। বংশবিস্তার হয় গ্রন্থিক এবং রেণু দ্বারা।
ঢেকিয়া শাক-এর বিস্তৃতি:
ভারত, চীন, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং নিউগিনি। বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, রংপুর এবং সিলেট জেলাসমূহে এই প্রজাতি পাওয়া যায়। (Mirza and Rahman, 1997)
অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: সবজি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার: পুষ্টির জন্য গর্ভবতী মায়েদের দেয়া হয়।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৫ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ঢেকিয়া শাক প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ঢেকিয়া শাক সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি অরণ্যাঞ্চলে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র:
১. মমতাজ মহল মির্জা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৫ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৭১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Moushomi B.C.
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।