ভূমিকা: লাল পাথরকুচি (বৈজ্ঞানিক নাম: Kalanchoe blossfeldiana, ইংরেজি: flaming Katy, Christmas kalanchoe, florist kalanchoe and Madagascar widow’s-thrill) হচ্ছে Crassulaceae পরিবারের কলনসো গণের একটি সপুষ্পক বীরুৎ। এটিকে বাংলাদেশে আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে বা গৃহে চাষাবাদ করা হয়। এই বীরুৎটি বাড়ির টবে বা বাগানের শোভাবর্ধন করে।
বর্ণনা: লাল পাথরকুচি রসালো, ঋজু, বহুবর্ষজীবী বীরুৎ প্রকৃতির। এদের কান্ড দৃঢ়, গোলাকৃতি, রোমশ বিহীন, লালাভ-সবুজ। পত্র সরল, প্রতিমুখ, তির্যক, সবৃন্তক, অনুপপত্রী, ডিম্বাকার, গোল দন্তর, শীর্ষ গোলাকার।
পুষ্পবিন্যাস পেনিকুলেট সাইম। পুষ্প ঋজু, সবৃন্তক, সহপত্রী, বহুপ্রতিসম, উভলিঙ্গ, গর্ভপাদপুষ্পী। বৃতি ৪টি বৃত্যংশ নিয়ে গঠিত, মুক্ত, লালাভ সবুজ, স্থায়ী। দলমন্ডল ৪টি পাপড়িযুক্ত, মূলীয় অংশে যুক্ত, দলনালি লম্বা, খন্ড ৪টি, বিস্তৃত, লাল।
পুংকেশর ৮ টি, ২সারিতে বিন্যস্ত, দলমন্ডলের গলনালিতে সন্নিবিষ্ট। গর্ভপত্র ৪টি, মুক্ত গর্ভপত্রী, সবুজ, রোমশ বিহীন, প্রতিটি গর্ভপত্র লম্বা গর্ভদন্ড এবং মুন্ডাকার গর্ভমুন্ড নিয়ে গঠিত।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩৪, ৬৮ (Fedorov, 1969).
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: শুষ্কাঞ্চল, প্রখর আলো যুক্ত উদ্যান। এই উদ্ভিদের পাতা মাটিতে রেখে দিলে পাতার প্রতিটি খাঁজ থেকে গাছ হয়। শাখা থেকে নতুন চারা হয়। ফুল ও ফল ধারণ ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে এর ফুল ফোটে।
বিস্তৃতি: বিশ্বজনীন বিস্তার। বাংলাদেশে উদ্যানে বিশেষ করে গৃহ উদ্যানে চাষাবাদ করা হয়। অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্বের দিক বিবেচনায় লাল পাথরকুচি বাহারি উদ্ভিদরূপে রোপণ করা হয়।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার: কাটা ও ক্ষত স্থান থেকে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য পাতা ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বড় পর্তুলাকা, দুর্বা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে বড় লাল পাথরকুচি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৯৮-২৯৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Hatem Moushir
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।