ভূমিকা: বড় চমকি অর্কিড (বৈজ্ঞানিক নাম: Paphiopedilum insigne) অর্কিড পরিবারের পাফিওপেডিলাম গণের বিরুৎ। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-৪ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রাপ্ত এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন হিসেবে বিবেচিত।
বর্ণনা: স্থলজ বীরুৎ। পাতা ২০-৩০ সেমি লম্বা, তীক্ষাগ্র, ফ্যাকাশে সবুজ, চাবুক আকৃতির, মসৃণ, বিভিন্ন বর্ণের চৌখুপি দ্বারা শোভিত নয়। ভৌম পুষ্পদন্ড ৩০ সেমি লম্বা, ১টি থেকে ২টি পুষ্প বিশিষ্ট, আয়তাকার, চেপ্টা, বৃহদাকার মঞ্জরীপত্র এবং গর্ভাশয় রোমশ, মঞ্জরীপত্র গর্ভাশয়ের সমান।
পুষ্প ১০-১২ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট, উজ্জ্বল। পৃষ্ঠীয় বৃত্যংশ আপেল সবুজ, বেগুনি দাগ বিশিষ্ট, বৃহৎ ধনুকাকার, বর্তুলাকার-ডিম্বাকার, কিনারা কিঞ্চিৎ নিম্নমুখী বক্র, অগ্রভাগ সাদা, পার্শ্বীয় বৃত্যংশ অপেক্ষাকৃত খাটো, ফ্যাকাশে। পাপড়ি রৈখিকাকার-আয়তাকার, মসৃণ, বৃত্যংশ অপেক্ষা লম্বা, সাদা অগ্রভাগ এবং বেগুনি শিরা বিশিষ্ট সবুজ, কিনারা ঢেউখেলানো। লিপ প্রশস্ত, হলুদ বা সবুজ, ভেতরের গাত্র বেগুনি, তামাটে হলুদ, বন্ধ্যা পুংকেশর একটি কেন্দ্রীয় ক্যালাস সহ রোমশ, স্কুল হেলমেট আকৃতির বা প্রায় বর্গাকার। ফুল ধারণ: অক্টোবর-মার্চ (Hooker, 1890).
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৮ (Mehra, 1983).
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: পার্বত্য অঞ্চলের উর্বর মৃত্তিকা। মূলাকার কান্ড পৃথকীকরণের মাধ্যমে বংশ বিস্তার হয়।
বিস্তৃতি: ভারত এবং ভুটান। বাংলাদেশে প্রজাতিটি সিলেট জেলা থেকে রেকর্ড হয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: এই প্রজাতিটির পুষ্প অতি সুদৃশ্য এবং আকর্ষণীয়, সুতরাং ইহার ভাল উদ্যানতাত্ত্বিক গুরুত্ব আছে।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার: জানা নেই।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বড় চমকি অর্কিড প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা হয়েছে আবাসস্থল ধ্বংস এবং বাংলাদেশে তথ্য অপর্যাপ্ত ও অতি বিরল প্রতীয়মান কারণ Wallich কর্তৃক প্রথম রেকর্ডের পরে ইহা সংগৃহীত হয়নি। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি মহাবিপন্ন। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে প্রজাতিটি পুনরায় খুঁজে বের করার জন্য জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। [১]
তথ্যসূত্র:
১. এম. কে হুদা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১২ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: David J. Stang
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।