আলু জনপ্রিয় ও পরিচিত বিরুৎ

আলু পরিচিত ও জনপ্রিয় খাবার। বাঙালির খাবারের তালিকায় আলুর ব্যবহার তুলনামূলক বেশী। এর যেমন তরকারি খাওয়া হয় তেমনি নাস্তাও বানানো হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া আলুর চাষের জন্য উপযোগী। বাজারে আলুর শাক ও বিভিন্ন ধরনের আলু পাওয়া যায়। গুণ বিচারে এটি যেমন অসাধারণ তেমনি এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম আছে। আলোচ্য লেখাতে তা উল্লেখ করা হলও।

আলু-এর পরিচয়:

প্রায় সারা বছর ধরেই আলুর চাষ হয়। আলুর গাছ সৃষ্টি হয়েছে অন্য প্রজাতি থেকে, এটি তাই সংকর প্রজাতির গাছ। বর্ষজীবী উদ্ভিদ। গাছ সাধারণতঃ ২। ৩ ফুট লম্বা, মাটিতে গড়িয়ে পড়ে, প্রচুর শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট। যৌগিক পত্র, ৫–১টি ডিম্বাকৃতি উপপত্র নিয়ে এক একটি পত্র। ফুল গোলাপী বা বেগুনী রঙের আভাযুক্ত সাদা রঙের। ফল গোলাকার, তাতে পাতলা, চ্যাপ্টা, ডিম্বাকৃতি বহু বীজ থাকে। মূল মাটির গভীরে বেশি যায় না। আর আলু হচ্ছে ভূমিস্থ রূপান্তরিত কাণ্ড, অর্থাৎ কাণ্ডের কিছু অংশ মাটির তলায় স্ফীত হয়ে আলুর সৃষ্টি হয়। এই আলুতেই অঙ্কুর বেরোয় এবং সেগুলিই বীজ হিসেবে ব্যবহার্য। আলুর ইংরেজী নাম Potato, বোটানিক্যাল নাম Solanum tuberosum Linn., ফ্যামিলী Solanaceae.

খাওয়ার নিয়ম:

আলু থেকে নানা প্রকারের খাদ্যদ্রব্য তৈরী হয় বা হতে পারে। তাছাড়া সুরাসার, স্টার্চ প্রভৃতি তৈরী করতে এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে অধিক। আলুর তরকারি কিংবা আলুর শাক অধিক খাওয়া ভাল নয়। আলুকে সিদ্ধ করার পরই উপরের খোসা ছাড়ানো উচিত। আলুর গাছ বা শাক খেতে হলে গাছের নরম ডগা ও পাতা নিতে হবে। যাঁরা অম্বলের কিংবা মধুমেহ রোগে ভুগছেন, তাঁরা আলুকে সযত্নে পরিহার করবেন। ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ— আলু ও আলু শাক

আলু-এর গুণপনা

আলুকে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, এতে প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট্স, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, কপার, সালফার, ক্লোরিন, এটি স্কার্ভিরোগ, দগ্ধব্রণেও আয়োডিন, জিঙ্ক প্রভৃতি থাকে। তাছাড়া ভিটামিন-এ, বি, সি প্রভৃতিও পাওয়া যায়। আলু মূল্যবান বেশ কয়েকটি অ্যামাইনো এসিড এবং এনজাইম সমৃদ্ধ। প্রতিষেধক, মূত্রকারক, দুগ্ধবর্ধক, কোষ্ঠবদ্ধতা ও স্নায়ুদৌর্বল্য নষ্ট করে। ব্যবহার্য। পাতার ক্বাথ কোষ্ঠবদ্ধতা, কফ- কাসি, প্রতিশ্যায়, অগ্নিমান্দ্য, মূত্রকৃচ্ছ্রতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে হিতকর।

আরো পড়ুন:  সিনামোমান গণের প্রজাতিগুলোর বৈশিষ্ট্য

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ১৩০-১৩১।

Leave a Comment

error: Content is protected !!