বনওকড়া এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

মাটি আবহাওয়ার জন্য এই গাছ ৪/৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে দেখা যায়। গাছটিতে শাখা-প্রশাখা বিশেষ একটা হয় না। পাতা অনেকটা হৃৎপিণ্ডাকৃতি, তিনটি খাঁজ বিশিষ্ট (3 lobed) এবং সমগ্র পাতাটির কিনারা করাতের ন্যায় কাটা কাটা। বনওকড়া গাছের গোড়ার পাতার বোঁটা লম্বা, ডগার দিকের পাতা ছোট, আয়তাকার, অগ্রভাগ ক্রমশ সরু, কিনারা কাটাকাটা এবং পাতার কোলে হলুদ রঙের ফুল ফোটে। পুষ্পদণ্ডে একসঙ্গে অনেক ফুল থাকে। ফল গোলাকার অথবা ডিম্বাকৃতি ও মসৃণ। ফলের মাথার দিকে হুকের মত বাঁকানো কাঁটা থাকে। বোধহয় এজন্যই এর অন্য একটি নাম হুড়রোমাশ্রয়ফলা। আকারে ফলগুলি অনেকটা ছোলার মত। অতি সহজেই কাপড়ে আটকে যায় । সাধারণতঃ অক্টোবর থেকে জানুয়ারী মাসের মধ্যে গাছে ফুল ও ফল হয় ।

বনওকড়া-এর প্রজাতিসমূহ

হিন্দী ভাষাভাষী অঞ্চলে একে চিকতি, বাংলায় বনওকড়া, মহারাষ্ট্রে ঝিঞ্চিরা বলে। এর বোটানিক্যাল নাম triumfetta rhomboidea Jacq., পূর্বে এটির নাম ছিল T. bartramia Linn., T. angulata Lam প্রভৃতি। ফ্যামিলী Tiliaceae. এই গণের আর একটি প্রজাতি হলো triumfetta rotundifolia Lam, এটিও ভারতের প্রায় সর্বত্র জন্মে। এর ফলও কাঁটাযুক্ত। ওই গণের প্রায় ৮টি প্রজাতি ভারতে পাওয়া যায়।

T. rhomboidea প্রজাতিটির অত্যধিক সমাদর তার মূল্যবান আঁশের জন্য । অন্য প্রজাতিটি থেকেও আঁশ পাওয়া যায়, তবে ততটা নয়। নরম ও চিক্কণ আঁশ পাটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে ।

Malvaceae পরিবারের Urena lobata Linn. নামক প্রজাতিটিকে বাংলার কোথাও কোথাও বনওকড়া বলে। তা কিন্তু ঠিক নয়। এটি ঢ্যাঁড়শের স্বগোত্রীয় এবং  শিবকালী ভট্টাচার্যের বন ঢ্যাঁড়শ শিরোনামের প্রবন্ধে একে নিয়ে পৃথক আলোচনা করা হবে ।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ২৯২।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি tropical.theferns.info থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম:  Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!