ওট বা জই খাওয়ার কয়েকটি গুণাগুণ

ওট বা জই খাদ্য স্নায়ু-উত্তেজক, বলকর, নিদ্রাকারক, স্নিগ্ধ, শীতল ও মৃদু বিরেচক গুণ-সম্পন্ন। এটি ডিপথেরিক পক্ষাঘাত, আমাশা, জ্বরান্তিক দুর্বলতা, ক্লৈব্য, অনিদ্রা, হৃৎস্পন্দনাধিক্য, দন্তক্ষয়, কোলেস্টেরলের আধিক্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যবহার্য। Oat হৃৎপেশীকে সবল করে এবং মূত্রসংবহন তন্ত্রকে সতেজ রাখে। এটি মূত্রকারক এবং দ্রুত মূত্রাশয় ও মূত্রনালীর আক্ষেপ নিবারণ করে। এছাড়া মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের উপরও ওটের ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়।

ওট বা জই-এর ঔষধি ব্যবহার

১. মূত্রকৃচ্ছ্র, বস্তি প্রদাহ ও মূত্রনালীর যন্ত্রণায়: প্রায় ক্ষেত্রে এগুলি একসঙ্গে আসে। একসঙ্গে আসুক আর সম্মিলিতভাবেই আসুক, ওট সিদ্ধ জল কয়েকদিন পান করলে উপশম পাবেন। খোসা সমতে অথবা খোসাহীন ওট ২৫ গ্রাম আধ কুটা করে ৫ । ৬ কাপ জলে সিদ্ধ করার পর আন্দাজ কাপ দুয়েক থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে, ঠাণ্ডা হলে সেটিকে সকালের দিকে অর্ধেকটা ও বিকালের দিকে অর্ধেকটা পান করতে হবে।

২. রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্যে: উপরিউক্ত পদ্ধতিতে প্রস্তুত ওট-এর ক্বাথ দু’বেলা খেলে উপকার পাবেন। মাসখানিক খাওয়ার পর রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কতটা আছে, সে বিচার করে পুনরায় এই যোগটি খেতে কিংবা বন্ধ করতে হবে।

৩. রোগান্তিক দুর্বলতায়: এক্ষেত্রে ওট-এর ক্বাথ পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে প্রস্তুত ক’রে সকালে ও বিকালে কিছুদিন খাওয়া প্রয়োজন। এর দ্বারা ধীরে ধীরে দুর্বলতা চলে যাবে এবং হৃৎস্পন্দনাধিক্য থেকে থাকলে সেটিও থাকবে না ।

৪. ক্লৈব্য বা ক্লীবতায়: এটি আবার অনেক রকমের—প্রথমতঃ স্ত্রী বা পুরুষের মৈথুন শক্তির স্বল্পতা হেতু যেটি আসে, তাকে Sexual weakness বা মৈথুনাশক্তি বলা যায়; দ্বিতীয়তঃ স্ত্রী ও পুরুষের বীজদোষ বশতঃ সন্তানোৎপানে যে অক্ষমতা, তাকে Impotency বা Sterility বলে। পুরুষের মৈথুনাশক্তিকে ধ্বজভঙ্গ বলা হয়। এবার দেখুন—কখন উপরিউক্ত যোগটিকে ব্যবহার করবেন। স্ত্রী কিংবা পুরুষের সহবাসে অনিচ্ছা দেখা দিলে (মানসিক কারণ কিংবা অস্ত্রোপচার ঘটিত কারণ থাকলে কাজ হবে না) জৈ-এর ক্বাথ মাস তিনেক খেতে হবে। রক্তপরীক্ষা ক’রে মাঝে মাঝে দেখা উচিত Cholesterol-এর মাত্রা খুব কমে যাচ্ছে কিনা । তাহলে মাত্রা কমাতে হবে। পুরুষের বীজদোষজনিত ক্ষেত্রে অর্থাৎ যদি বীজের স্বল্পতা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

আরো পড়ুন:  পুদিনা ভেষজ গুণসম্পন্ন বর্ষজীবী গুল্ম

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ২৩৫-২৩৬।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম:  Gurcharan Singh

Leave a Comment

error: Content is protected !!