ভূমিকা: বড় হাতিশুর, লাল হাতিশুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Acalypha hispida, ইংরেজি: Chenile Plant, Red-hot Captail, Foxtail) হচ্ছে Euphorbiaceae পরিবারের Acalypha গণের একটি সপুষ্পক গুল্ম। এই গুল্মটি অনেকে বাড়ির টবে বা বাগানের শোভাবর্ধন করার জন্য লাগিয়ে থাকে।
বৈজ্ঞানিক নাম: Acalypha hispida Burm. f., Fl. Ind.: 203. (1768). ইংরেজি নাম: Chenile Plant, Red-hot Captail, Foxtail. স্থানীয় নাম: বড় হাতিশুর, লাল হাতিশুর। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Malpighiales . পরিবার: Euphorbiaceae. গণ: Acalypha. প্রজাতি: Acalypha hispida.
শিবঝুল গাছের বর্ণনা:
প্রচুর শাখায়িত ভিন্নবাসি গুল্ম, প্রায় ২ মিটার উঁচু, তরুণ বিটপ ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত। পরবর্তীতে স্বল্প রোমশ বা রোমশ বিহীন। পত্র ১০-১৫ x ৭-১১ সেমি, ফলক হীরকাকৃতি ডিম্বাকার, পাদদেশ কীলকাকার, শীর্ঘ তীক্ষ্মা, দীর্ঘা, দস্তুর, ঝিল্লিযুক্ত, ৫ শিরাল, উভয় পৃষ্ঠ স্বল্প। রোমশ, উজ্জ্বল সবুজ, শিরা কখনও লালাভ, বৃন্ত ১-৫ সেমি লম্বা, উপপত্র ভল্লাকার, ৫-৭ মিমি লম্বা। পুষ্পবিন্যাস অক্ষীয়, একল, স্পাইকেট খাটো দন্ডযুক্ত, পুংপুষ্প বিন্যাস অদৃশ্য, স্ত্রী পুষ্প বিন্যাস ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা, পুষ্প ঘন। সন্নিবিষ্ট, অক্ষরোমশ, মঞ্জরীপত্র ক্ষুদ্র, ডিম্বাকার, উজ্জ্বল লাল।
স্ত্রী পুষ্প অদণ্ডক, বৃত্যংশ ৩-৪ টি, ত্রিকোণাকার ডিম্বাকার, ০.৭ মিমি লম্বা, সূক্ষ্মাগ্র, গর্ভাশয় অর্ধগোলাকার, ত্রিখন্ডিত, আড়াআড়ি ১ মিমি, ঘন রোমশ, গর্ভদন্ড ৫-৭ মিমি লম্বা, ঝালর সদৃশ উজ্জ্বল লাল। ফল ক্যাপসিউল। বীজ অঙ্কীয় খাঁজযুক্ত, সস্য রসালো।
ক্রোমোসোম সংখ্যা:
2n = ১১২ (Fedorov, 1969).
শিবঝুল গাছের বংশ বিস্তার ও চাষাবাদ:
উদ্যানে বাহারি গাছ রুপের জন্য রোপণ করা হয়।ফুল থেকে যে বীজ হয় তা থেকে নতুন চারা জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এই গাছে ফুল ফোটে।
বিস্তৃত:
ভারত, শ্রীলংকা ও মায়ানমার। বাংলাদেশের সিলেট জেলায় চাষাবাদ করা হয়।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্বের দিক:
পুষ্প উদরাময় এবং তদ্রুপ পীড়ায় ভেষজ ওষুধরুপে ব্যবহার করা হয়। পত্র আলসার রোগে প্রয়োগ করা হয় (Kirtikar et al., 1935)।।
শিবঝুল গাছের অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বড় হাতিশুর, লাল হাতিশুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণে সংকটাপন্ন এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কাগ্রস্থ হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে বড় হাতিশুর, লাল হাতিশুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। তবে প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে উদ্ভিদ রক্ষার জন্য এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন ও বাগানে অধিক আবাদের উৎসাহ করা যেতে পারে এর সৌন্দর্যের কারণে।[১]
তথ্যসূত্র:
১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৮৯-৩৯০ । আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।