বর্ণনা: ঋজু, বহুবর্ষজীবী বীরুৎ বা উপগুল্ম, সাধারণত অনমনীয়, ০.৩-১.০ মিটার উঁচু, কাণ্ড সাধারণত নিম্নাংশ হতে শাখাযুক্ত, সরেখ, কৌণিক, পর্বের উপরিভাগ পুরু । পত্র সরল, ২-১২ x ১.৫-৮.০ সেমি, প্রতিমুখ, বর্তুলাকার, বিডিম্বাকার বা উপবৃত্তাকার, নিম্নাংশে সরু, পত্রবৃন্ত খর্ব, ০.৩-১.৫ সেমি লম্বা, অগ্রভাগ আকস্মিকভাবে স্থুলাগ্র বা সূক্ষ্মাগ্র, অখন্ড, চ্যাপ্টা, কমবেশি তরঙ্গিত, উভয় পৃষ্ঠে সমস্ত অংশ জুড়ে কোমলভাবে রোমশ।
পুষ্পবিন্যাস প্রান্তীয় এবং পার্শ্বীয় স্পাইক, ১০-৩৫ সেমি দীর্ঘ, ঋজু, মঞ্জরীদন্ড কিছুমাত্রায় শক্ত ও সবল, অনমনীয়, কৌণিক-সভঙ্গ, রোমশ বা অণুরোমশ। পুষ্প সবুজাভ, মসৃণ, স্পাইকে অনমনীয়ভাবে নিচের দিকে বক্র, যা ফলে দীর্ঘায়িত। মঞ্জরীপত্র স্পষ্টতঃ ডিম্বাকার, দীর্ঘ দীর্ঘাগ্র, তীক্ষ্ম নয়, প্রায় ৩ মিমি দীর্ঘ, মঞ্জরীপত্রিকা প্রশস্তভাবে ডিম্বাকার, পুষ্পপুটের বিপরীতে চাপা। পুষ্পপুট খন্ডক ৫টি, ডিম্বাকার আয়তাকার বা প্রশস্তভাবে বল্লমাকার, অগ্রভাগ ঝিল্লিময় প্রান্ত দ্বারা তীক্ষ্মাগ্র। পুংকেশর ৫টি, অপ্রকৃত বন্ধ্যা। পুংকেশর কর্তিতাগ্র বা সূক্ষ্ম সভঙ্গ, পুংদন্ড, উজ্জ্বল। ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ১৪, ৪২ (Fedorov, 1969)।
চাষাবাদ ও বংশ বিস্তার: আপাং রৌদ্রজ্জ্বল উন্মুক্ত এলাকা, রাস্তার পার্শ্ব এবং পতিত স্থান, আদর্শভাবে ময়লার স্তুপে জন্মানো উদ্ভিদ। ফুল ও ফল ধারণ সারা বছর, অধিক ফুল হয় জুন-অক্টোবর। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।
বিস্তৃতি: বিশ্বব্যাপী গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উষ্ণতর অঞ্চল সমূহ । বাংলাদেশে এই উদ্ভিদ বন্যভাবে সমগ্রদেশে জন্মে থাকে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্বের দিক: এ উদ্ভিদ শোথ বা উদরী রোগ, অর্শরোগ, ত্বকের বিদারন বা ফুসকুড়ি, ব্রণ, গনোরিয়া, নিউমোনিয়া, উদরাময়, সাপে কাটা, বৃশ্চিক দংশন এবং বাতজ্বর জাতীয় সমস্যায় ব্যবহৃত হয় (Kirtikar et al., 1935)। মূল ক্ষত সংকোচন, পেটের টিউমার বা পাকস্থলীর ব্যথা প্রশমনে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বীজ বমন উদ্রেককর ও জলাতঙ্ক রোগে ব্যবহৃত হয়। পিত্তঘটিত রোগ ঘোলের সাথে বীজচূর্ণ ঔষধ হিসেবে দেওয়া হয় (Ghani, 2003)। আপাং-এর ঔষধি ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পড়ুন:
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আপাং প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে আপাং সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১.ইসলাম, এবিএম রবিউল (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”। in আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৮৮–৮৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।