সিলপাতি বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ

উদ্ভিদ

সিলপাতি

বৈজ্ঞানিক নাম: Breynia retusa (Dennst.) Alston, Ann. Roy. Bot. Gard (Peradeniya) 11: 204 (1929). সমনাম: Phyllanthus retusus Dennst. (1818), Breynia patens (Roxb.) Benth. (1832). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: সিলপাতি। কাঞ্চন। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Malpighiales. পরিবার: Phyllanthaceae. গণ: Breynia  প্রজাতির নাম: Breynia retusa

ভূমিকা: সিলপাতি (বৈজ্ঞানিক নাম: Breynia retusa) Phyllanthaceae পরিবারের এক প্রকারের বৃক্ষ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশে জন্মে। এই প্রজাতিটি ভেষজ গুণসম্পন্ন।

সিলপাতি-এর বর্ণনা:

গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ, প্রচুর শাখান্বিত, শাখা বক্র, ছোট শাখা সরু, কোণাকৃতি, বিস্তৃত, প্রায় অণুভূমিক, মসৃণ, ধূসর। পত্র দ্বিসারী, ১.৩-২.৮ X ০.৮-১.৬ সেমি, প্রশস্ত উপবৃত্তাকার ঝিল্লি যুক্ত, স্থূলাগ্র, উপরের পৃষ্ঠ হালকা সবুজ, শুষ্ক অবস্থায় বাদামী, নিচের পৃষ্ঠ ফ্যাকাশে, প্রধান শিরা ৩৫ জোড়া লম্বা, বৃন্ত ১.৬ মিমি, রোমশ বিহীন।

পুংপুষ্প: সবৃন্তক, ১ থেকে একাধিক, পত্র কক্ষে জন্মে, বৃন্ত ৪-৮ মিমি লম্বা, কৈশিক, মঞ্জুরীদত যুক্ত, রোমশ বিহীন, বৃতি ৪৫ x ২.৭-৪.০ মিমি, ফ্যকাশে হলুদ, কোণাকুতি-ঘন্টাকার, অস্পষ্ট ৬ খন্ডিত, একাত্তর খন্ড ক্ষুদ্রতর।

স্ত্রীপুস্প: সবুজাভ, একল, বৃন্ত ৩-৪ মিমি লম্বা, পুংপুষ্পের বৃন্ত অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর, বৃতি ঘন্টাকার, ৬ খতিত, গর্ভাশয় বিকোণাকার, চাপা, কর্তিতা, গর্ভদত্ত ৩টি, যুক্ত, শক্ত, ২ খতিত। ফল ক্যাপসিউল, চাপা গোলাকার, ব্যাস ১৩-১৭ মিমি লম্বা, অস্পষ্ট ৩ খন্ডিত, কমলা লাল, রসালো, বিদারী। বীজ ৩টি, ৬ মিমি লম্বা, নীলাভ ধূসর, বীজোপাঙ্গ কমলা-হলুদ।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৫২ (Kumar and Subramaniam, 1986).

সিলপাতি-এর আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

পাহাড়ী ঢাল, পথিপার্শ্ব, সূর্যকরোজ্জ্বল মুক্ত। ফুল ও ফল ধারণ সারা বর্ষ ব্যাপী। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি: ভারত, মায়ানমার ও শ্রীলংকা। বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম জেলায় জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যৱহার ও গুরুত্ব:

উদ্ভিদ সংকোচক। অঙ্গের প্রদাহ ও রক্তের পীড়ায় ভেষজ ওষুধ রূপে ব্যবহার করা হয় (Kirtikar et al., 1935) ।

আরো পড়ুন:  শিলারস এশিয়ার দেশসমূহে জন্মানো ভেষজ প্রজাতি

জাতিতাত্বিক ব্যবহার:

ভারতে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায় কান্ডের রস চোখের প্রদাহে ব্যবহার করে (Caius, 1998) ।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) সিলপাতি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে সিলপাতি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির যথাস্থানের বাইরে সংরক্ষণের প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪০৭-৪০৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!