ভূমিকা: পাতা বাহার হচ্ছে ইউফরবিয়াসি পরিবারের কোডিয়াম গণের একটি সপুষ্পক গুল্ম। এটিকে বাংলাদেশে আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে বা গৃহে চাষাবাদ করা হয়। বাড়ির টবে বা বাগানের শোভাবর্ধন করে এই ছোট বৃক্ষ। এটি আকারে বেশি বড় হয় না ও পাতায় নানা রং থাকে।
বর্ণনা: অতিশয় শাখায়িত চিরহরিৎ গুল্ম, প্রায় ১.৫ মিটার উঁচু, পল্লব বাদামী, তরুণ অংশ সমান রোমশ বা রোমশ বিহীন। পত্র ৫-২৭ x ১-৫ সেমি, পরিবর্তনশীল, ডিম্বাকার ভল্লাকার থেকে রৈখিক, স্থুলাগ্র থেকে সূক্ষ্মাগ্র, অখন্ড বা খন্ডিত, কাগজবৎ থেকে চর্মবৎ, পার্শ্বীয় শিরা প্রায়শ অসংখ্য, রোমশ বিহীন, উজ্জ্বল, সাদা, হলুদ বা লাল দাগযুক্ত মোটা, শিরা পক্ষল, বৃন্ত ১.০-২.৫ সেমি লম্বা, উপপত্র ক্ষুদ্র বা অনুপস্থিত। পুংমঞ্জরী ১৫-৩৫ সেমি লম্বা, মঞ্জরীপত্র ক্ষুদ্র।
পুংপুষ্প: বৃন্ত ১-৩ সেমি লম্বা, বৃত্যংশ অর্ধগোলাকার, অবতল, ২-৩ x ২-৩ মিমি, রোমশ বিহীন, সবুজাভ বা হলুদাভ সাদা, পাপড়ি ৫-৬টি, দ্বিখন্ডিত, ১ মিমি লম্বা, চাকতি ৫টি গ্রন্থিযুক্ত, লাটিমাকার, কর্তিতা, বাঁশির ছেদার ন্যায় খাজকাটা, পুংকেশর অনেক, পুংদন্ড ৪ মিমি লম্বা, মুক্ত, সাদা, পরাগধানী ০.৫ মিমি লম্বা, হলুদ।
স্ত্রীপুষ্প: স্ত্রীমঞ্জরী ৭-১০ সেমি লম্বা। বৃন্ত ১-২ মিমি লম্বা বৃত্যংশ ১×১ মিমি, চাকতি আড়াআড়ি ১ মিমি, গর্ভাশ ৩ কোষী, প্রতিকোষে ডিম্বক ১টি, গর্ভদন্ড ৩-৪ মিমি লম্বা সরল, পশ্চাত্মখী বক্র বা ছড়ানো।
ফল ত্রিখন্ডিত বা অর্ধগোলাকার ক্যাপসিউল, মসৃণ, লালাভ বাদামী, বিভিন্ন রঙিন দাগ যুক্ত। ফুল ও ফল ধারণ: সারা বর্ষ ব্যাপী এই গাছে ফুল ফোটে। [১]
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ১২০ [২]
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: উদ্যান ও গৃহাঙ্গন এই গাছ লাগানো হয়। গাছের শাখা বা ডাল কেটে পানিতে রেখে শিকড় গজিয়ে লাগালে নতুন চারা করা যায়।
বিস্তৃতি: সমগ্র উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে জন্মে। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্বের দিক: বাহারি উদ্ভিদরূপে গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাতা বাহার প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পাতা বাহার সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।[৩]
তথ্যসূত্র:
১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
২. Kumar, V. and Subramaniam,, B. 1986 Chromosome Atlas of Flowering Plants of the Indian Subcontinent. Vol.1. Dicotyledons Botanical Survey of India, Calcutta. 464 pp.
৩. বুশরা খান প্রাগুক্ত, প. ১১৮-১১৯।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Forest and Kim Starr
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।