বনচণ্ডাল বা তুরুত চন্দাল এশিয়ায় জন্মানো গুল্ম

বনচণ্ডাল বা তুরুত চন্দাল

বৈজ্ঞানিক নাম:Desmodium motorium (Houtt.) Merr., J. Arn. Arb. 19:345 (1938). সমনাম : Hedysarum motorium Houtt. (1779), Desmodium gyrans (L. f.) DC. (1825), Codariocalyx gyrans (L. f.) Hassk. (1842). ইংরেজি নাম: Indian Telegraph Plant. স্থানীয় নাম: গোরাচান, তুরুত চন্দাল, বনচণ্ডাল।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Fabales. পরিবার: Fabaceae. গণ: Desmodium প্রজাতি: Desmodium motorium.

ভূমিকা: বনচণ্ডাল বা তুরুত চন্দাল (বৈজ্ঞানিক নাম: Desmodium motorium) প্রজাতিটির গ্রীষ্মমন্ডলী অঞ্চলে জন্মে। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই জন্মে। এই প্রজাতি ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

বনচণ্ডাল-এর বর্ণনা:

এটি ছোট আকৃতির গুল্ম। উচ্চতায় ৬০ থেকে ১২০ সেমি লম্বা, শাখা প্রায় গোলাকার ও মসৃণ। পত্র ১-৩ ফলক, পত্রক আয়তাকার- বল্লমাকার, ৭-১০ সেমি লম্বা, অর্ধ-চর্মবৎ, স্থূলাগ্র, উপরিভাগ মসৃণ, নিম্নভাগ রেশমি-রোমশ, পত্রবৃন্ত ১-২ মেসি লম্বা। রেসিম অক্ষীয় এবং প্রান্তীয়, শেষেরটি ঘনভাবে প্যানিকেলে সন্নিবেশিত, ১৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা।

পুষ্প বৃহৎ, ডিম্বাকার, পর্ণমোচী মঞ্জুরীপত্র দ্বারা আবৃত, পুষ্পবৃত্তিকা ৩-৭ মিমি লম্বা, মসৃণভাবে পালকাবৃত। বৃতি ৩ মিমি লম্বা, ঘণ্টাকার, দত্তক ব-দ্বীপ সদৃশ, নালিকা থেকে খাটো। দলমণ্ডল ৫-৮ মিমি লম্বা, ফ্যাকাশে লাল। ফল পড জাতীয়, ২.৫-৪.০ × ২- ৪ সেমি, আংশিক কাস্তে আকার, ৬-১০টি সন্ধিযুক্ত, উপরের সন্ধিরেখা বরাবর সোজা, নিচের সন্ধিরেখা বরাবর আংশিক কর্তিত, রোমশ। ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n= 20, 22 (Kumar and Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: গ্রামের ঝোঁপঝাড় এবং বনাঞ্চল। বংশ বিস্তার হয় বীজ থেকে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস।

বিস্তৃতি: ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, ফিলিপাইন এবং মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলাতে ইহা পাওয়া যায়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) তুরুত চন্দাল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে তুরুত চন্দাল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

আরো পড়ুন:  গন্ধবেণা বা গন্ধ তৃণ-এর ছয়টি ভেষজ গুণাগুণ

তথ্যসূত্র ও টীকা:

১. এ টি এম নাদেরুজ্জামান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৭৮-৭৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Ks.mini

Leave a Comment

error: Content is protected !!