চীনা মনোরম চাঁপা দক্ষিণ এশিয়ার ভেষজ গুল্ম

চীনা মনোরম চাঁপা

বৈজ্ঞানিক নাম: Desmos chinensis Lour, Fl. Cochinch. 1: 352 (1790). সমনাম: Unona discolor Vahl (1791). ইংরেজি নাম: Dwarf Ylang-ylang. স্থানীয় নাম: চীনা মনোরম চাঁপা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Magnoliids. বর্গ: Magnoliales. পরিবার: Annonaceae. গণ: Desmos প্রজাতি: Desmos chinensis.

ভূমিকা: চীনা মনোরম চাঁপা (বৈজ্ঞানিক নাম: Desmos chinensis) প্রজাতিটির গ্রীষ্মমন্ডলী অঞ্চলে জন্মে। বাংলাদেশের পাহাড়িঞ্চলে জন্মে। এই প্রজাতি ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

চীনা মনোরম চাঁপা-এর বর্ণনা:

এই প্রজাতিটি আরোহী গুল্ম। এর কাণ্ড দেখতে সরু ও রোমশ। পাতা সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত ৩-৫ মিমি লম্বা, পত্রফলক ৬-১৪ × ৩.০-৬.৫ সেমি, উপবৃত্তাকার, হৃৎপিন্ডাকার বা কর্তিতা, আকস্মিকভাবে দীর্ঘাগ্র, উপরের পৃষ্ঠ মসৃণ, অঙ্কীয় পৃষ্ঠ ফ্যাকাশে ও রোমশ।

পুষ্প ৪.৫-৫.০ সেমি লম্বা, পত্র প্রতিমুখ বা আন্তঃপর্বসন্ধিয়, সবুজাভ-হলুদ, একল, অত্যন্ত সুগন্ধময়। পুষ্পবৃত্তিকা ১-৪ সেমি লম্বা, মধ্যভাগের নিম্নে ক্ষুদ্র রৈখিক মঞ্জুরীপত্রবিশিষ্ট, পুষ্পি অবস্থায় সরু, ফলন্ত অবস্থায় স্থুল। বৃত্যংশ ৮-১২ মিমি লম্বা, ডিম্বাকার- বল্লমাকার, দীর্ঘাগ্র । দলসমূহ ৪-৮ সেমি লম্বা, অপ্রশস্তভাবে বল্লমাকার, চর্মবৎ। ক্ষুদ্র ফলসমূহ ২-৩ সেমি লম্বা, অসংখ্য, ৬-সন্ধিযুক্ত, দীর্ঘ দন্ডবিশিষ্ট, ৩-৫ মিমি দন্ডের উপর অবস্থিত, ২-৫ বীজ বিশিষ্ট। ক্রোমোসোম সংখ্যা : জানা নেই ।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: পার্বত্য বনভূমি অঞ্চল এই চাঁপা দেখা যায়। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল এপ্রিল- ডিসেম্বর মাস। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।

বিস্তৃতি:

ভুটান, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালেশিয়া। ভারত (আসাম) থেকে দক্ষিণ চীন পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও ফিলিপাইনে দেশজ। বাংলাদেশে ইহা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে নথিভূক্ত করা হয়েছে।

ব্যবহার: ফলের ক্বাথ আমাশয় রোগ এবং মাথা ঝিমঝিমানি উপশমে ব্যবহার করা হয় (Sharma et al., 1993)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চীনা মনোরম চাঁপা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে চীনা মনোরম চাঁপা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বর্তমানে সংরক্ষণের প্রযোজন নেই।

আরো পড়ুন:  কাভ্রী গাছের নানাবিধ ভেষজ গুণাগুণ

তথ্যসূত্র ও টীকা:

১. মাহবুবা খানম এবং এম মতিয়ুর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃষ্ঠা ১৪১-১৪২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj

Leave a Comment

error: Content is protected !!