ভূমিকা: পরকাঠ ডুমুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus hederacea) ফিকাস গণের মরাসিয়া পরিবারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি পাহাড়ি জায়গায় অযত্নে জন্মে। এটি অনেক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
পরকাঠ ডুমুর-এর বর্ণনা:
আরোহী গুল্ম, কান্ড এবং শাখা-প্রশাখার পর্বমধ্যে বায়বীয় মূল বিদ্যমান, উপশাখাসমূহ কচি অবস্থায় রোমশ। পাতা দ্বিসারি, অণুপর্ণী, উপপত্র আশুপাতী, ডিম্বাকার, ফলক বৃন্তক, বৃন্ত ১-২ সেমি লম্বা, পত্রফলক উপবৃত্তাকার থেকে ডিম্বাকার-উপবৃত্তাকার, ৬-১১ X ৩-৫ সেমি, পুরু চর্মবৎ, কচি অবস্থায় রোমশ, শীর্ষ স্থূলাগ্র থেকে কখনও গোলাকার, নিম্নপ্রান্ত স্থুল কীলকাকার থেকে স্থুলাগ্র, কিনারা অখন্ড, পার্শ্বশিরা ৩-৫ জোড়া, অক্ষাভিগ পৃষ্ঠে সুস্পষ্ট, অক্ষবিমুখ পৃষ্ঠে চাপা, মূলীয় পার্শ্বশিরা জোড়া ফলকের দৈর্ঘ্যের অর্ধেক পর্যন্ত বিস্তৃত।
ফিগ পত্রবহুল উপশাখায় কাক্ষিক অথবা পত্রশুন্য উপশাখায়, একক অথবা জোড়বদ্ধ, পরিণত অবস্থায় হলুদাভ সবুজ থেকে লাল, কচি অবস্থায় খর্বাকার ও মোটা রোমাবৃত, অভ্যন্তরভাগ কুর্চবিহীন, অগ্রস্থছিদ্র নাভি আকৃতির, কিছুটা উত্তল, বৃন্ত ১.০-১.৩ সেমি লম্বা, মঞ্জরীপত্রাবরণ ৩টি, মূলীয় অর্ধাংশ যমক।
পুং পুষ্প: সংখ্যায় কয়েকটি, বিক্ষিপ্ত, অবৃন্তক, বৃতির খন্ডক ৩টি বা ৪টি, পুংকেশর ২টি, পুংদন্ডগুলো মুক্ত, পরাগধানী সুম্মখর্বাগ্র বিশিষ্ট নয়। গল পুষ্প বৃন্তক, বৃতির খন্ডক ৪টি, ভল্লাকার, গর্ভাশয় বিডিম্বাকার, কালো, গর্ভদন্ড উপশীর্ষক, খর্বাকার, খর্বাকার, গর্ভমুণ্ড বক্র। স্ত্রী পুষ্প: খর্বাকার বৃন্ত বিশিষ্ট অথবা অবৃন্তক, বৃতির খন্ডক ৪টি, রৈখিক। ফল অ্যাকিন, উপবৃত্তাকার, পৃষ্ঠীয় কীলবিশিষ্ট। ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Kundu and Sharma, 1976).
আবাসস্থল ও চাষাবাদ:
এই প্রজাতিটি অরণ্য এবং গ্রামের ঝোপ-ঝাড় জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময় মে ও সেপ্টেম্বর মাস। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।
বিস্তৃতি:
ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মায়ানমার, নেপাল এবং থাইল্যান্ড। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম জেলা থেকে নথিভূক্ত করা হয়েছে (Hooker, 1888; Prain, 1903)। ইহার কাঠ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পরকাঠ ডুমুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এই প্রজাতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পরকাঠ ডুমুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বিস্তৃতি জানার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান চালাতে হবে।
তথ্যসূত্র ও টীকা:
১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৯ম, পৃষ্ঠা ২১৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Thingnam Girija
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।
সুন্দর এই লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।