বন শুলফা উপকারী গুল্ম

পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারত, বাংলাদেশের নানা স্থানে আগাছা হিসেবে সাধারণতঃ চাষের জমিতে জন্মে। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত স্থান সমুহের রাস্তার ধারেও এটিকে হতে দেখা যায়। বর্ষজীবী গুল্ম। লম্বায় ১ ফুটের মতো। পাতা ঝিরঝিরে সরু, পুষ্পদণ্ডে একসঙ্গে ১৫–২৫টি ফুল থাকে এবং পর পর ফোটে, দেখতে গোলাপী আভাযুক্ত সাদা, ফুলের অগ্রভাগ হালকা বেগুনে। সাধারণতঃ শীতকালে ফুল ও ফল হয়। ফল অনেকটা গোলাকার, তার মধ্যে একটি বীজ থাকে। দেখতে অনেকটা গাজরের কিংবা শুলফার পাতার মতো। বাংলায় এটি বন শুলফা নামে পরিচিত। বোটানিক্যাল নাম Fumaria indica Pugsley, ফ্যামিলী Fumariaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ— সমগ্র গাছ।

বন শুলফা-এর গুণপনা

উদ্ভিদটি অত্যন্ত তিক্ত স্বাদের ও সঙ্কোচক গুণধর্মী। এটি বিরেচক, মূত্রকারক, ক্রিমিনাশক, ঘর্মকারক, পুষ্টিকর, বলকারক, রক্তপরিষ্কারক এবং রসায়ন গুণসম্পন্ন এবং জ্বর, যকৃৎপীড়া, রক্তবিকার, প্রতিশ্যায়, অজীর্ণ, প্লীহারোগ প্রভৃতিতে ব্যবহার্য।

বাজারে শুকনো পীতপাপড়া বা শাহতরা নামে যে দ্রব্যটি পাওয়া যায়, তা F parvifloraF. officinalis  প্রজাতির পাতা-ফুল-ডাঁটা প্রভৃতি। এগুলি আফ্রিকা, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহে জন্মে এবং এদেশে আসে। এ দ্রব্যটিও বন শুলফার পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন, কারণ একই গণভুক্ত গাছই কেবল নয়, বহিরাগত দ্রব্যটি অধিক গুণসম্পন্ন। ঔষধার্থে ব্যবহারের জন্য শুকনো বন শুলফার গাছের কথাই বলা হবে, তবে না পাওয়া গেলে বাজারে প্রাপ্ত শাহতরা ব্যবহার করলে কোন ক্ষতি নেই।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ২১৭-২১৯।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Thingnam Girija

Leave a Comment

error: Content is protected !!