কুকুরবিছা বাংলাদেশের উপকারী গুল্ম

কুকুরবিছা

বৈজ্ঞানিক নাম: Grewia hirsuta Vahl, Symb. 1: 32 (1790). সমনাম: Grewia tomentosa auct. non Juss. (1804), Grewia roxburghii G. Don (1831). ইংরেজি নাম: Nagbala Crossberry। স্থানীয় নাম: কুকুরবিছা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Malvales. পরিবার: Malvaceae. গণ: Grewia প্রজাতির নাম: Grewia hirsuta

ভূমিকা: কুকুরবিছা (বৈজ্ঞানিক নাম: Grewia hirsuta) হচ্ছে মাভেসিয়া পরিবারের গ্রেউয়া গণের এক প্রকারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মায়।

কুকুরবিছা-এর বর্ণনা :

কুকুরবিছা গুল্ম প্রকৃতির। এটি ৩-৬ মিটার উঁচু। এদের পাতা ১-১২ × ০.৭-৪.৫ সেমি, ডিম্বাকার, বল্লমাকার, ডিম্বাকার-বল্লমাকার বা ডিম্বাকার-উপবৃত্তাকার, গোড়া অর্ধহৃৎপিন্ডাকার বা অর্ধস্থলাগ্র, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা দীর্ঘাগ্র বা কখনো অর্ধস্থূলাগ্র বা গোলাকার, করাত দপ্তর, উপরিতল রোমশ, নিম্নতল ঘন দৃঢ় রোমশ, পত্রবৃন্ত ৭ মিমি পর্যন্ত লম্বা।

পুষ্প উভলিঙ্গ, কাক্ষিক, আম্বেলসদৃশ সাইম, মঞ্জরীদন্ড ১-৩টি একত্রে, ১ সেমি পর্যন্ত লম্বা, কুঁড়ি গোলাকার, পুষ্পবৃন্ত ২-৫ মিমি লম্বা, পুষ্পাধার খাটো, অর্ধবেলনাকার, শীর্ষ চ্যাপ্টা, রোমহীন। পুংকেশর ৪০ এর অধিক। গর্ভাশয় ২ মিমি চওড়া, রোমহীন, ঘন লোমশ, গর্ভমুন্ড ৩-খন্ডিত, খন্ডক কুঞ্চিত। ফল ড্রপ, ১.২ মিমি চওড়া, অর্ধগোলাকার, অস্পষ্টভাবে ৪- খন্ডিত, ঘন দৃঢ় রোমশ বা রোমাবৃত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n = ১৮ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

ঘন বন এবং তৃণভূমি। এ প্রজাতিটির ফুল ও ফল ধারণ করে প্রায় সারা বর্ষব্যাপী। বীজ থেকে চারা জন্মে।

বিস্তৃতি:

ভারত, শ্রীলংকা এবং মায়ানমার। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, যশোর এবং সিলেট জেলায় পাওয়া যায়।

কুকুরবিছা-এর ভেষজ গুণ:

ফল খাওয়া যায়। মূল এবং ফলের ভেষজ গুণ রয়েছে। মূল থেকে তৈরি পাউডার পানির সাথে মিশ্রিত করে ক্ষতের কারণে যে পুঁজ হয়, তা বের করতে বাহিরে প্রয়োগ করা হয়।

জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার:

সাঁওতাল উপজাতীয়রা ডায়রিয়া এবং আমাশয়ে ফল ঔষধরূপে ব্যবহার করে। মূল চূর্ণ একই রোগে ব্যবহার করে (Caius, 1998) ।

আরো পড়ুন:  তেঁতুলে কড়ই বাংলাদেশের বনাঞ্চলে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কুকুরবিছা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত। বাংলাদেশে কুকুরবিছা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. — (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১০ম, পৃষ্ঠা ৩৯৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: J. M. Garg

Leave a Comment

error: Content is protected !!