পাতি বনচালতা বাংলাদেশের পুর্বাঞ্চলে জন্মে

পাতি বনচালতা

বৈজ্ঞানিক নাম: Leea crispa L., Mant. 1: 124 (1767). সমনাম: Leea asiatica, Phytolacca asiatica, Leea aspera। ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: পাতি বনচালিতা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Passifloraceae. গণ: Leea , প্রজাতি: Leea crispa.

ভূমিকা: পাতি বনচালতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Leea crispa) হচ্ছে বাংলাদেশের ভেষজ গুল্ম। এটি সমতলে জন্মায়। তবে বনাঞ্চলের পরিবেশ এদের জন্য উপযুক্ত।

পাতি বনচালতা-এর বর্ণনা:

গুচ্ছ আকৃতির ছোট গুল্ম, ১-২ মিটার উঁচু, বহুবর্ষজীবী মূলাকার কাণ্ড থেকে প্রতি বছরে জন্মায়। কাণ্ড কিছুটা কাষ্ঠল, সন্ধিযুক্ত, সন্ধির উপরে স্ফীত এবং শাখার সাথে একত্রিত, মঞ্জরীদণ্ড ও পত্রবৃন্ত ৬-৮টি, খাটো ঘনকুঞ্চিত পক্ষযুক্ত। পত্র সাধারণত এক পক্ষল, ৩ থেকে ৫-ফলক, সাধারণ পত্রবৃন্ত খাটো, শক্ত, পত্রক আয়তাকার, অত্যন্ত সমান্তরাল-পার্শ্বযুক্ত, ১০-১৮ × ৩.৮-৭.৫ সেমি, সূক্ষ্মাগ্র বা খাটো দীর্ঘাগ্র, মোটাভাবে করাত দম্ভরযুক্ত, উপরের পৃষ্ঠ মসৃণ। নিম্নপৃষ্ঠের শিরার উপর রোমশ, গোড়ায় সাধারণত গোলাকার, চর্মবৎ, প্রধান শিরা ১২-২০ জোড়া, সুস্পষ্ট, সমান্তরাল, প্রায় সোজা, প্রতিটি করাত দন্তক পর্যন্ত বিস্তৃত, প্রগৌণ শিরা অতি সূক্ষ্ম, অণুপ্রস্থ, প্রায় সমান্তরাল, সন্নিকটস্থ, নিচে সুস্পষ্ট, পার্শ্বীয় পত্রকের অণুবৃন্ত ০.৩-১.২ মিমি লম্বা, প্রান্তীয় পত্রকের গুলো অধিক দীর্ঘতর।

পুষ্প সবুজাভ-সাদা বা হালকা হলুদ, ক্ষুদ্র শীর্ষীয় সামান্য রোমশ সাইমে সজ্জিত, আড়াআড়িভাবে ২.৫-৫.০ সেমি, পুষ্পবৃত্তিকা খাটো, মঞ্জরীদণ্ড প্রায় স্থায়ী, রেখাকার, তুরপুন আকার, ৬-৮ মিমি লম্বা, উপমঞ্জরীপত্র ৩ মিমি লম্বা, বল্লমাকার। বৃতি সামান্য বিভক্ত, খণ্ড ত্রিকোণাকার, শীর্ষে গ্রন্থিযুক্ত। পাপড়ি আয়তাকার, পুংকেশরীয় নলের খণ্ড রেখাকার-আয়তাকার, দ্বিখণ্ডিত, পরাগধানী মুকুলে যুক্ত নয়। গর্ভদণ্ড খাঁজযুক্ত। বেরী ৮ মিমি চওড়া, চাপা- বর্তুলাকার, সাধারণত ২-৬ (অথবা অধিক) খণ্ডিত, পরিপক্ক অবস্থায় কালো।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২০ = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

অরণ্যের নিকটে চারণভূমি। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা। ফুল ও ফল ধারণ সমকাল জুলাই থেকে ডিসেম্বর।

আরো পড়ুন:  তামাক-এর বহুবিধ ভেষজ গুণাগুণ ও প্রয়োগ

বিস্তৃতি: ভারত জন্মে। বাংলাদেশে এই উদ্ভিদটি চট্টগ্রাম এবং দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে পাওয়া যায়।

ব্যবহার:

কন্দ গুইনিয়া কৃমির প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাতার গুঁড়া ক্ষতস্থানে প্রয়োগ করা হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাতি বনচালতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পাতি বনচালতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। 

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৭৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!