ভূমিকা: তিসি (বৈজ্ঞানিক নাম: Linum usitatissimum ইংরেজি নাম: common flax, linseed) হচ্ছে লিনাসি পরিবারের লিনুম গণের সপুষ্পক গুল্ম উদ্ভিদ। তিসির চাষ করা হয় তেল ও সুতা তৈরির জন্য।
বিবরণ: তিসি গাছ ৩০ থেকে ৮০ সেঃ মিঃ পর্যন্ত উঁচু হয়। এই প্রজাতির ফুল নীল, সাদা বা হালকা গোলাপী বর্ণের হয়। এটি অতি প্রাচীনকাল হতে ভারতবর্ষে ব্যবহৃত ও চাষ হয়ে আসছে। মনুসংহিতা আইন আকবরী প্রভৃতি গ্রন্থেও তিসির বর্ণনা দেখতে পাওয়া যায়। প্রাচীন কালে থেকে এটার চাহিদা আছে। বর্তমানে তিসি হতে তেল প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিসির গাছ সংগ্রহের পরে গাছগুলো থেকে সুতা তৈরি করা হয়।
শ্বেত ও ধূসর বর্ণের তিসি দেখতে পাওয়া যায়। শ্বেত তিসি হতে তৈল বেশী পরিমাণ হয়। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের জমিতে তিসির চাষ হয়। এরমধ্যে বাংলায়, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, নোয়াখালী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ জেলায় তিসির চাষ হয়ে থাকে। দোয়াশ মাটিতে তিসি ভাল হয়। শুধু বেলে মাটিতে এর চাষ ভাল হয় না। চুনের ভাগ বেশী থাকলে ছোলা ও মসিনা একসঙ্গে বোনা ভালো।
চাষাবাদ: বর্ষা কমে গেলে ভাদ্রের শেষে আশ্বিনের প্রথমে ঘন ঘন চাষ দিয়ে বীজ বপন করতে হবে। জমি আর্দ্র থাকতে থাতে বীজ বপন করা উচিত। নীচু আমনের জমিতে ধান কেটে কাদার ভিতর ছিটিয়ে বুনলেও তিসি জন্মাবে। তিসির ফুলে বৃষ্টির পানি লাগলে বড় ক্ষতি হয়।
ফাল্গুন ও চৈত্রে এটি পাকে। যখন গাছের নীচের পাতা ঝরে যায় এবং গাছে ফুল থাকে না তখনই তিসি পেকেছে বুঝতে পারা যাবে। এক বিঘায় তিন চারি মণ পর্যন্ত তিসির ফলন পাওয়া যায়। গাছগুলি হতে সূতা হয়।
ব্যবহার: তিসির তেল ছাপার কালী, বার্ণিশ, নরম সাবান ইত্যাদি শিল্পে লাগে। চেয়ার, টেবেল, জানালা, দরজা ইত্যাদি রং করিয়ে এই তৈল ব্যবহার হয়। তিসির গাছ আশ সংগ্রহের করার জন্য উদ্ভিদের কান্ড পানির নিচে প্রায় ৭-২১ দিন রাখতে হয়। এরপরে আঁশ সংগ্রহ করা হয়। জাগ দেওয়া ও আঁশ সংগ্রহ করার নিয়ম ঠিক পাট হতে আঁশ সংগ্রহের মতো।
তথ্যসূত্রঃ
১. ডা: শ্রীযামিণী রঞ্জন মজুমদার: খাদ্যশস্য, মি: বি ছত্তার, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৫১, পৃষ্ঠা, ৮৭-৮৯।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।