বৈজ্ঞানিক নাম: Ochna squarrosa
বাংলা নাম: কনকচাঁপা, রামধন চাঁপা
ইংরেজি নাম: Golden Champak
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants
অবিন্যসিত: Angiosperms
অবিন্যসিত: Eudicots
অবিন্যসিত: Rosids
বর্গ: Malpighiales
পরিবার: Ochnaceae
গণ: Ochna
প্রজাতি: Ochna squarrosa
পরিচিতি: কনকচাঁপা বা রামধন চাঁপা ছোট গুল্ম জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ। এরা ৪ থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। তবে এক মিটার উঁচু কনকচাঁপা গাছেও ফুল ধরে। কনকচাঁপা পত্রমোচী বৃক্ষ, শীতের সময় গাছের সব পাতা গাছ তলায় ঝরে পড়ে। কনকচাঁপা গাছের পাতা ডিম্বাকার, অখণ্ড, বোঁটা খাটো এবং আগা চোখা। বসন্তের মাঝামাঝি সময়ে তামাটে রঙের নতুন সবুজ কচি পাতার সঙ্গে উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের ফুল আসে। এদের ফুল সুগন্ধি। ফুল ফোটা শুরু হলে ধীরে ধীরে ছোট ছোট থোকায় পুরো গাছ ভরে যায়। ফুল তিন-চার সেন্টিমিটার চওড়া, পাপড়ি ১২টি, মুক্ত, বৃত্তাংশের সমান লম্বা। পাপড়ি হলুদ, পুংকেশর সোনালী রঙের এবং সংখ্যায় অনেক, পরাগধানীর চেয়ে পরাগদণ্ড খাটো। ফল ০.৫ সেমি চওড়া ও গোলাকার, কালো ও রসাল। বীজ থেকে চারা গজায়।
কনকচাঁপার আরেক নাম হচ্ছে রামধন চাঁপা। এটি আমাদের দেশীয় ফুল। বাংলাদেশে বসন্তে ফোটা বিভিন্ন রঙের ফুলের মধ্যে কনকচাঁপা প্রধান। বসন্তে ফোটার পরে গ্রীষ্মের শেষাবধি গাছে ফুল থাকে। আমাদের জানামতে ঢাকায় কেবল দুটা মাত্র কনকচাঁপা গাছ আছে। একটি রমনা পার্কে, অপরটি বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর বাগানে। রমনার উত্তরায়ণ গেট থেকে ঢুকে দক্ষিণ দিকে আসতে রমনার সবচেয়ে বড় পলাশগাছটির পূর্ব দিকে আছে গাছটি।
বিস্তৃতি: সাধারণত ঘন গুল্মের জঙ্গল ও পত্রঝরা বনে দেখা যায়। সিলেট ও চট্টগ্রামের বনে একসময় যথেষ্ট দেখা যেত। এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। বাংলাদেশ বাদে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ ভারতের প্রাকৃতিক বনে জন্মে।
ব্যবহার: কনকচাঁপা আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গাছের ত্বক বা বাকল হজমকারী টনিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এদের কাঠ দিয়ে হাঁটার লাঠি তৈরি করা হয়। সাঁওতাল জনগণ কনকচাঁপার শিকড় সাপের কামড়ের চিকিৎসায় ব্যবহার করে থাকে। ভারতীয় আদিবাসীরা নানান ধরনের মেয়েলি চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে থাকেন।
দেখতে সুন্দর কনকচাঁপা ফুলের গাছটি আকারে ছোট হওয়ায় কাঠুরিয়া কিংবা সাধারণ মানুষ সহজেই কেটে ফেলতে পারে। এই কারণে গাছটি প্রাকৃতিক পরিবেশে দুর্লভ হয়ে গেছে। গাছটি সংরক্ষণে বন বিভাগ ও মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্যসূত্র:
১. সৌরভ মাহমুদ, “কনকচাঁপা”, দৈনিক প্রথম আলো, সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, ২৪ এপ্রিল ২০১৫, http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/511348/.
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।