ভূমিকা: গোটা বেগুন বা গুচ্ছ বেগুন হচ্ছে সোলানাসি পরিবারের সোলানাম গণের স্বল্প কাঁটাযুক্ত একটি বর্ষজীবী বেগুন জাতীয় গুল্ম। গ্রাফট বা কলম করা চারাসমূহ শক্তিশালী হয় বিধায় সেগুলো দ্বিতীয় বছরের জন্যও ফলন দেয়।
গোট বেগুন-এর বর্ণনা:
গুচ্ছ বেগুন সাধারণত ২ বা ৩ মিটার উচ্চতার এবং ২ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের হতে পারে, তবে এরা ৫ মিটার উচ্চতা এবং 8 সেমি ব্যাসার্ধে পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এই গুল্মটি সাধারণত মাটির কাছ থেকেই একটি মাত্র কান্ড নিয়ে বাড়তে থাকে, তবে এটির নীচের ডালের উপরে অনেক শাখা হতে পারে। কাণ্ডের ছাল ধূসর। এদের শিকড় সাদা হয়।
শাখাগুলি ধূসর-সবুজ এবং তারকা-আকৃতির চুল দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। কাঁটাগুলি ছোট এবং সামান্য বাঁকানো এবং পুরো গাছে বিভিন্ন রকমের, পাতার মাঝখানের উল্টাদিকে থাকে কিন্তু সামনের দিকে একেবারেই থাকে না। পাতাগুলো পরস্পর বিপরীতধর্মী অথবা প্রতি পর্বে একটি করে গজায়। ফুলগুলো সাদা, ৫টা ভাগে বিভক্ত।
ফলগুলি ক্ষুদ্র সবুজ গোলাকার এবং গুচ্ছে জন্মায়, দেখতে মটরের দানার মতো। সম্পূর্ণরূপে পাকলে ফল হলুদ হয়ে ওঠে। ফলগুলো পাতলা-শাঁসযুক্ত, এবং ফলে অনেক সমান, বৃত্তাকার, বাদামী বীজ থাকে।
গুচ্ছ বেগুন প্রতি বছরে ০.৭৫ থেকে ১.৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বাড়তে পারে। প্রজাতিটি দীর্ঘকাল বাঁচতে পারে না; অধিকাংশ গাছপালা প্রায় ২ বছর বাঁচে।
ব্যবহার:
সবুজ ফলগুলো ভোজ্য এবং থাই খাদ্যতালিকায় ব্যবহৃত হয়। নির্দিষ্ট থাই ঝোল রান্নায় এটি একটি উপাদান হিসাবে ব্যবহার হয় এবং মরিচের তৈরি চাটনিতে এটি যুক্ত করা হয়। থাইদের মতো লাওসের লোকজনও এটি খেয়ে থাকে এবং জ্যামাইকাতে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার আছে। ভারতের তামিলনাড়ুতে ফলগুলোকে সরাসরি খাওয়ার রেওয়াজ আছে, আবার রান্না করেও খাওয়া হয়।
ঔষধি গুণ: গুচ্ছ বেগুনের বীজ থেকে মিথাইল ক্যাফেটের নির্যাস তৈরি করা যায়, যার ডায়াবেটিস প্রতিরোধী কার্যক্ষমতা আছে।
গোট বেগুন-এর বিস্তৃতি:
এটি উত্তর মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় দেখা যায়। দ্রুত বিস্তৃতির কারণে এটি জমিতে আগাছা হিসাবে গণ্য। এটি বলা খুব কঠিন যে কোনটি স্থানীয় আর কোনটি একটি এলাকায় পরবর্তীতে ছড়ানো। গুচ্ছ বেগুন ক্রান্তীয় আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের হাওয়াই, গুয়াম এবং আমেরিকার সামোয়ায় পরবর্তীতে ছড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতেও এটি যথেষ্ট দেখা যায়।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।