ভুঁই আমলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Phyllanthus niruri) বর্ষজীবী এবং গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। ভুঁই আমলার আট ধরনের রোগ সারাবার ভেষজ উপকারিতা বা গুণাগুণ দেখা যায়। এরা খুব ছোট, লম্বায় আট ইঞ্চির মতো লম্বা হয়ে থাকে বা বাড়ে। গাছের ডাল খাড়াভাবে বের হয়। ওপরের শাখা শিরাযুক্ত ও নরম লোম থাকে। ফুলের আকার ছোট এবং গোলাকার। এই গাছের পাতা, মূল ভেষজ ঔষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। জ্বর, ঘা, ক্ষত, পেট ইত্যাদির অসুখে বেশ কার্যকরি ঔষুধ।
আরো পড়ুন: ভুঁই আমলা গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বর্ষজীবী গুল্ম
বিভিন্ন রোগে ব্যবহার:
১. হিক্কা শ্বাসে: ভূঁই আমলা গাছের মূল থেঁতলিয়ে রস করে চার চামচ এবং চিনি এক চামচ মিশিয়ে খেলে উপশম হয়।
২. অবিরাম জ্বর ও লিভার বৃদ্ধিতে: ভুঁই আমলা গাছের পাতা এবং বীজ বেঁটে এক গ্রাম পরিমাণ খাওয়ালে রোগী সাতদিনে আরোগ্য লাভ করবে।
৩. শরীরের বল বাড়াতে: ভুঁই আমলা গাছের পাতা ও শিকড়ের রস একটি উৎকৃষ্ট বলকারক ওষুধ। তবে নিয়মিত খাওয়া দরকার। রোজ দুপুরে ভাত খাবার পর ২ থেকে ৩ চামচ পরিমাণ খেতে হবে। হাড় ভাঙ্গার যন্ত্রণা ও শরীরের যে কোনো অঙ্গের হাড় ভেঙ্গে গেলে ভুই-আমলা গাছের পাতার রসে লবণ মিশিয়ে ভাঙ্গা জায়গায় প্রলেপ দিলে যন্ত্রণার উপশম হয়।
৪. দুর্গন্ধযুক্ত ঘা: ভূঁই আমলা গাছের সাদা আঠা শরীরের উপরের ত্বকের ক্ষতে দিলে অবশ্যই ঘা সারবে। এটি ক্ষতের জন্য বিখ্যাত একটি ওষুধ।
৫. চোখের রোগে: চোখ ওঠা, চোখ ফোলা এবং চোখে পিচুটি জমা ইত্যাদি রোগে ভুঁই আমলা গাছের মূল, কাজি ও সৈন্ধব লবনসহ তামার পাত্রে ঘষে ঘন হলে চোখের পাতায় দু’দিন প্রলেপ দিতে হবে।
৬. আমাশয় ও উদরাময়ের রোগে: ভুই আমলা গাছের কচি পাতার রস দশ চামচ পরিমাণে রোজ দু’বার অর্থাৎ সকাল এবং সন্ধ্যায় খেলে উভয় রোগ দূর হয়।
৭. ক্ষত, ঘা এবং নখকুনি হলে: ভুই আমলা গাছের পাতা ও শিকড় চাল ধোয়া পানির সাথে বেটে প্রলেপ দিলে এ তিনটি রোগের উপশম হয়।
৮. কামলা বা জণ্ডিস রোগে: ভুই আমলার টাটকা শিকড়ের রস ১০ মি.লি. এক কাপ গরুর দুধের সাথে মিশিয়ে কয়েকদিন সকাল ও সন্ধ্যায় খেলে কামলা রোগের উপশম হয়।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র:
১. আঃ খালেক মোল্লা সম্পাদিত;লোকমান হেকিমের কবিরাজী চিকিৎসা; মণিহার বুক ডিপো, ঢাকা, অক্টোবর ২০০৯; পৃষ্ঠা ৩৭
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে”, “ফুলকির জন্য অপেক্ষা”। যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ” এবং যুগ্মভাবে রচিত বই “নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।
This writing is very beneficial.