ভেন্না বা রেড়ি গাছ, বীজ, মূল ও তেলের ৩২টি ঘরোয়া ঔষধি চিকিৎসা

পরিচিতি

ভেন্না বা রেড়ি ছোট গুল্মজাতীয় গাছ, সাধারণতঃ ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত উচু হয়, শাখাপ্রশাখা খুবই অল্প; কাণ্ড ও পত্রদণ্ড নরম ও ফাঁপা, পাতাগুলি আকারে প্রায় গোল হলেও আঙ্গুল সমেত হাতের তালুর মতো; ব্যাস প্রায় এক ফুট, পাতার কর্তিত অংশগুলির অগ্রভাগ ক্রমশ সরু। এই কর্তিত অংশটি প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা। আবর্জনাপূর্ণ জায়গায় এর বাড়-বৃদ্ধি বেশী হয়। এক বৎসরেই গাছে ফুল ও ফল হয়; সাধারণতঃ কাণ্ডের অগ্রভাগে পুষ্পদণ্ডের চারিদিকে গোল হয়ে ছোট ছোট হলদে ফুল হয়, পরে ত্রিকোষযুক্ত এবং আকারে দেশী কুলের মতো ফল হলেও গায়ে কাঁকরোলের (Momardica cochinchinensis) মতো নরম কাঁটা থাকে। এই ফল পাকার পর ফেটে বীজ পড়ে যায়, বীজের খোলায় (শক্ত বহিরাবরণে) থাকে সাদা সাদা ডোরা দাগ।  

চরক সুশ্রুতের পরবর্তীকালের বনৌষধির গ্রন্থে আর একপ্রকার ভেন্না উল্লেখ দেখা যায়, তার কাণ্ড ও পাতার ডাটাগুলি একটু বেগুনে রংয়ের; একে বলা হয় রক্ত এরণ্ড, দুটি গাছের আকৃতিতে কোনো পার্থক্য নেই, তবে বৈদ্যকগ্রন্থের মতে শরীরের দোষ নিরসনের জন্য রক্ত এরণ্ড অপেক্ষা শ্বেত এরণ্ড বৃক্ষের উপযোগিতার কথাই উল্লেখিত হয়েছে। পাশ্চাত্য ভেষজ বিজ্ঞানীদের মতে এই রক্ত এরণ্ড পৃথক কোনো প্রজাতি (Species) নয়; এই গাছটির বোটানিক্যাল নাম Ricinus communis Linn. ফ্যামিলি Euphorbiaceae.

আরো পড়ুন: ভেন্না বা ভেরেন্ডা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ভেষজ উদ্ভিদ

রোগ প্রতিকার পাতার ব্যবহার:

১. চোখ ওঠায়: পাতার রস একটু গরম করে, ছেকে নিয়ে ঐ রস চোখে এক একবার ফোটা দিতে হয়।

২. ঠুনকোয়: যতদূর সম্ভব স্তনের দুধ গেলে ফেলে (অবশ্য সম্ভব হলে) এর পাতা আগুনে একটু  সে’কে নরম করে ঐ পাতা চাপা দিয়ে বেধে রাখলে ফোলা ও ব্যথা দুইই কমে যাবে। আর ৭ থেকে ৮ গ্রাম পাতা এক পোয়া আন্দাজ জলে সিদ্ধ করে তিন ছটাক থাকতে নামিয়ে, ছেকে ঐ জলটা খেতে হবে।

৩. স্তনে দুধের স্বল্পতায়: মায়ের পুষ্টির যে অভাব তা নয় অথচ বুকের দুধ কম, সেক্ষেত্রে কচি পাতা আন্দাজ ৫ গ্রাম, দুধে আধ পোয়া আর জল আধ সের একসঙ্গে সিদ্ধ করে, এক পোয়া থাকতে নামিয়ে, ছে’কে সেই দুধ খেলে স্তন্য বৃদ্ধি হবে। এমন কি একটি করে রেড়ির পাতা গরুকে খাওয়ালে গরুও দুধ বাড়ে। গরুর পালানে বাঁধলেও দুধ বাড়ে।

৪. অম্লশূর: ভেন্না বা রেড়ি গাছ কচিপাতা ৪ থেকে ৫ গ্রাম সিদ্ধ করে ছে’কে সেই জল খেলে ব্যথা কমে যায়।

৫. মাথা ভার ও যন্ত্রণায়:  ৫ থেকে ৬ গ্রাম কচিপাতা সিদ্ধ জল ছেকে খেলে ওটা কমে যায়।

৬. রাতকানায়: সন্ধ্যার পর চোখে দেখতে পান না, সেক্ষেত্রে ১০।১২ গ্রাম পাতা ঘিয়ে ভেজে মধ্যাহ্নে আহারের সময় শাক ভাজার সময় কয়েকদিন খেতে হয়।

৭. জ্বরের দাহে: গায়ের জ্বালা কিছুতেই কমছে না, সেক্ষেত্রে এর পাতা ধুয়ে, মুছে তার ওপর শুইয়ে দিতে হয়। এর দ্বারা গায়ের জ্বালা কিছু উপশম হবে।

৮. কানের ব্যথা: উর্ধ্বজত্রুগত দোষে কানে যন্ত্রণা, সাধারণতঃ রাত্রের দিকে বেশী হয় অথচ পুজও পড়ে না; সেক্ষেত্রে এরণ্ড পাতা ও এক টুকরো আদা থেতো করে সরষের তেলে ভেজে, ছেকে নিয়ে ঐ তেল কানে ফোঁটা দিতে হয়, এর দ্বারা ঐ যন্ত্রণার উপশম হবে।

আরো পড়ুন:  ক্ষুদি ওকড়া গুল্ম গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে জন্মে

৯. স্বল্প রজে: রজরক্ত স্রাব ভালো না হওয়ায় তলপেটে যন্ত্রণা, এক্ষেত্রে রেড়ির পাতা অল্প গরম করে তলপেটে (নাভির নিচে) বসিয়ে রাখতে হয়; পাতা শুকিয়ে গেলে ফেলে দিতে হয়। এইভাবে আরও দুই/একদিন পাতা বসাতে হয়। এর দ্বারা ঐ অসুবিধেটা চলে যাবে। যাঁদের শ্বেতপ্রদর তাঁদেরও এটাতে কিছু সুবিধে হবে।

মূলের ছালের ব্যবহার:

১০. প্রবাহিকায় বা আমাশায়:  পেটে গুঠলে মল আছে, বেরুচ্ছে না, কিন্তু মাঝে মাঝে আম ও রক্ত দুইই পড়ছে, তার সঙ্গে মলদ্বারে শুলুলি ব্যথা, এ ক্ষেত্রে কাঁচা এরণ্ড মূল ২৫ গ্রাম আন্দাজ, দুধ আধ পোয়া, জল আধ সের একসঙ্গে সিদ্ধ করে আধ পোয়া থাকতে নামিয়ে ছেকে সেই দুধটা খেলে ঐ অসুবিধেটা চলে যাবে। এ ব্যবস্থাটা চরক সম্প্রদায়ের।

১১. প্রশ্রাবের স্বল্পতায়: কাঁচা মূল ১৫ থেকে ২০ গ্রাম মাত্রায় ৩ কাপ জলে সিদ্ধ করে, এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছেকে সকালে অথবা বিকালে একবার খেলে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, এবং বারে বারে যেতে হয় না।

১২. উদরে মদে: নাদাপেটা ভুড়ি, যত বাড়-বৃদ্ধি যেন ওখানেই, এ ক্ষেত্রে কচি এরণ্ড মূলের রস ৩/৪ চামচ এক পাস ঠাণ্ডা জলে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হয়, এটা কিছুদিন খেলে মেদটা কমে যাবে। তবে আরও উপকার পাওয়া যায় যদি ওর সঙ্গে ১ চামচ মধু (খাঁটি) মিশিয়ে খাওয়া যায়।

১৩. রসগতবাত: এই রোগটিকেই আয়ুর্বেদে আমবাত বলা হয়েছে। এর লক্ষণ ফোলা আর সঙ্গে যন্ত্রণা; এ ক্ষেত্রে এর মূলের পাচনে উপশম হয়, তবে মুলের কাঠ শক্ত হয়ে গেলে মূলের ছাল অন্ততঃ ১০ থেকে ১২ গ্রাম নিতে হয়।

১৪. নিউরালজিয়া (Neuralgia): অনেক বৃদ্ধ বৈদ্য এটাকে নাড়ীশূল বলে থাকেন। এ ক্ষেত্রে এর মূলের ক্বাথ কিছুদিন ধরে খাওয়ালে ভাল কাজ হয়।

১৫. খোস চুলকানি: মূলের ছাল বাটায় হলুদের গুড়ো মিশিয়ে গায়ে মাখতে বা লাগাতে হয়। এর দ্বারা ওটার উপশম হবে।

বীজের ব্যবহার

১৬. সায়েটিকায় বা গৃধ্রসী বাতে ও কটি শুনে: কোমর থেকে আরম্ভ করে পায়ের শিরা বেয়ে যে যন্ত্রণা নামে, মনে হয় যেন কাঁটা বিধছে, সেক্ষেত্রে ৬। ৭টি বীজের শাঁস বেটে দুধের সঙ্গে পায়েস করে খেতে হয়। কয়েকদিন ব্যবহারে কিছুটা উপশম হবে।

১৭. কোষ্ঠবদ্ধতায়: নানান কারণে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ধাত, মল গুঁঠলে হয়ে ২ থেকে ১ দিন অন্তর হয়, তারা নিত্য আহার্য ব্যঞ্জনের সহিত ৪ থেকে ৫টি এরণ্ড বীজের শাঁস বেটে ঐ ব্যঞ্জন রান্নার সময় ওটা দিয়ে নিত্য ব্যবহার করবেন, তবে কিছুদিন ধরে এটা করতে হয়। এ সম্বন্ধে আর একটা কথা জানিয়ে রাখি- উড়িষ্যার গ্রামাঞ্চলে বহু গরীব গৃহস্থবাড়ীতে গাছ করা আছে; তাঁরা প্রায় নিত্যই ডাঁসা ফলের বীজের শাঁস মশলার সঙ্গে বেটে দিয়ে থাকেন তরকারিতে। এটার উদ্দেশ্য রান্নার তেলের সাশ্রয় হয়, অধিকন্তু দ্রব্যগুণও তো আছেই। আর এই বীজ বাটা ব্যঞ্জন খেতেও নাকি খারাপ হয় না, কারণ তখন রেড়ির তেলের যে একটা গন্ধ আছে, সেটাও হয় না।

আরো পড়ুন:  গিরিশোভন শাক এশিয়ার বর্ষজীবী ভেষজ গুল্ম

১৮. ফোড়া পাকাতে: রেড়ির বীজের শাঁস বেটে অল্প গরম করে ফোড়ার ওপর বসিয়ে দিলে ওটা পেকে ফেটে যায়।

রেড়ি বা ক্যাস্টর তেল প্রস্তুতের প্রাচীন পদ্ধতি:

রেড়ির বীজ মাটিতে ২ দিন রেখে (খড় চাপা দিয়ে, গোবর জল ছিটিয়ে) সেইগুলিকে রৌদ্রে সামান্য শুকিয়ে নিলেই অল্প আঘাতে খোসা ছাড়ান যায়। বেশ করে ঝেড়ে নিয়ে খোলায় ভেজে, ঢেকিতে বা হামানদিস্তায়ে কুটে জল দিয়ে ফাটালেই রেড়ির তেল ভেসে উঠবে, পরে ছে’কে জলটাকে মেরে নিলেই পরিষ্কার রেড়ির তেল হয়। যাঁদের অবস্থা ভাল তাঁরা ঘানিতেই পিষে নিতেন; তবে প্রাথমিক কাজ করতেই হবে। সুশ্রুতে বলা আছে যন্ত্রে পিষা তেলর অপেক্ষা সিদ্ধ তেল ভালো ও স্নিগ্ধগুণ সম্পন্ন। পাকাশয় বা অন্ত্রে কোনো উদ্বেগ হয় না। যন্ত্রে পেশা তেল রুক্ষতা আনে।

ক্যাস্টর তেলের ব্যবহার:

১৯. পেট ফাঁপায়: দাত পরিষ্কার হয় না, আবার পেটও অল্প ফাঁপে, এ ক্ষেত্রে গরম জলের সঙ্গে আধ বা এক চামচ ভেন্না বা রেড়ি-র তেল খেতে দিতেন প্রাচীন বৈদ্যরা, তবে বয়স হিসেবে মাত্রা ঠিক করে দিতেন।

২০. ক্রিমি উপদ্রবে: মলদ্বারে এসে প্রায় রোজই জ্বালাতন করে, অস্থিকর অবস্থা; এ ক্ষেত্রে দুই একদিন অন্তর ৫ থেকে ১০ ফোটা থেকে আরম্ভ করে ১ চামচ পর্যন্ত (বয়সানুপাতে) একই গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে দিতে হয়। এটাতে অনেকের কেচো কিমিও বেরিয়ে যায়।

২১. বৃদ্ধি বা বাতজ রোগ: যাঁদের অণ্ডকোষের বহিরাবরণের চর্মধারে জল জমেনি অথচ আকারে বড় হয়ে আছে; সেক্ষেত্রে ভেন্না বা রেড়ি-র ১ চামচ করে একই গরম দুধে মিশিয়ে এক দেড় মাস খেতে হয়; সেটা খালিপেটে ভোরের দিকে খেলে ভাল হয়। এটা সুশ্রুত সংহিতার ব্যবস্থা।

২২. পিত্তল (Biliary colic): পিত্তনিঃসারক স্রোতপথের আকস্মিক আক্ষেপ (spasm) মাঝে মাঝে হতে থাকে, এ ক্ষেত্রে যষ্টিমধু, (Glycyrrhiza glabra) ৫ থেকে ৬ গ্রাম থেতো করে এবং সিদ্ধ করে এক ছটাক আন্দাজ থাকতে নামিয়ে, সেটাতে আন্দাজ ১ চামচ চিনি মিশিয়ে খেলে ওটা চলে যাবে। এটা রাত্রে শয়নকালে অথবা ভোরের দিকে খেতে হয়।

২৩. মূত্র শূলে: এরণ্ড তেলের সঙ্গে ১ চামচ আদার রস অল্প গরমজলে মিশিয়ে খেলে এটা উপশম হয়, তবে এর গন্ধটা বিরক্তিকর, বর্তমান ক্ষেত্রে গন্ধবিহীন (Odourless Castor oil) ভেন্না বা রেড়ি-র তৈলের ব্যবহার চলছে।

পায়ের শিরা কেচোর মতো জড়িয়ে যাচ্ছে ও মোটা হয়েছে, পেশীগুলিও শক্ত, মাঝে মাঝে টনটন করা, ব্যথা ও যন্ত্রণা উপসর্গ আছে। সেক্ষেত্রে প্রত্যহ অল্প গরম দুধের সঙ্গে এক বা আধ চামচ মাত্রায় খাওয়া। এটা কিন্তু বিরেচন হিসেবে ব্যবহার করা নয়, রগত বায়কে নিবারণ করার জন্য। এর সঙ্গে পায়ে আস্তে আস্তে এই তৈলের মালিশ ব্যবস্থা।

২৪. কেটে গেলে: এরণ্ড তেলে হলুদের গুড়ো মিশিয়ে কাটা জায়গায় চেপে বেধে দিলে রক্ত বন্ধ হয়ে যায় ও ব্যথা হয় না এবং তাড়াতাড়ি জুড়ে যায় এবং থেতলে গেলেও এইভাবে লাগাতে হয়।

২৫. কোনো জায়গা পুড়ে গেলে: পোড়া জায়গাটা আস্তে আস্তে মুছে দিয়ে তৎক্ষণাৎ ভেন্না বা রেড়ি-র তেলে তুলা দিয়ে আস্তে আস্তে লাগাতে হয়। লাগানোর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে পোড়র জ্বালা কমে যায়। এ ক্ষেত্রে ক্ষত হলে একটু, সাদা ধনিয়ার গুড়ের সঙ্গে মলম করে লাগালে সেরে যায়।

আরো পড়ুন:  তামাক-এর বহুবিধ ভেষজ গুণাগুণ ও প্রয়োগ

২৬. শিশুদের পেট কামড়ানিতে: কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, পেটে অল্প অল্প বায়ু হয়েছে, সেক্ষেত্রে ভেন্না বা রেড়ি-র তেল আর জল একসঙ্গে ফেটিয়ে নাভির চারিদিকে লাগিয়ে আস্তে আস্তে মালিশ করে দিতে হয়; এটাতে অল্প সময়ের মধ্যে কষ্টটা চলে যায়।

২৭. সাদা দাগে: গায়ের মাঝে মাঝে ফুটফুট দাগ। সেক্ষেত্রে ভেন্না বা রেড়ি-র তেল প্রত্যহ বা এক দিন অন্তর গায়ে মাখতে হয় অথবা ঐ দাগগুলিতে লাগাতে হয়। এমন কি শ্বেতির শ্বিত্র রোগ ঠিক প্রথমাবস্থায় এই তেল দিনে ২ থেকে ৩ বার করে লাগাতে হয়। তবে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ মাস না লাগালে এই ক্ষেত্রে ফল দেখা যায় না।

২৮. অচিলের ঘা: অনেকে আঁচিলে চুণ, সোডা লাগিয়ে তুলে দেন, সেখানে ক্ষতও হয়, সেই ক্ষতে এরন্ড তেল লাগালে সেরে যায়।

২৯. বাতের ব্যথায়: সৈন্ধব লবণের সঙ্গে গরম এরণ্ড তেল মিশিয়ে ভাল করে পিষে ওটা ব্যথার জায়গায় লাগাতে হয়, এটাতেও কিছু উপশম হবে।

৩০.চোখে বালি বা ময়লা পড়ে জল ঝরতে থাকলে পালকে করে চোখে লাগিয়ে দিলে ওটা বন্ধ হয়।

ক্ষারের ব্যবহার:

৩১. মেদ বৃদ্ধি: না খেয়েও মোটা হয়ে যাচ্ছে এ ক্ষেত্রে এই এরশু পত্রের ভস্ম আধ গ্রাম আর তার সঙ্গে ঘিয়ে ভাজা হিং এক গ্রেণ (আধ রতি) এই দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে আধ কাপ আন্দাজ ভাতের মাড় (ফেন) মিশিয়ে খেতে হয়।

এটা তৈরী করার নিয়ম- বেশ কিছুটা শুকনো এরণ্ড পত্র (রেড়ির পাতা) হাঁড়িতে মুখ বন্ধ করে মাটি লেপে পোড়া দিয়ে যে সাদা-কালো মিশানো ছাই পাওয়া যাবে সেইটা নিলেই হবে।

৩২. কাসে: কোনো ওষুধেই বিশেষ কাজ হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে এই পাতার পোড়া মিহি ভস্ম ২ থেকে ৩ রতি (৬ গ্রেণ) (এটা পূর্ণ মাত্রা) একটু পুরানো গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে চেটে খেতে হবে।

রাসায়নিক গঠন:

(a) Alkaloids viz., recinine and toxalbumin recin.

(b) 45-50% fixed oil.

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্রঃ 

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা,২৬০-২৬৪।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Onjacktallcuca

2 thoughts on “ভেন্না বা রেড়ি গাছ, বীজ, মূল ও তেলের ৩২টি ঘরোয়া ঔষধি চিকিৎসা”

Leave a Comment

error: Content is protected !!