দিয়েন্দ লাকরাও বা কলাপাতা চিরহরিৎ বনের বৃক্ষ

বৃক্ষ

দিয়েন্দ লাকরাও

বৈজ্ঞানিক নাম: Actinodaphne obovata (Nees) Blume, Mus. Bot. Lugd.-Bat, 1; 142 (1851), সমনাম: Tetradenia obovata Nees (1831), Litsea obovata Nees (1831), ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: দিয়েন্দ-লাকরাও, কলাপাতা। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Magnoliids. বর্গ: Laurales. পরিবার: Lauraceae. গণ: Actinodaphne, প্রজাতি: Actinodaphne obovata.

ভূমিকা: দিয়েন্দ লাকরাও (বৈজ্ঞানিক নাম: Actinodaphne obovata) বৃক্ষ আকৃতির। এটি চিরহরিৎ বনে জন্মে। তবে বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি বিরল বলে বিবেচিত। তবে ভারতের অনেক অঞ্চলে জন্মে।

দিয়েন্দ লাকরাও-এর বর্ণনা:

এটি ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ। গাছের বাকল ধূসরাভবাদামি, উপশাখা এবং কচি অংশ তামাটে-রোমশ। পত্র ১৭.৫-৪৫.৫ x ৬.২-১৫.০ সেমি, আকার ও আকৃতিতে অনেক পার্থক্যমণ্ডিত, বিডিম্বাকার অথবা উপবৃত্তাকার-আয়তাকার, সূক্ষ্মাগ্র বা স্থুলাগ্র, পাতলাভাবে চর্মবৎ, উপরের পৃষ্ঠ উজ্জ্বল, নিম্নপৃষ্ঠ অনেকটা নীলাভ-সাদা বা চকচকে, গোড়ায় প্রায় ৩-শিরাল, পত্রবৃন্ত ২.৫-৫.০ সেমি লম্বা।

পুংপুষ্পঃ গুচ্ছে আড়াআড়িভাবে ১.২ সেমি, নল অত্যন্ত খাটো, খণ্ড ঝিল্লিময়। স্ত্রীপুষ্পঃ প্যানেকেলীয় রেসিমে অধিক ক্ষুদ্রতর কিন্তু লম্বা পুষ্পবৃন্তিকাযুক্ত, পুষ্পবৃন্তিকা ফলে প্রায় ১.২ সেমি লম্বা, শক্ত, গর্ভদণ্ড মসৃণ। ফল উপবৃত্তীয়, ০.৬-২.৫ সেমি লম্বা, অখণ্ড পেয়ালা-আকৃতির পুষ্পপুট নলের উপর অবস্থিত পেয়ালা বর্ধিত, আড়াআড়িভাবে ০.৭-১.৫ সেমি।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

চিরহরিৎ বনের আর্দ্র, ছায়াযুক্ত স্থান। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল মার্চ-আগস্ট মাস। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

দিয়েন্দ লাকরাও-এর বিস্তৃতি:

ভারতের বিশেষ করে আসাম, খাসিয়া পাহাড়, মেঘালয়, মনিপুর ও সিকিম অঞ্চলে জন্মে। বাংলাদেশে ইহা সিলেট জেলায় সীমাবদ্ধ (Alam, 1988) ।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) দিয়েন্দ-লাকরাও প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি বিরল হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে দিয়েন্দ-লাকরাও সংরক্ষণের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে উদ্ভিদটিকে এর প্রাপ্ত এলাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় খুঁজে বের করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্স-সিটু ও ইন-সিটু উভয় পদ্ধতিতেই এর সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেয়া বাঞ্চনীয়।

আরো পড়ুন:  শিউলি বা শেফালীর সাতটি ভেষজ গুণাগুণ

তথ্যসূত্র:

১. এম কে মিয়া (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৩৬-৩৩৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Rohit Naniwadekar

Leave a Comment

error: Content is protected !!