ভূমিকা: লকটন (বৈজ্ঞানিক নাম: Baccaurea ramiflora) হচ্ছে উষ্ণাঞ্চল দেশের ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশের সর্বত্রে এই গাছ জন্মে। বাণিজ্যিক বাজারে ফলের চাহিদা অনেক।
লকটন-এর বর্ণনা:
মধ্যম আকৃতি বৃক্ষ, তরুণ বিটপ রোমশ, বাকল ধূসর, বায়ুরন্ধ অনুদৈর্ঘ্যে বিন্যস্ত। পত্র একান্তর ১২-১৩ x ৬-১০ সেমি, ঝিল্লিযুক্ত, ডিম্বাকার, বিডিম্বাকার, উপবৃত্তাকার-দীর্ঘায়ত বা উপবৃত্তাকার ভল্লাকার, দীর্ঘাগ্র, মূলীয় অংশ কীলকাকার;
প্রান্ত অখন্ড বা গভীর তরঙ্গিত, প্রায় রোমশ বিহীন, পার্শ্বীয় শিরা প্রতি অর্ধাংশে ৫-১০টি, বৃন্ত ১.৫-৪.০ সেমি লম্বা, আকস্মিক বক্র, উভয় প্রান্ত স্ফীত, উপপত্র ভল্লাকার, ৮ সেমি লম্বা,
পুংমঞ্জরী রেসিম, ৩-১০ সেমি লম্বা, অধরোমশ, একল বা দলবদ্ধ, বাদামী রোমশ, মঞ্জরীপত্র ডিম্বাকার, ২-৪ মিমি লম্বা, বৃন্ত ১ মিমি লম্বা,
বৃত্যংশ ৪টি, ডিম্বাকার, ২.০ x১.৫ মিমি, পুংকেশর ৪-৮ টি, মুক্ত, পরাগধানী ছোট, বন্ধ্যা গর্ভকেশর ৩ খন্ডিত, রোমশ।
স্ত্রী পুষ্প হলুদ, সরল রেসিম মঞ্জরীতে বিন্যস্ত, প্রায় ১৫ সেমি, ফলে প্রসারিত, বৃত্যংশ হলুদ, রোমাবৃত দীর্ঘায়ত ৫-৭ মিমি লম্বা, মঞ্জরীপত্র ৩-৫ মিমি লম্বা;
বৃন্ত ২ মিমি লম্বা, গর্ভাশয় কোমল রোমশ, প্রতিকোষে ডিম্বক ২টি, গর্ভমুন্ড ছত্রবদ্ধ, সূক্ষ্ণখন্ডিত। ফল গোলাকার, হলুদ। বীজ সমোত্তল, বীজে পাঙ্গ সাদা, বীজ বহিস্তৃবক লাল।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Kumar and Subramaniam, 1986).
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:
উদ্যান ও গৃহাঙ্গনে চাষাবাদ করা হয়। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুন থেকে সেপ্টেম্বর। বীজে মাধ্যমে বংশ বিস্তার হয়।
বিস্তৃতি: ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। বাংলাদেশের সর্বত্র দেখা যায়।
লকটন-এর অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
ফল আহার্য, কাপড় ও সুতা রং করার কাজেও এর ব্যবহার প্রচলিত।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভারতে এই গাছের বাকল ভেষজ ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয় (Jain, 1981)।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) লকটন প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে লকটন সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এস নাসির উদ্দিন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৭ম, পৃষ্ঠা ৪০৪-৪০৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Xufanc
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।