ভূমিকা: মাস বা মাসজট (বৈজ্ঞানিক নাম: Brownlowia elata) মালভেসি পরিবারের এক প্রকারের বৃক্ষ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশে জন্মে। গৃহ নির্মানে ব্যবহার হয়।
মাস বা মাসজট-এর বর্ণনা:
উঁচু বৃক্ষ, শাখাপ্রশাখা ছড়ানো। পত্র ১০-৩০ x ৭২০ সেমি, ডিম্বাকার, সূক্ষ্মাগ্র, গোড়া হৃৎপিন্ডাকার, রোমহীন, নিম্নভাগ সাদা, কখনো ছত্রবদ্ধ, পত্রবৃন্ত ৭.৫১০.০ সেমি বা অধিক লম্বা, শীর্ষ স্থূল। প্যানিকল শীর্ষক, শীর্ষক পত্রের সমান লম্বা, শাখাপ্রশাখা রোমশ, চূড়ান্ত পুষ্পবৃন্ত পুষ্প থেকে লম্বা।
পুষ্প ১.২-২.০ সেমি চওড়া, হলুদ, কুঁড়ি মুষলাকার-আয়তাকার। বৃতি প্রায় ০.৫-৬.০ সেমি লম্বা, চোঙ্গা-আকৃতির, মখমলসদৃশ, খন্ডক ডিম্বাকার, নল থেকে খাটো। পাপড়ি আয়তাকার, ছড়ানো, গোড়া ভোতা, বৃত্যংশ থেকে লম্বা। পুংকেশর অসংখ্য, পুংদন্ড সরু, পরাগধানী খন্ডক গোড়া থেকে দূরাপসারী, শীর্ষে সম্মিলিত, বন্ধ্যা পুকেশর রেখাকার-বল্লমাকার।
গর্ভদন্ড পাপড়ির সমান লম্বা। ফলিকল ২.৫-৩.৭ সেমি চওড়া, লুপ্ত হয়ে একল, তির্যকভাবে ডিম্বাকার, কাষ্ঠল, সূক্ষ্ম ধূসর রোমশ, সন্ধি স্পষ্ট। বীজ একল, কদাচিৎ ২টি, সস্য। অনুপস্থিত, ভ্রূণ খাড়া, বীজপত্র ২টি।
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:
চিরহরিৎ এবং অর্ধচিরহরিৎ বনাঞ্চল। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুন-সেপ্টেম্বর।
বিস্তৃতি:
মায়ানমার ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলায় পাওয়া যায়। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
কাঠ নরম, লালাভ-ধূসর, ছিদ্র মধ্যম আকৃতির এবং মেডুলারী রশ্মি খাটো (Gamble, 1922)।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার:
কক্সবাজারে বৃহৎ পাতা বাঁশের লাঠির সাথে একত্রে করে খড় তাল পাতা প্রভৃতির ছাউনিযুক্ত গৃহের চাল দেওয়া হয় (Das and Alam, 2001)।
ভেষজ গুণ: ডায়রিয়া, সিফলিস, এবং বিষাক্ত পোকার কামড়ে চিকিৎসায় এই গাছ ব্যবহৃত হয়।
মাস বা মাসজট-এর অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) মাস বা মাসজট প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধবংসের কারনে সংকট দেখা যায় এবং বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে মাস বা মাসজট সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি ইন-সিটু এবং এক্স-সিটু উভয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে ।
তথ্যসূত্র:
১. এম কে মিঞা এবং বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৮৮-৩৮৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Md Ashrafuzzaman
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।