কুম্ভি এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ বৃক্ষ

কুম্ভি উপকারী গাছ হিসাবে পরিচিত। বাংলাদেশ, ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোতে এটি ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এর কাঠও নান কাজে ব্যবহৃত হয়। সর্দি, কাশি ছাড়াও বাহ্যিক রোগ সারাতে এটি ব্যবহৃত হয়।

কুম্ভি গাছের পরিচিতি

বৃহদাকৃতি গাছ, ৫০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্তও উঁচু হতে দেখা যায়। কাণ্ড বেশ মোটা হয়, ছাল পুরু ও ধূসর রঙের, ভেতরের দিকটা লালচে। কাঠের উপরিভাগ সাদাটে, অন্তঃকাষ্ঠ হালকা লাল। পাতা আকারে বড়, লম্বায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি এবং চওড়ায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি, লম্বাকৃতি, বোঁটার দিক সরু, অগ্রভাগ ক্রমশঃ মোটা হতে হতে অল্প সরু, কিনারা কাটা কাটা।

শরৎকালে গাছ পত্রহীন হয়ে যায়। পুষ্পদণ্ড ৩-৮ ইঞ্চি লম্বা, ফুলের বোঁটা ছোট। ফুল সাদা, ৪টি পাপড়িযুক্ত, লাল রঙের পুংকেশর প্রচুর, দেখতেও সুন্দর। ফুলের গোড়ার দিকটা  বা বৃতি/Caiyx শুকিয়ে যখন বাজারে আসে তখন তাকে বাকুম্ভা বলে। গুজরাটী অঞ্চলে এটি বাপুম্ভা নামেই পরিচিত। ফল গোলাকার, ২-৩ ইঞ্চি লম্বা, সুগন্ধযুক্ত, ফলের তলদেশ কলসীর মতো দেখতে এবং ফাঁপা, সেজন্য একে কুন্তী বলে। ফল লোকে খায়। বীজ লম্বাটে। মার্চ-এপ্রিলে ফুল ও জুন মাসে ফল হয়।

অন্যান্য নাম

এটি ভারতে কুম্ভী নামে অধিক পরিচিত। বোটানিক্যাল নাম Careya arborea Roxb., পরিবার Lecythidaceae.

কুম্ভি গাছের ব্যবহার

গাছের ছাল থেকে দড়ি, কাগজ প্রভৃতি প্রস্তুত হয়। বন্য শূকর এই ছাল খেতে বড় ভালবাসে। ফল ও কাণ্ড থেকে এক প্রকার আঠা বা নির্যাস বেরোয়। কাঠ খুবই মজবুত। নানাবিধ কাজে লাগে। ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয় গাছের ও মূলের ছাল, পাতা, ফুল, ফল ও নির্যাস।

বিস্তৃতি  

হিমালয়ের পাদদেশের কাংগড়া থেকে আরম্ভ করে পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের ৫ হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত স্থানে এটি জন্মে।

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

আরো পড়ুন:  উধুঝাটি বাংলাদেশে সর্বত্রে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১০, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, চতুর্থ মুদ্রণ ১৪০৭, পৃষ্ঠা, ২৮৬-২৮৭।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Aarti Khale

Leave a Comment

error: Content is protected !!