ভূমিকা: হলদে পাম বা এরিকা পাম (বৈজ্ঞানিক নাম: Chrysalidocarpus lutescens ইংরেজি নাম: golden cane palm, areca palm, yellow palm,or butterfly palm ) হচ্ছে সপুষ্পক একটি উদ্ভিদ। অফিস, বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয়ে থাকে।
বর্ণনা: বহু কান্ডযুক্ত ভিন্নবাসী পাম, ৩-১০ মিটার x ১০-১৫ সেমি, সরু, কান্ড গোল দাগযুক্ত। পাতা পক্ষল, প্রতিকান্ডে ৬-১০ টি, ছড়ানো, পক্ষবৎ অতিখন্ডিত, ধনুকের মতো বক্র, ২-৪ মিটার লম্বা এবং ৭০ সেমি প্রশস্ত, বৃন্ত প্রায় ৮০ সেমি লম্বা, পত্রফলকের কাছে গভীরভাবে খজ বিশিষ্ট, মূলীয় অংশ প্রশস্ত পত্রাবরণে রূপান্তরিত। পত্রাবরণ মসৃণ, পত্রফলক ১.৫-৩.৫ x ০.৭ মিটার, ৪০-৬০ জোড়া পত্রকযুক্ত, পত্রক সরু ভল্লাকার, লম্বা দীর্ঘা, অসম দ্বিখন্ডিত, প্রায় ২ সেমি প্রশস্ত, মধ্যশিরা সুস্পষ্ট, মসৃণ।
পুষ্পবিন্যাস আন্ত:পত্রীয়, পুং ও স্ত্রী পুষ্পবিন্যাস ভিন্ন উদ্ভিদে জন্মে, প্রচুর শাখান্বিত, প্রায় ১.৫ মিটার x ৬০ সেমি, সবুজাভ-হলুদ, বৃন্ত ২০ সেমি প্রশস্ত এবং মূলীয় অংশ অর্ধ চন্দ্রাকৃতি, শাখা সমূহ পাতলা, ১০-২৫ সেমি x ৪ মিমি, সবুজাভ-হলুদ, চতুর্দিকে পুষ্প ঘন সন্নিবেশিত।
পুং ও স্ত্রী পুষ্পবিন্যাস একইরূপ। চমসা ২ টি রৈখিক-দীর্ঘায়িত, হলুদাভ-সবুজ, ৪০ x ৬ সেমি। পুষ্প একলিঙ্গ, সাদা, অসংখ্য। পুংপুষ্প প্রতিসম, বৃত্যংশ বর্তুলাকার, প্রান্ত আচ্ছাদী, পাপড়ি নিম্নাংশে যুক্ত, ডিম্বাকার, প্রান্তস্পর্শী, পুংকেশর ৬ টি, পরাগধানী পৃষ্ঠলগ্ন, বন্ধ্যা গর্ভকেশর ত্রিকোণাকার।
স্ত্রী পুষ্প গোলাকার, বৃত্যংশ ও পাপড়ি বর্তুলাকার, বন্ধ্যা পুংকেশর ৬ দন্ডযুক্ত, গর্ভাশয় ডিম্বাকৃতি, ১-৩ কোষী, গর্ভমুণ্ড অবৃন্তক, ডিম্বক একল, প্রাচীর গাত্রীয়। ফল বেরি, উপবৃত্তীয় কোণাকৃতি, বাঁকা, পরিপক্ক ফল কালো বেগুনী, ২ সেমি পর্যন্ত লম্বা। বীজ দীর্ঘায়ত, ১.৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, বীজ বহিস্তৃক দৃঢ়, মসৃণ।
ফুল ও ফল ধারণ: ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস। ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩২ (Fedorov, 1969)।
বিস্তৃতি: আদি নিবাস মাদাগাস্কার, বর্তমানে পৃথিবীর সব উষ্ণ মন্ডলে চাষাবাদ চলছে। বাংলাদেশের ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাগান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এর চাষাবাদ হয়।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: বাহারি উদ্ভিদরূপে বাগান, লন, বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করা হয়। বীজ ও শাখাকলমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) এরিকা পাম প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা যায় বৃক্ষ রোপনে অনিহা। এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে এরিকা পাম সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে বাগানে ও বাসা বাড়িতে অধিক আবাদের উৎসাহ করা যেতে পারে।[১]
তথ্যসূত্র:
১.এম.জসিম উদ্দিন (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Kenraiz
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।