কাঁঠালি বট দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার একটি বড় বৃক্ষ

বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus altissima Blume.

সমনাম: Ficus laccifera Roxb. (1832), Ficus latifolia Oken (1863), Ficus altissima Blume var. laccifera Hook. f. (1888).

ইংরেজি নাম: Council Tree.

স্থানীয় নাম: বট, কাঠাল বট, প্রাব।

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

জগৎ/রাজ্য: Plantae

বিভাগ: Angiosperms

অবিন্যাসিত: Eudicots

অবিন্যাসিত: Rosids

বর্গ: Rosales

পরিবার: Moraceae

গণ: Ficus

প্রজাতি: Ficus altissima Blume, Bijdr.: 444 (1825).

বর্ণনা: কাঁঠাল বট মোরাসি পরিবারের ফাইকাস গণের একটি বৃহদাকার, ছড়ানো বৃক্ষ। এদের বায়বীয় মূলবিশিষ্ট, ৩৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, বাকল ধূসর, মসৃণ, শাখা-প্রশাখা শুষ্ক অবস্থায় বাদামী, উপশাখাসমূহ রোমশ। পল্লব কোণীয়, কিঞ্চিৎ সাদা অণুরোমশ থেকে মসৃণ। পাতা সর্পিলাকারে সজ্জিত, অণুপর্ণী, উপপত্র ২-৪ সেমি লম্বা, ঘন ও সাদাটে অণুরোমাবৃত, আশুপাতী, ফলক বৃন্তক, বৃন্ত ২-৫ সেমি লম্বা, মসৃণ, পত্রফলক ডিম্বাকার থেকে স্থুল ডিম্বাকার-উপবৃত্তাকার, ১০-২২ x ৭-১২ সেমি, চর্মবৎ, মসৃণ, শীর্ষ খর্ব দীর্ঘাগ্র, নিম্নপ্রান্ত ক্রমসরু থেকে গোলাকার, কিনারা অখন্ড, পার্শ্বশিরা ৭-১০ জোড়া, পাদদেশীয় জোড়া সুস্পষ্ট, শাখান্বিত, সোজা অথবা কিঞ্চিৎ বাঁকা, তৃতীয়ক শিরাসমূহ জালিকাকার, নিম্নপৃষ্ঠে কিছুটা সুস্পষ্ট, মধ্যশিরার গোড়ায় মোমতুল্য গ্রন্থি বিদ্যমান।

ফিগ পত্রবহুল উপশাখায় কাক্ষিক, জোড়বদ্ধ, পরিণত অবস্থায় লাল অথবা হলুদ, ১.৩-২.৮ সেমি লম্বা, কখনও অধিক কচি অবস্থায় রোমশ, পরিণত অবস্থায় মসৃণ, অগ্রস্থ ছিদ্রটি নাভি সদৃশ, উত্তল, অবৃন্তক, পাদদেশীয় মঞ্জরীপত্র ৩টি, অসমান, ১-৩ মিমি লম্বা, প্রায়ক্ষেত্রেই যমক, স্থায়ী, মঞ্জরীপত্রাবরণ আংটা সদৃশ, কচি ফিগ আবৃত করে রাখে, আশুপাতী, শীর্ষ স্থূলাগ্র, পুষ্পধার উপবৃত্তাকার, শুষ্ক অবস্থায় ১.৫ সেমি (প্রায়) ব্যাসবিশিষ্ট, মসৃণ, পরিণত অবস্থায় লাল। পুং, গল এবং স্ত্রী পুষ্প একই ফিগের অভ্যন্তরে। পুং পুষ্প বিক্ষিপ্ত, বৃতির খন্ড ৪টি, স্বচ্ছ, ঝিল্লিময়, পুংকেশর ১টি। গল পুষ্পের বৃত্যংশ ৪টি, গর্ভদন্ড প্রায় শীর্ষীয়, লম্বা। স্ত্রী পুষ্প অবৃন্তক, বৃত্যংশ ৪টি, গর্ভদন্ড প্রলম্বিত। ফল অ্যাকিন, গুটিকাযুক্ত। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে মার্চ-জুলাই।

আরো পড়ুন:  বন্দনা বট পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট বৃক্ষ

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Hans, 1972).

আবাসস্থল: চিরহরিৎ অরণ্য।

বিস্তৃতি: ভুটান, ক্যাম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয় পেনিনসুলা, মায়ানমার, নেপাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম জেলা থেকে নথিভুক্ত হয়েছে (Uddin et al., 2003).

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: এই উদ্ভিদটি থেকে রাবার পাওয়া যায়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: জানা নেই।

বংশ বিস্তার: বীজ দ্বারা।

প্রজাতিটির সংকটের কারণ: আবাসস্থল ধ্বংস।

সংরক্ষণ ও বর্তমান অবস্থা: তথ্য সংগৃহিত হয়নি (NE), কিন্তু ধারণা করা হয় ইহা একটি বিরল প্রজাতি।  

গৃহিত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের জন্য কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

প্রস্তাবিত পদক্ষেপ: প্রজাতিটি পুনরায় খুঁজে বের করার জন্য বিষদভাবে অনুসন্ধান চালাতে হবে। প্রকৃতিতে ইহা কোথায় কোথায় বিরাজ করছে তা জানার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ইহার আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে।

তথ্যসূত্র:

১. এম অলিউর রহমান, (আগস্ট ২০০৯)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”।  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ৯ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২০৩-২০৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!