বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus auriculata Lour.
সমনাম: Ficus macrophylla Roxb. non Desf. ex Pers. (1807), Ficus roxburghii Wall. ex Miq. (1948).
ইংরেজি নাম: Australian Fig, Eve’s Apron.
স্থানীয় নাম: বড় ডুমুর, সাপাই।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae
বিভাগ: Angiosperms
অবিন্যাসিত: Eudicots
অবিন্যাসিত: Rosids
বর্গ: Rosales
পরিবার: Moraceae
গণ: Ficus
প্রজাতি: Ficus auriculata Lour., F1. Cochinch. 2: 666 (1790).
বড় ডুমুর বা সাপাই বর্ণনা:
বড় ডুমুর মোরাসি পরিবারের ফাইকাস গণের ছোট থেকে মাঝারি আকারের বৃক্ষ, ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, বাকল ধূসরাভ বাদামী, রুক্ষ, উপশাখাসমূহ লালচে বাদামী, কান্ডের মধ্যভাগ পত্ৰশুন্য, রোমশ। পল্লব অণুরোমশ থেকে কিঞ্চিৎ রোমশ বা মসৃণ। পাতা সর্পিলাকারে সজ্জিত অথবা প্রায় দ্বি-সারী, অণুপর্ণী, উপপত্র লালচে বেগুনী, ত্রিকোণার-ডিম্বাকার, ১.৫-২.৫ সেমি লম্বা, আশুপাতী, ফলক বৃন্তক, পত্রবৃন্ত ৩-১০ সেমি লম্বা, সাদাটে থেকে বাদামী অণুরোমশ বা মসৃণ, পত্রফলক স্কুল ডিম্বাকার-হৃপিণ্ডাকার, ১০-৩৫ x ৬-২৫ সেমি, পুরু। কাগজবৎ, শীর্ষ স্থূলাগ্র এবং সুক্ষ খর্বাগ্রবিশিষ্ট, নিম্নপ্রান্ত হৃৎপিণ্ডাকার থেকে কখনও কখনও গোলাকার, কিনারা নিয়মিতভাবে অগভীর দন্তুর, অক্ষাভিগ পৃষ্ঠ খর্বাকার চেপটা রোমাবৃত, অক্ষবিমুখ পৃষ্ঠ মসৃণ বা মধ্যশিরা বরাবর অণুরোমশ, পার্শ্বশিরা ৩-৭ জোড়া, পাদদেশীয় জোড়া ফলকের দৈর্ঘ্যের দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিস্তৃত, তৃতীয়ক শিরাবিন্যাস সোপানাকার, পার্শ্বশিরাসমূহের কক্ষে মোমতুল্য গ্রন্থি বিদ্যামান।
ফিগ গুঁড়ির গোড়া এবং প্রধান শাখাসমূহ থেকে উত্থিত পত্রশুন্য বিশেষ উপশাখায় জন্মায়, লালচে বাদামী, ৮-১২টি সুস্পষ্ট অনুদৈর্ঘ্য শৈলশিরা বর্তমান, শৈলশিরাসমূহ সাদা, কচি অবস্থায় কিঞ্চিৎ রোমশ, পরিণত অবস্থায় মসৃণবৎ, বৃন্ত ২-৭ সেমি লম্বা, রোমশ, পাদদেশীয় মঞ্জরীপত্র ৩টি, স্থায়ী, ৩-৬ মিমি লম্বা, মঞ্জরীপত্রাবরণ ত্রিকোণাকার-ডিম্বাকার, পুষ্পধার প্রায় নাশপাতি আকার থেকে উপগোলকাকার থেকে অবনত গোলকাকার, শুষ্ক অবস্থায় ২-৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট। পুং পুষ্প অবৃন্তক, বৃতির খন্ড ৩টি, স্বচ্ছ, চমসাকার, পাতলা ঝিল্লিময়, পুংকেশর ২টি, পুংদন্ড লম্বা, পরাগধানী নিরেট ডিম্বাকার। গল পুষ্পের বৃতি ৩-খন্ডিত, খন্ডসমূহের অগ্রভাগ। মুক্ত, গর্ভদন্ড পার্শ্বীয়, রোমশ, গর্ভমুণ্ড প্রলম্বিত। স্ত্রী পুষ্প খর্ব বৃন্তযুক্ত অথবা অবৃন্তক, বৃতি ৩-খন্ডিত, গর্ভাশয় নিরেট ডিম্বাকার, গর্ভদন্ড পার্শ্বীয়, গল পুষ্পের গর্ভদন্ড অপেক্ষা বৃহদাকার, রোমশ। ফল অ্যাকিন, সংসক্ত তরল বিশিষ্ট। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Kundu and Sharma, 1976).
আবাসস্থল: অরণ্য এবং খালের পাড়।
বড় ডুমুর বা সাপাই বিস্তৃতি:
ভুটান, চীন, ভারত, জাপান, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম । বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সিলেট জেলার বনভূমিতে পাওয়া যায়।
অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক:
ফল খাওয়ার উপযোগী এবং তরকারীতে খাওয়া হয়। বাকল দিয়ে এক প্রকার মোটা রঞ্জু তৈরি করা হয়। পাতা এবং কচি শাখাপ্রশাখা হাতি এবং উটের উত্তম খদ্য। পাকিস্তানে ইহার ফল কাঁচা অথবা রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে (Ghafoor, 1985).
জাতিতাত্বিক ব্যবহার: জানা নেই।
বংশ বিস্তার: বীজ দ্বারা।
প্রজাতিটির সংকটের কারণ: বর্তমানে কোনো প্রকার হুমকির মুখোমুখি নয়।
সংরক্ষণ: বর্তমানে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না।
বর্তমান অবস্থা: আশঙ্কামুক্ত (lc).
গৃহীত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
প্রস্তাবিত পদক্ষেপ: বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এম অলিউর রহমান, (আগস্ট ২০০৯)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ৯ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২০৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।