বৃক্ষামল বা মহাদা এশিয়ায় জন্মানো উপকারী বৃক্ষ

বৃক্ষামল-এর বাংলা নাম মহাদা, এর প্রচলিত নাম কোকম, মহারাষ্ট্রে একে আমসুল বলে। হিন্দীতেও এটি কোকম নামে খ্যাত। সমগ্র বিশ্বে এই গণের প্রায় ২০০টি প্রজাতি আছে, তন্মধ্যে ভারতে পাওয়া যায় ৩০টি।

এটি প্রধানভাবে ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের গাছ। তবে বর্তমানে যত্রতত্র দেখা যায়। কংকন, মালাবার, উত্তর কণাটক, গোয়া, পশ্চিম ঘাট প্রভৃতি স্থানে অধিক পরিমাণে জন্মে। এছাড়া মালয়, চীন, জাভা, সিঙ্গাপুর অঞ্চলেও প্রচুর দেখা যায়।

বৃক্ষামল-এর পরিচয়:

ঝোপঝাড়যুক্ত সুন্দর ছোট গাছ। শাখাগুলি স্বাভাবিকভাবেই অবনত। পাতা ডিম্বাকার, অগ্রভাগ বশার মত ক্রমশ সরু, দেখতে অনেকটা গাব (Diospyros peregrina) পাতার মত আয়তাকার। এটি লম্বা ও চওড়ায় যথাক্রমে আড়াই থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি ও দুই থেকে আড়াই ইঞ্চির মত। পাতার উপরের দিকটা গাঢ় সবুজ এবং নিচেটা অপেক্ষাকৃত ফিকে রঙের। শরৎকালে ফুল হয়, তবে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় পুষ্পই একই গাছে পাশাপাশি হয়। তারপর ফল হয়, আকারে নারেঙ্গী লেবুর মত, পাকলে জামের মত রঙ হয়।।

এই ফল কি পাকা আর কি কাচা, সব বয়সেই টক রস এবং বীজে ভরা, কমপক্ষে ৭/৮টি বীজ থাকে। বীজগুলিকে বের করে শুকিয়ে সেই বীজ পেষাই করে তৈল তৈরী হয় এবং সেটা মোমের মত জমে যায়। এই তৈলকে কোম বাটার (Cocom Butter) বলে।

এই বৃক্ষটির বোটানিক্যাল নাম Garcinia indica Chois., ফ্যামিলী Guttiferae. ফল থেকে বীজ বের করে শুকিয়ে বাজারে কোকম নামে বিক্রয় হয়। ব্যবহার্য অংশ: শুষ্ক ফল/ ফলের শাঁস, বীজের তৈল ।

অন্যান্য তথ্য:

পাকা ফলের শাঁসে (খোসা সমেত) অল্প লবণ মিশিয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে সমস্ত প্রদেশে চালান যায়, আর সেইটাই অম্লবেতসের পরিবর্তে বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে। অনেকের ধারণা—এইটাই অম্লবেতস, কিন্তু তা নয়; আসল যে অম্লবেতস তা আসামের নগাঁও অঞ্চলে হয়, তার বোটানিক্যাল নাম Garcinia pedunculata Roxb., ফ্যামিলী Cuttiferae.

আরো পড়ুন:  অরনি বা বাতঘ্নী এশিয়ায় জনানো ভেষজ উদ্ভিদ

এ ভিন্ন কাঁচাফল কেটে শুকিয়ে (বেল শুঠের মত) বাজারে আসে । চাটনীর জন্য এটা খাট্রাই ফল বলে বিক্রী হয়। আর এর বীজ থেকে যে তৈল তৈরী হয়, তা থেকে পমেড তৈরি হয়।

CHEMICAL COMPOSITION

Garcinia indica

Seeds contain: Edible fats known as kokom butter (plamitic, stearic, arachidic, oleic and lioleic), glycosides (tristearin, oleodistearin, oleopalmito-stearin, steariodiolein, palmitodiolein ad triolein), unsaponine matter 2.3%, malic, tartaric and citric acid.

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্রঃ

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৯, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ ১৪০৫, পৃষ্ঠা, ৫৬-৫৭।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Arunsbhat

Leave a Comment

error: Content is protected !!