বৈজ্ঞানিক নাম: Gardenia coronaria
সমনাম: Gardenia costata
বাংলা ও স্থানীয় নাম: কন্যারি বা কন্নারি (চট্টগ্রাম), বেলা (সিলেট), কইনার, কনিয়ারা, আনকামাল, বনকামাল, বাটা, বট্টা, পাইন্যা ফুল, সিতগাছ, রানখাই, রাং-খু (মগ), রাগেশফুল (চাকমা) ইত্যাদি।
ইংরেজি নাম:
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants
উপরাজ্য: Tracheobionta – Vascular plants
অধিবিভাগ: Spermatophyta – Seed plants
বিভাগ: Magnoliophyta – Flowering plants
শ্রেণী: Magnoliopsida – Dicotyledons
উপশ্রেণি: Asteridae
বর্গ: Rubiales
পরিবার: Rubiaceae – Madder family
উপপরিবার:
গণ: Gardenia Ellis – gardenia
প্রজাতি: Gardenia coronaria Ham.
পরিচিতি: কন্যারি ছোট থেকে মধ্যম আকৃতির পাতাঝরা বৃক্ষ, উচ্চতায় ৭-৯ মিটার পর্যন্ত হয়। গাছের গুঁড়ি কান্ড সরল সোজা এবং বাকল মসৃণ ও ধূসর বর্ণের। এদের পাতা আয়তাকার, লম্বায় ১০-২৫ সেন্টিমিটার, কিনারা মসৃণ ও আগা সূচালো। পাতার শিরাবিন্যাস স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। মার্চ-এপ্রিল মাসে পাতার কক্ষে একক বড় আকারের গন্ধরাজ ফুলের মতো সুগন্ধিযুক্ত সাদা বর্ণের ফুল ফোটে। শুকিয়ে যাওয়ার আগে ফুলগুলো হলুদ বর্ণে পরিবর্তিত হয়। ফল বোটাযুক্ত ডিম্বাকার, লম্বায় ২.৫ সেন্টিমিটার, ফলের উপরিভাগে ৫টি লম্বালম্বি রেখাযুক্ত এবং শেষপ্রান্ত ভাগ ঠোট আকৃতি বিশিষ্ট। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ফল পরিপক্ক হয়। প্রতিটি ফলে ছোট আকারের অনেক বীজ থাকে।
ভৌগোলিক বিস্তৃতি: বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত।
বাংলাদেশে বিস্তৃতি ও প্রাপ্তিস্থান: চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট ও মৌলভিবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বনে বিক্ষিপ্তভাবে জন্মানো কন্যারি গাছ কদাচিৎ দেখা যায়। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে লাগানো কিছু কন্যারি গাছ রয়েছে।
প্রজনন ও বংশবিস্তার: বনাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে কন্যারি বীজ থেকে চারা ও গাছ জন্মায়। নার্সারিতে পলিব্যাগে বা বেডে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করা যায়। বর্ষার শুরুতে জুন মাসে এক বছর বয়সী কন্যারি চারা লাগানো যায়।
গুরুত্ব ও ব্যবহার: কাঠ হলুদাভ বর্ণের ও সুন্দর মসৃণ। বাঁকানো-মোড়ানো ও নকশা-খোদাই করার কাজে কাঠ ব্যবহৃত হয়। বাতের ব্যাথা ও ব্রংকাইটিস রোগ নিরাময়ে পাতা ব্যবহৃত হয়। কন্যারি গাছের ফুল গন্ধরাজ ফুলের মতো সুগন্ধিযুক্ত ও আকর্ষণীয় হওয়ায় বিনোদনমূলক পার্ক ও বাগানসমূহে লাগানো হয়।
সংরক্ষণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ: আরণ্যক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এর সহযোগীতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে কন্যারির চারা লাগিয়ে প্রজাতিটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের ৪১ ও ৪৬ নম্বর সেকশনে লাগানো কিছু কন্যারি গাছ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।