ভুমিকা: কুরচি বা কুড়চি (বৈজ্ঞানিক নাম: Holarrhena pubescens) হচ্ছে হোলার্হেনা গণের মাঝারি আকৃতির গাছ। এর ছোট ছোট ফুলের বেশ মিষ্টি গন্ধে ভরা থাকে। সুগন্ধের জন্য বাগানে লাগিয়ে থাকে।
পরিচিতি: বাংলাদেশ ও ভারতেরে জন্মান এই প্রজাতি ৬ থেকে ৭ মিটার উঁচু হয়। এটা মাঝারি ধরনের গাছ। এর পাতা বেশ বড়। পাতার আকার ৬ থেকে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ১২ ইঞ্চি থেকে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত চওড়া হয়ে থাকে। এটি পত্রমোচী গাছ। এর বোঁটা ছোট ও পাতা দেখতে গোলাকার। কুরচির ঔষধি ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পড়ুন
শীতকালে পাতা ঝরে যায়। পাতাহীন ডালে ছোট ছোট থাকায় সাদা ফুল ফুটে থাকে। এই সুগন্ধি ফুল শরৎকাললেও কিছু কিছু দেখা যায়। ফুল আকারে ২ থেকে ৩ সেমি হয়। ফুলের নালের আকার ২ থেকে ৩ সেমি ও ৫টি পাপড়ি থাকে। এর ফল সজোর ও দেখতে সরু হয়। ফলের আকার ২০ থেকে ৩৫ সেমি দৈর্ঘ্য ও ৫ থেকে ৬ মিমি প্রস্থ। বীজের আকার ১ থেকে ১.৩ সেমি। বীজের চারপাশে বাদামি রোম জড়ানো। [১]
এই Holarrhena গণের গণের নির্বাচিত উদ্ভিদ প্রজাতি সংগঠন মোট পাঁচটি প্রজাতিকে নির্ধারণ করেছে। এদের ৭ থেকে ৮টি প্রজাতি এশিয়া ও আফ্রিকার উষ্ণপ্রধান অঞ্চলে পাওয়া যায়, তার মধ্যে ২ থেকে ৩টি প্রজাতি ভারত ও সিংহলে বর্তমান। তবে সাধারণত তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ফুট উচ্চতার মধ্যে এই গাছগুলি হয়। তবে এটা দেখা যায়; কাঁকর বা পাথর মেশানো মাটি যে অঞ্চলে বেশী, সেখানেই কুরচির বন। আর এসব অঞ্চলের আবহাওয়াও শুষ্ক।
বিস্তৃতি: এই গাছ প্রধানভাবে পাওয়া যায় সিকিম, সাহারাণপুরে জঙ্গলে, রাজপুতনার আবু, পাহাড়ের নিকট এবং বিহার, গোদাবরী নদীর তীর, বর্মা ও আসামেও। অবশ্য এইসব প্রজাতির সঙ্গে পরিচিত হতে হলে শিবপুর বোটানিকাল গার্ডেনেই গেলে এদের দেখতে পাওয়া যাবে।[২]
চাষ পদ্ধতি: কুরচি গাছের বীজ থেকে চারা জন্মে। বসন্তকালে গাছের পাতা ঝরে যায়, বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠে আবার নতুন পাতা গজায়। ফলের ভিতরে লম্বা আঁশের তুলোর মধ্যে লম্বাভাবে সারি সারি বীজ সাজানো থাকে। এই গাছের ছালের রং ধূসর বর্ণ। [৩]
ব্যবহৃত অংশ: ঔষধার্থে ব্যবহার হয় গাছের ও মূলের ছাল, বীজ ও ফুল।
তথ্যসূত্রঃ
১. দ্বিজেন শর্মা; ফুলগুলি যেন কথা, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ মে ১৯৮৮, প্রথম পুনর্মুদ্রণ ডিসেম্বর ২০০৩ পৃষ্ঠা, ১৯।
২. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ২৯৮।
৩. এ বি এম জাওয়ায়ের হোসেন, ওষুধি গাছগাছড়া, গ্রন্থনা, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফাল্গুন ১৪১১, পৃষ্ঠা, ৩২।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।