হিমালয়ী তুঁত বাংলাদেশে বিরল এশিয়ার ফলদ বৃক্ষ

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম: Morus macroura Miq., Pl. Jungh. 1: 42 (1851). সমনাম: Morus laevigata Wall. ex Brandis (1874), Morus alba L. var. laevigata Wall. ex Bureau (1873). ইংরেজি নাম: Himalayan Mulberry. স্থানীয় নাম: হিমালয়ী তুঁত, শাহ তুঁত। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Rosales পরিবার: Moraceae গণ: Morus প্রজাতি: Morus macroura.[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকা: হিমালয়ী তুঁত বা শাহ তুঁত (Morus macroura ) হচ্ছে মোরাসি (তুঁত) পরিবারের মোরুস গণের একটি ছোট থেকে মাঝারি আকারের সপুষ্পক বৃক্ষ। এদের ফল ভক্ষণযোগ্য এবং উত্তর ভারতে খুব জনপ্রিয়, বাজারেও বিক্রি হয়।

বিবরণ: হিমালয়ী তুঁত ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু, চূড়া ঘন, বাকল ধূসর, সমতল, শাখা-প্রশাখা কচি অবস্থায় রোমশ, শীতকালীন কুঁড়ি নিরেট ডিম্বাকার-উপবৃত্তাকার থেকে নিরেট ডিম্বাকার, সাদা রোমাবৃত। পাতা একান্তর, অণুপর্ণী, ফলক বৃন্তক, বৃন্ত ২-৫ সেমি লম্বা, রোমশ, পত্রফলক ডিম্বাকার থেকে স্কুল ডিম্বাকার, ৫-১৫ x ৪-৯ সেমি, ঝিল্লিময়, শীর্ষ দীর্ঘাগ্র থেকে খর্ব দীর্ঘাগ্র, পাদদেশ গোলাকার, হৃৎপিণ্ডাকার বা খাতাগ্র, কিনারা ঘন এবং ক্ষুদ্রাকারে ক্রকচ, অক্ষাভিগ পৃষ্ঠ ফ্যাকাশে সবুজ এবং কচি অবস্থায় মধ্যশিরা এবং পার্শ্বশিরা বরাবর কোমল ও খর্বাকার রোমাবৃত, অক্ষবিমুখ পৃষ্ঠ গাঢ় সবুজ এবং শিরা বরাবর কোমল রোমশ, পার্শ্বশিরা ৪-৬ জোড়া।

পুং ক্যাটকিন। কাক্ষিক, জোড়ায় জোড়ায় অবস্থিত, ৫-১০ সেমি লম্বা, মঞ্জরীদন্ড ১.০-১.৫ সেমি লম্বা, রোমশ। পুং পুষ্পের বৃত্যংশ ৪টি, ডিম্বাকার, পৃষ্ঠদেশ রোমশ, পুংদন্ড ২ সেমি (প্রায়) লম্বা, পরাগধানী গোলকাকার। স্ত্রী ক্যাটকিন বেলনাকার, ঝুলন্ত, পাতলা পুষ্পবিশিষ্ট, ৬-১২ সেমি লম্বা, মঞ্জরীদন্ড ১.২-২.০ সেমি লম্বা। স্ত্রী পুষ্প ৪টি রোমশ বৃত্যংশবিশিষ্ট, প্রান্ত-অচ্ছাদী, গর্ভাশয় নিরেট ডিম্বাকার, চেপটা, রোমশ, গর্ভদন্ড দ্বি-বিভক্ত, গর্ভমুণ্ড ফুসকুড়িবিশিষ্ট। ফল সরোসিস, বেলনাকার, ৬-১২ সেমি লম্বা, সরস, পরিপক্ক অবস্থায় হলুদাভ সাদা। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে মার্চ-মে।

আরো পড়ুন:  তুঁত পৃথিবীর নাতিশীতোষ্ণ এবং উষ্ণমণ্ডলের দেশসমূহের বৃক্ষ

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৮ (Kundu and Sharma, 1976).

চাষাবাদ ও আবাসস্থল: অরণ্য এলাকায় জন্মে এবং বংশ বিস্তার ঘটে বীজের সাহায্যে।

বিস্তৃতি: ভুটান, চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি ঢাকা এবং সিলেট জেলা থেকে বর্ণিত হয়েছে (Datta and Mitra, 1953; Alam, 1988). অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: এই প্রজাতিটি কাগজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং কাঠ ও পাতা রং শিল্পে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) হিমালয়ী তুঁত প্রজাতিটির আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে প্রজাতিটির সংকট উপস্থিত হয়েছে। বর্তমানে এই প্রজাতি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই কিন্তু বিরল প্রতীয়মান। বাংলাদেশে হিমালয়ী তুঁত সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে প্রজাতিটি পুণরায় খুঁজে বের করার জন্য এবং ইহার বিস্তৃতি জানার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করতে হবে। অধিকন্তু মূল আবাসস্থলে প্রজাতিটি যাতে টিকে থাকতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ৯ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৪৮-২৪৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!