পরিচিতিঃ পাউলোনিয়া বা রাজকুমারী গাছ বা সম্রাজ্ঞী গাছ বা শেয়ালদস্তানা গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Paulownia tomentosa) হচ্ছে দ্রুত বর্ধনশীল কাঠ উৎপাদনকারী একটি আগ্রাসী গাছ। এটি একটি পর্ণমোচি গাছ, মধ্য এবং পশ্চিম চিনের দেশজ উদ্ভিদ কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে আগ্রাসি প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। এটি ১০-২৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, হৃদয়-আকারের বড় পাঁচ-লতিযুক্ত পাতা, পাতার আকার ১৫-৪০ সেমি, বিপরীত জোড়ায় কাণ্ডের উপরে পাতা জন্মায়। এই গাছের মুল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে দ্রুত বৃদ্ধি যা বাগানকারীর উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করে। এ গাছের নামকরণ করা হয়েছে রাশিয়ার ডাচেস আন্না পাভলোভনা এবং আন্না পাওলোয়ানা নামে নেদারল্যণ্ডের রাজনকুমারীর নামানুসারে এবং tomentosa শব্দটি ল্যটিন ‘চুল দ্বারা পরিবৃত্ত’ এর্থ প্রকাশ করে।
পাউলোনিয়া দাবানলের সময়ও বেঁচে থাকতে পারে কারণ এর শিকড় অতি দ্রুত নতুন কাণ্ড জন্মাতে পারে। এই গাছ দুষণ সহ্য করতে পারে এবং যেকোনো মাটিতে জন্মাতে পারে। বীজ বাতাস এবং পানির মাধ্যমে ছড়ায়।
ব্যবহারঃ চিনে এই গাছ কন্যাসন্তান জন্মানোর পর তার যৌতুক হিসেবে অর্থ অর্জনের উদ্দেশে রোপন করা হতো। চিন এবং জাপানে কাঠখোদাই শিল্পে এটি ব্যবহৃত হয়। কতিপয় এশীয় ততযন্ত্র তৈরিতে এটি কাজে লাগে।
বাংলাদেশে পাউলোনিয়া কেন ক্ষতিকর
মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছের তালিকা
জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি আগ্রাসি প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। এটি প্রচুর পানি শোষণ করে এবং দ্রুত বাড়ে। বাংলাদেশের উত্তরবংগে উইকালিপটাস গাছ রোপন করার কারণে উত্তরবংগ এখন মরুকরণের পথে রয়েছে। পাউলোনিয়ার মতো আরেকটি আগ্রাসি প্রজাতি বাংলাদেশে রোপন করে ডেসটিনি বাংলাদেশকে মরুকরণ করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। আসুন পাউলোনিয়া গাছকে প্রতিরোধ করি আমাদের দেশের দেশি কাঠ উৎপাদনকারি বৃক্ষসমুহ রোপন করি। বাংলাদেশের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছগুলো সম্পর্কে সচেতন হই।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।