গাছ মধ্যমাকার, ৮/১০ ফুটের বেশি উঁচু হতে সাধারণত দেখা যায় না, দীর্ঘদিন বাঁচেও না। গাছের ছালের রঙ গাঢ় মেরুণ, একটু কালচে, ত্বক চিক্কণ। কোন কোন গাছ ৭/৮ ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত দেখা যায়। গাছ পরিণত বয়সের হলে মাঝে মাঝে গাছের ত্বকের উপর থেকে চামড়ার মতো শক্ত, পাতলা আবরণ উঠতে থাকে। কাষ্ঠসার রক্তাভপীত এবং সুগন্ধযুক্ত। পাতা ৩-৫ ইঞ্চি লম্বা, ১-১২ ইঞ্চি চওড়া, লম্বাটে অনেকটা বশার মতো। পাতার দু’ধারের কিনারা করাতের মত সমভাবে কাটা কাটা। নভেম্বর মাস থেকে ফুল আরম্ভ হয় এবং সে সময় গাছ পত্রবিহীন হয়ে যায়। ফুল ফিকে গোলাপী রঙের। ফল ছোট ছোট গোলাকার এবং অণ্ডাকৃতি, রং হলদে গোলাপী। এই ফল লোকে খায় এবং এর থেকে একপ্রকার মদ তৈরী হয়।
পদ্মকাঠ-কে বাংলায় পদ্মকাঠ বা পদ্মকাষ্ঠ বলা হয়। সংস্কৃত নাম পদ্মক। হিন্দী ভাষাভাষী অঞ্চলে এর নাম পদ্মাখ, পদুম কাঠ। বোটানিক্যাল নাম Prunus cerasoides D. Don., পূর্বে এটির নাম ছিল Prunus puddum Roxb. ex wall.; ফ্যামিলী Rosaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ: কাঠ। মাত্রা-কাষ্ঠচুর্ণ ৫০০ মিলি গ্রাম থেকে ২ গ্রাম পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: পদ্মকাঠ গাছ-এর সাতটি ভেষজ প্রয়োগ
হিমালয়ের উষ্ণ-প্রধান অঞ্চলে, বিশেষ করে গাড়োয়াল থেকে সিকিম ও ভুটান এবং সিমলার অঞ্চল বিশেষে, হিমালয়স্থ কেদার পর্বতের উপর ৩ থেকে ৬ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত অঞ্চল সমূহে পদ্মকাঠ বা পদ্মকের গাছ জন্মে। কেদার পর্বতের উপর এটি জন্মে বলেই মনে হয় এর আর এক নাম কেদারজ। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে যেমন প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে আম গাছ হয় তেমনটাই দেখা যায় প্রায় সব পাহাড়ীয়া চাষীর বাড়িতে এই গাছ লাগালো থাকে। আমাদের এই নিম্ন ভারত ভূমিতে পূজা-পার্বণে যেমন আম্রপল্লবের ব্যবহার হয়ে থাকে, ওদের ওখানেও তেমনি পদ্মকপল্লবের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৯, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ ১৪০৫, পৃষ্ঠা, ১৩১-১৩২।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Manop
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।