পান্থপাদপ সারা দুনিয়ার সৌন্দর্য বর্ধনকারী আলংকারিক সপুষ্পক উদ্ভিদ

আলংকারিক উদ্ভিদের প্রজাতি

পান্থপাদপ

বৈজ্ঞানিক নাম: Ravenala madagascariensis J.E. Gmel., Syst. 567 (1791). সমনাম: Urania madagascariensis Raeusch. (1797), Urania ravenalia Rich. (1831) Urania speciosa Wall. (1831-1832). ইংরেজি নাম: traveller’s tree বা traveller’s palm. স্থানীয় নাম: পান্থপাদপ।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plants অবিন্যাসিত: Angiosperms শ্রেণী: Monocots উপশ্রেণি: Commelinids বর্গ: Zingiberales পরিবার: Strelitziaceae গণ: Ravenala প্রজাতি: Ravenala madagascariensis

বিবরণ: পান্থপাদপ (বৈজ্ঞানিক নাম: Ravenala madagascariensis) হচ্ছে স্ট্রেলিটজিয়াসি পরিবারে রাভেনালা গণের সপুষ্পক উদ্ভিদের একমাত্র প্রজাতি। এটিকে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ায় আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে বা গৃহে চাষাবাদ করা হয় যা বাগানের শোভাবর্ধন করে।  এটি আকারে পাম গাছের ন্যায়।

বিবরণ: পান্থপাদপ ছোট খাড়া বৃক্ষ, ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু, দেহকান্ড পামের ন্যায়, পত্রের গোড়ার চিহ্নসহ শক্ত। পত্র দ্বিসারি, খাটো এবং প্রশস্ত গোড়া সীথযুক্ত যা সাধারণত পানি ধারণ করে, পত্রবৃন্ত লম্বা, এমনকি পত্রফলক থেকে অপেক্ষাকৃত লম্বা, পত্রফলক কলার পত্রের ন্যায়, মধ্যশিরা সুস্পষ্ট, গৌণ শিরা সমান্তরাল।

এদের পুষ্পমঞ্জরী অক্ষীয় স্পাইক। পুষ্প উভলিঙ্গ, গর্ভশীর্ষপুষ্পী, নৌকা আকৃতির ভৌম পুষ্পদন্ডে বিন্যস্ত। ৬টি পুষ্পপুটাংশসহ পুষ্পপুট ২টি চক্রে বিন্যস্ত, কদাচিৎ বৃত্যংশ এবং পাপড়িতে পৃথক করা যায়। বৃত্যংশ (বাইরের চক্রের সদস্য) ৩টি, চিকন, সমান, ২০ সেমি পর্যন্ত লম্বা। পাপড়ি (ভিতরের চক্রের সদস্য) ৩টি, পার্শ্বীয়টি বৃত্যংশের ন্যায়, মধ্যটি অপেক্ষাকৃত খাটো। পুংকেশর ৬টি, ১০-১২ সেমি লম্বা। গর্ভপত্র ৩টি, সংযুক্ত, অধোগর্ভ, গর্ভাশয় ৩-কোষবিশিষ্ট, প্রতি কোষে ডিম্বক অসংখ্য। ফল ৩-কোষবিশিষ্ট ক্যাপসিউল, কাষ্ঠল, ৩ কোণাকৃতির, ৩টি কপাটিকা দ্বারা উন্মুক্ত। বীজ অসংখ্য, শক্ত, উজ্জ্বল নীল তন্তু দ্বারা আবৃত থাকে। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে জুন থেকে অক্টোবর মাসে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Kumar and Subramaniam, 1986).

পান্থপাদপ চাষ পদ্ধতি

পান্থপাদপ উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ায় উর্বর মাটিতে ভাল জন্মে বাগানের জমির পরিমাণ বেশি হলে দৃষ্টিনন্দন এই গাছটি লাগানো হয়।  বংশ বিস্তার হয় ঊর্ধ্ব ধাবক চারা ও বীজ দ্বারা।

আরো পড়ুন:  স্বর্গপাখি বা স্ট্রেলিটজিয়াসি সপুষ্পক উদ্ভিদের একটি পরিবারের নাম

বিস্তৃতি: মালাগাসি রিপাবলিক (পূর্বের মাদাগাস্কার) এর স্থানীয় প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রজাতিটি আবাদ করা হয়। অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: বাগানে লনের চারদিক, রাস্তার কিনারা এবং বাড়ীর প্রবেশ পথে সৌন্দর্য বর্ধক উদ্ভিদ হিসেবে আবাদ করা হয়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: পথিক পানি পান করে যা ইহার প্রশস্ত সীথযুক্ত পাতার গোড়ায় পানি সঞ্চয় করে রাখে।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পান্থপাদপ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র সংকেটর কারণ নেই এবং এটি বাংলাদেশের বর্তমান মান অবস্থায় আশংকা মুক্ত (lc)। এটি বাংলাদেশে সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি এবং শীঘ্র সংরক্ষণের পদক্ষেপ নিষ্প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান এবং নাহিদ সুলতানা, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১২ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৩২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!