ভূমিকা: বিলাতি আমড়া এনাকার্ডিয়াসি পরিবারের স্পনডিয়াস গণের একটি ফলদ বৃক্ষ। এটি বাংলাদেশে জনপ্রিয় ফলদায়ী গাছ। বাংলাদেশের প্রায় সব স্থানে এটি পাওয়া যায়, অনেকে বেড়ার ধারে এটাকে লাগিয়ে রাখেন। বিলিতী আমড়া আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। তবে দেশি আমড়ার থেকে বিলেতি আমড়া মিষ্টি। আর এটি বহিরাগত, আমাদের দেশে বাগানে লাগানো হচ্ছে সত্যি, কিন্তু এটির মাতৃভূমি ফিজি আইল্যান্ড, তাই আমরা তাকে বলি ‘বিলিতী’, যেহেতু এটা বহিরাগত, তাই।[১]
বিবরণ: বিলাতি আমড়ার বৃক্ষগুলি ২০-৩০ ফুট উঁচু হয়, প্রতিটি যৌগিক পাতায় ৮-৯ জোড়া পত্রক থাকে পত্রদন্ড ৮-১২ ইঞ্চি লম্বা এবং পত্রকগুলো ২-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। অগ্রহায়ণের শেষ থেকেই পাতা ঝরতে শুরু করে, তারপর মাঘ ও ফাল্গুনে গাছে মুকুল হয়, তারপর ফল; কচি অবস্থায় ফলের বীজ নরম থাকে, পরে পুষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আঁটি শক্ত হয়ে যায়। কাচা ফল টক বা টক মিষ্টি হয়, তবে পাকলে টকভাব কমে আসে এবং মিষ্টি হয়ে যায়। ফলের বীজ কাঁটাযুক্ত। ৫-৭ বছরেই গাছ ফল দেয়। এই ফল কাচা ও পাকা রান্না করে বা আচার বানিয়ে খাওয়া যায়। ফল, আগস্ট মাসে বাজারে আসে আর থাকে অক্টোবর পর্যন্ত।
বিস্তৃতি: আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা এবং ইন্দোনেশিয়া, বাহামা, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে জন্মে।
চাষ পদ্ধতি: বিলাতি আমড়া গাছের ডালপালা নরম ও দ্রুত বর্ধনশীল। শীতকালে আমড়া গাছের পাতা ঘরে যায়। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে ফুল ফোটে। ফল থোকা হয়ে ধরে ও বোঁটা লম্বা হয়। দেশি আমড়ার পাকা ফল মাটিতে পড়লে সেই ফল থেকে নতুন চারা হয়। একটি বীজ থেকে কয়েকটি চারা জন্মে। [২]
ব্যবহৃত অংশ: আমড়া গাছের ছাল, পাকা ফল ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। বিলাতি আমড়া ছাড়াও দেশি আমড়ার গাছের রয়েছে ভেষজ গুণ। দেশি আমড়া গাছের ভেষজ গুণাগুণ জানতে আরো পড়ুন
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১২২।
২. মৃত্যুঞ্জয় রায়; বাংলার বিচিত্র ফল, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৭, পৃষ্ঠা, ৮৬।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Filo gèn’
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।