দইগোটা বা লটকন গাছের উপকারিতা

চিরসবুজ ঝোপঝাড়যুক্ত ক্ষুপ জাতীয় বৃক্ষ। এটি অযত্নে বেড়ে ওঠে তেমনটা নয়। বাংলা, পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের অন্যান্য প্রদেশে বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য যত্নসহকারে লাগানো হয়ে থাকে। এছাড়া দক্ষিণ ভারতের মহীশূর ও অন্যত্র রঙের জন্য ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চাষ করা হয়।

রং হিসাবে ব্যবহার

সিন্দুরী বীজ কুটে গরম জলে ভালভাবে চটকে কাঠের পাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে কয়েকদিন। তারপর সেটিকে ভালভাবে ঘেঁকে আরও ৫ থেকে ৭ দিন রেখে দিলে পাত্রের তলায় রঙ থিতিয়ে যায়। তখন উপরের জলটা আস্তে আস্তে ফেলে দিয়ে রঙ সংগ্রহ করে শুকিয়ে নিতে হয়। এই রঙের দ্বারা সূতা বা রেশম বস্ত্র রাঙানো হতো, কিন্তু রঙটি স্থায়ী নয়। তবে যেহেতু এটি বিষাক্ত নয়, সেহেতু এই রঙটি আমাদের আহার্য তেল, ঘি, মাখন প্রভৃতিকে রঙ করানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

দইগোটা বা লটকন ব্যবহার্য অংশ ও গুণাগুণ

এটি সংস্কৃতে সিন্দুরী, সিন্দুরীবীজ, সিন্দুরীপূষ্প; বাংলায় ও হিন্দীতে লটকন, লটখন প্রভৃতি নামে পরিচিত। এর বোটানিক্যাল নাম Bixa orellana Linn., ফ্যামিলী Bixaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ- সমগ্র গাছ, মূল, ফল ও বীজ।

ফল: সংকোচক ও অল্প বিরেচক, প্রবাহিকা ও বৃক্কপীড়ার জন্য উপকারী। এছাড়া ফলের ভেতরের শাঁস, যা বীজের গায়ে জড়িয়ে থাকে এবং রঙ তৈরীর কাজে লাগে। বীজ উত্তেজক, ভেদক ও সংকোচক।

বীজ: হৃদ্য, সংকোচক, উত্তেজক, রুচিকারক, জ্বরনাশক ও প্রমেহনাশক।

পাতা: কামলা বা জন্ডিস রোগে হিতকর। মৃদু বিরেচক ও শোধক।

শিকড় বা শিকড়ের ছাল: উত্তেজক, জ্বরনাশক, অবিরাম, সবিরাম ও কাঁপুনি দিয়ে আসা জ্বর সারায়।

মগ্র গাছ: সংকোচক, অধিক মাত্রায় অল্প বিরেচক। রক্তাতিসার ও বৃক্কপীড়ায় ব্যবহার্য। এটি স্নিগ্ধ, রক্তদোষ, বমি ও তৃষ্ণা বন্ধ করে।

CHEMICAL COMPOSITION

Bixa orellana Linn. Seed contains:- colouring principles (bixin, bixol and orellin); fatty oil; waxy material 3%; fat; resin and a bitter stuff.

আরো পড়ুন:  অ্যাঞ্জেলিকা গণের নানা প্রজাতির বিবরণ ও গুণাগুণ

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১০, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, চতুর্থ মুদ্রণ ১৪০৭, পৃষ্ঠা, ১২৬-১২৭।

আলোকচিত্রের ইতিহাস: দইগোটার ফল পাতা ও ফুলের ছবিটি তুলেছেন Joan Simon বার্সেলোনা থেকে ৯ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে।

1 thought on “দইগোটা বা লটকন গাছের উপকারিতা”

Leave a Comment

error: Content is protected !!