কুম্ভি গাছ (Careya arborea ) বাংলাদেশ, ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোতে এটি ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ভেষজ গুণ ছাড়াও এটি অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। কাঠও নান কাজে ব্যবহৃত হয়। সর্দি, কাশি ছাড়াও বাহ্যিক রোগ সারাতে এটি ব্যবহৃত হয়।
কুম্ভি গাছ-এর ভেষজ গুণাগুণ
১. শ্বেত প্রদরে: যদি এটা দীর্ঘ দিনের হয়ে যায় এবং টুকটাক চিকিৎসা চলছে, কিন্তু ফল বিশেষ কিছু হচ্ছে না, কয়েক দিনের জন্য কমে যায়, ফের বাড়ে, অথচ অন্য কোন রোগও নেই; সেক্ষেত্রে বাকুম্ভা বা কুম্ভি ফুল বা গাছের ছাল চূর্ণ করে ১ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২ বার করে ৫ থেকে ৬ ফোঁটা ঘি ও ১০/১২ ফোঁটা মধুসহ মিশিয়ে খেতে হবে। মাস দুই নিয়মিত খেতে হবে।
এরফলে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেলে ১ মাত্রা করে আরও কিছুদিন ব্যবহার করা প্রয়োজন। তবে চিকিৎসার যদি ধারাবাহিকতা না থাকে, তবে চিকিৎসার সুফল পাওয়াটাও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অত্যধিক তেল-ঘি-মসল্লাযুক্ত ও উষ্ণ খাদ্য না খাওয়াই ভাল। সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটাও অনুকূল।
২. প্রসবান্তিক দুর্বলতায়: প্রসবের পর দুর্বলতা থাকে, সে দুর্বলতাকে তাড়াতাড়ি সরাতে চাইলে কুম্ভির ফুল বা বাকুম্ভা ৫/৬ গ্রাম নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে ৩ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে হেঁকে সেটাকে দু’বারে অর্থাৎ সকালে অর্ধেকটা ও সন্ধ্যায় অর্ধেকটা খেতে হবে। ঐ সঙ্গে প্রত্যেকবারেই প্রয়োজন মত চিনি মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। মাসখানিক খেলে দুর্বলতা তো চলে যাবে, সেইসঙ্গে পেটের গোলমালও আসবে না। তবে এ সময় লঘু ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ বিধেয়।
৩. দূষিত ক্ষতে: পাতা বেটে প্রলেপ দিতে হবে দিনে ২/৩ বার করে ৫/৭ দিন। ছাল সিদ্ধ জল দিয়ে ঘা ধুয়ে দিলে আরও ভাল হয়। ক্ষত ধীরে ধীরে পূরণ হয় এবং সেরে ওঠে।
৪. কাসিতে: বাকুম্ভা বা কুম্ভি চূর্ণ ১ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২ বার মধুসহ খেলে কাসি কমে যায়। এইসঙ্গে ছালের ক্বাথ দিয়ে যদি কুল্লি করা যায়, তাহলে আরও সত্বর কাজ হবে।
৫. বিষাক্ত কীট: পতঙ্গের দংশনে বিছা প্রভৃতির হুলের জ্বালায় এবং অন্যান্য কীটাদির দংশনে কুম্ভীর ছাল বেটে প্রলেপ দিলে সত্বর যন্ত্রণা কমে যায়।
CHEMICAL COMPOSITION
Careya árborea Roxb. Leaves contain:- tannin 19% and sapogenins. Fruits contain:- astringent gum
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র:
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১০, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, চতুর্থ মুদ্রণ ১৪০৭, পৃষ্ঠা, ২৮৭-২৮৯।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Aarti Khale
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।