বাজারে প্রাপ্ত মোটা আকারের সুগন্ধযুক্ত গোলাকৃতি বা নলিকাকৃতি নালুকা বা তেজপাতা (প্রজাতি) ঔষধার্থে ব্যবহার করতে পারলে উপকার অধিক হয়। যদিও এটাকে মসলা হিসাবে খাওয়া যায়।
নলিকা-এর ভেষজ ব্যবহার
১. আগন্তুক শোথ: হঠাৎ সামান্য ধাক্কা লেগে ফুলে গেছে, যন্ত্রণা হচ্ছে, এক্ষেত্রে নালুকা জলে বেঁটে সামান্য গরম করে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় ফোলার উপর লাগিয়ে দিন। ঘণ্টা দুই রাখার পর ওটা ফেলে দিয়ে আর একবার দিন। এভাবে ২। ৩ বার করলে হঠাৎ হওয়া ফোলা বা শোথ এবং সেইসঙ্গে যন্ত্রণা কমে যাবে।
২. ব্রণে: একেবারে কাঁচা অবস্থায় শুধু নালুকা বেটে উপরিউক্ত পদ্ধতিতে বসিয়ে দিলে প্রায় ক্ষেত্রে ফোড়া বসে যায়। সবচেয়ে ভাল হয়, যদি অনন্তমূল ১ ভাগ, যষ্টিমধু (Glycyrrhiza glabra) ১ ভাগ ও নালুকা ২ ভাগ একত্রে মিশিয়ে জলে বেটে প্রলেপ দেওয়া যায়। ফোড়া না বসে যদি পাকবে বলে মনে হয়, তাহলেও এই যোগটির প্রলেপ দিয়ে যেতে হয়। এর দ্বারা ফোড়া পাকবে, ফাটবে ও শুকিয়ে যাবে। উপরিউক্ত তিনটি দ্রব্যকে মিহি গুঁড়ো করে একসাথে একটা শিশিতে রেখে দিলে কাজের সুবিধে হয়। যখন প্রয়োজন হবে, তখন তা জলে গুলে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. স্তন-বিদ্রধিতে বা ঠুনকো: প্রথমাবস্থায় উপরিউক্ত যোগটির ব্যবহার যন্ত্রণা ও ফোলার উপশম করে। প্রলেপের পূর্বে কিছুটা দুধ ব্রেস্ট-পাম্প দিয়ে বের করে ফেলা উচিত। ২। ৩ দিনেই স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।
৪. বোলতা ও বিছের হুলের জ্বালায়: এর হাত থেকে রেহাই পাবার বহু যোগ ও ঔষধ প্রভৃতি থাকলেও প্রয়োজনের সময় সর্বদা মনে পড়ে না। নালুকা বাড়িতে রেখে দিলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সামান্য একটু নালুকা জলে বেটে প্রলেপ দিয়ে দিলে জ্বালা, যন্ত্রণা, ফোলা সবই কমে যাবে। প্রথমবারের প্রলেপ ঘণ্টাখানিক রাখার পর ফেলে দিয়ে পুনরায় দিয়ে রেখে দিতে হবে এবং তা আপনা থেকেই শুকনো হয়ে পড়বে।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র:
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ১৯৬-১৯৭।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। এই প্রজাতির নাম রাম তেজপাতা। আলোকচিত্রীর নাম: Yercaud-elango
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।