জয়ত্রী বা জয়িত্রি বা জৈত্রী বা জায়ফল (বৈজ্ঞানিক নাম: Myristica fragrans) রং ফর্সা করে। জায়ফলের পাপড়ি বা আবরণটি জৈত্রী নামে পরিচিত। পায়েস, মিষ্টি ইত্যাদি খাবার সুগন্ধযুক্ত করতে জৈত্রী ব্যবহার করা হয়। গরম মশলার মধ্যে এবং মাংস, কালিয়া, বিরিয়ানি, পোলাও ইত্যাদি বিলাসবহুল রান্নাতেও ব্যবহার করা হয়।
টোম্যাটো সসেও টোম্যাটোর ঈষৎ বুনো বুনো গন্ধকে দাবিয়ে দেওয়ার এবং সস সুগন্ধিযুক্ত করবার জন্যে ভাল কোয়ালিটির টোম্যাটো সসে জৈত্রী ব্যবহার করা হয়। ওষুধ হিসেবেও জৈত্রীর ব্যবহার আছে। আয়ুর্বেদ মতে জৈত্রী কটু, তিক্ত, মধুর রস, লঘু, উষ্ণ, রুচি বৃদ্ধি করে, রং ফরসা করে (বর্ণপ্রসাদষ্ণ) মুখশুদ্ধি হিসেবেও পানের মশলায় (তাম্বুলে) ব্যবহার করা হয়। কফ, কাশি, বমি, শ্বাস, কৃমি, পিপাসা রোগে এবং বিষদোষে সুফল দেয়। দুর্গন্ধ নাশ করে মাত্র এক থেকে দুই গ্রামেই।
হাকিমি মতে, জৈত্রী মন প্রফুল্ল করে, পাকস্থলী সাফ করে, খাবার হজম করায়, বায়ু নাশ করে, মুখ সুগন্ধিত করে। পাকস্থলীর বদ রস বিনষ্ট করে, জরায়ুর ক্লেদও নাশ করে। পাকস্থলীতে দূষিত কিছু জমতে দেয় না জরায়ুকে বলিষ্ঠ করে।
সুস্থ থাকতে জৈত্রীর প্রয়োগ:
১. মাথা ব্যথা সারায়: কপালে ঘষলে আধকপালে মাথা ব্যথা ও মৃগী রোগে উপকার পাওয়া যায়।
২. জরায়ুর সমস্যা সারাতে: জাফরানের সঙ্গে ব্যবহার করলে জরায়ুর শোধন হয়।
৩. পাথরি সারাতে: মূত্রাশয়ের পাথরি বেরিয়ে যায় বা ভেঙে গলে যায়।
৪. গর্ভধারণ করার: ঋতুর (মাসিকের) পরে জৈত্রী বেটে জরায়ুর মধ্যে স্থাপন করলে (রাখলে) মেয়েদের গর্ভধারণ করার ক্ষমতা হয়।
৫. বহুমুত্রে উপশম করতে: শরীরের শৈত্যের জন্যে যে বহুমূত্র জৈত্রী ব্যবহারে তার প্রশমন করে।
৬. পেটের অসুখে: মুখ দিয়ে রক্ত ওঠা, আন্ত্রিক ক্ষত (গ্যাস্টিক আলসার), পুরোনো পেটের অসুখ প্রভৃতি রোগের উপশম হয়।
৭. ডায়বেটিসে উপশম: ডায়বেটিসে নাভি ও তলপেটের নীচের দিকে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
৮. ব্যথা কমাতে: মধুর সঙ্গে বেটে প্রলেপ দিলে পিঠের ব্যথা সেরে যায়। প্রসবের পরের ব্যথা কমে যায়।
হাকিমি মতে, জয়ত্রী বেশি খেলে লিভারের ক্ষতি হয় এবং মাথার যন্ত্রণাও প্রায়ই হতে থাকে।
তথ্যসূত্রঃ
১. সাধনা মুখোপাধ্যায়: সুস্থ থাকতে খাওয়া দাওয়ায় শাকসবজি মশলাপাতি, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, নতুন সংস্করণ ২০০৯-২০১০, ২৫৩-২৫৪।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।