পুঁইশাক পৃথিবীর বাণিজ্যিক সুস্বাদু ঔষধি শাক

শাক

পুঁইশাক

বৈজ্ঞানিক নাম: Basella rubra L. সমনাম: Basella alba L. (1753). ইংরেজি নাম: Sri Lankan Spinach, Indian Spinach. স্থানীয় নাম: পুঁই, পুঁইশাক, পুটিকা। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Asterids  বর্গ: Caryophyllales  পরিবার: Basellaceae   গণ: Basella  প্রজাতি: Basella rubra.

বর্ণনা: পুঁইশাক বাসেলাসি পরিবারের বাসেলা গণের বহু শাখা প্রশাখা যুক্ত, সরস লতা। কান্ড সবুজ বা রঙ্গিন, ডান দিকে পাকানো। পত্র সরল, সরস, সবৃন্তক, একান্তর, উপপত্রবিহীন, বৃন্ত ৩ সেমি পর্যন্ত লম্বা, ফলক ১০ থেকে ১২ সেমি লম্বা, তাম্বুলাকার বা ডিম্বাকার, অখন্ড । পুষ্পবিন্যাস রেসিম বা স্পাইক, মঞ্জরীদন্ড লম্বা। পুষ্প ৬ x ৭ মিমি, অবৃন্তক, সমাঙ্গ, উভলিঙ্গ, সাদা, লাল বা সবুজাভ, প্রায়শ বেগুনি বর্ণযুক্ত, বদ্ধ, মঞ্জরীপত্র ১ টি, ক্ষুদ্র, সাধারণত ক্ষণস্থায়ী, মঞ্জরীপত্রিকা ২ টি, ক্ষুদ্র। পুষ্পপুট ২ সারিবদ্ধ, বাইরের ২ খন্ড ৬ মিমি লম্বা, স্থূলাগ্র, মধ্যবর্তী অবস্থান ও শীর্ষ অনমনীয়, ভিতরের ৫ খন্ড স্থায়ী, প্রান্ত-আচ্ছাদী, খন্ড স্থূলাগ্র, ৫ মিমি লম্বা, অনমনীয়, বাইরের খন্ডের সাথে যুক্ত হয়ে পেয়ালা আকৃতি গঠন করে।

পুংকেশর ৫ টি, ভিতরের খন্ডের প্রতিমুখ, পুংদন্ড ঋজু, নিম্নাংশ প্রশস্ত, পুষ্পপুট খন্ড লগ্ন, পরাগধানী দীর্ঘায়ত বা সামান্য তীরাকার, সর্বমুখ, ২প্রকোষ্ঠী, ছিদ্রবৎ চিড় বা অনুদৈর্ঘ্য ফাটল দ্বারা বিদারী, পরাগরেনু ঘনক্ষেত্রাকার। গর্ভপত্র ৩ টি, যুক্ত, গর্ভাশয় অধিগর্ভ, ১-প্রকোষ্ঠী, ডিম্বক ১ টি, মূলীয়, গর্ভদন্ড ১ টি, গর্ভমুন্ড ৩ টি, মুগুরাকৃতি, পিড়কাযুক্ত, ১.৫ মিমি লম্বা। ফল ৬ x ৭ মিমি, বেরি সদৃশ, পরিপক্ক অবস্থায় কালো, ভিতরের রস লাল বা বেগুনি। বীজ ১ টি, ৫ মিমি লম্বা, ঋজু, মোটামুটি গোলাকার বা দীর্ঘায়ত, বহিস্তুক কঠিন আবরণযুক্ত, সস্য সর্পিলাকারে প্যাচানো ভ্রুণ দ্বারা আবদ্ধ।

ক্রোমোসোম সংখ্যা:  2n = ৪৪ (Fedorov, 1969).

আবাসস্থল: বাসগৃহ সংলগ্ন তরিতরকারির খেত যেখানে এর চাষাবাদ হয়। ফুল ও ফল ধারণ নভেম্বর-মার্চ মাসে। বীজ ও শাখা কলমের সাহায্যে বংশ বিস্তার।

আরো পড়ুন:  মিষ্টি কুমড়া-এর ভেষজ গুণাগুণের বিবরণ

বিস্তৃতি: ওল্ড ওয়ার্ল্ডের উষ্ণ অঞ্চল। বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: পাতার রস চামড়ার চুলকানি ও অন্যান্য জ্বালা যন্ত্রণা উপশম করে। সিদ্ধ পাতা ঘায়ে পুলটিস হিসাবে ব্যবহার করা হয়। উদ্ভিদ রস রেচক ও ভিটামিন সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবুজ সবজি। পুঁইশাকের ভেষজ গুনাগুণ সম্পর্কে জানতে পড়ুন

পুঁই শাকের ঔষধি গুনাগুণ

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: অনেক স্থানে এর পাতা দ্বারা চা এর মতো পানীয় তৈরি করে ব্যবহার করা হয়। (Jain, 1981)।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের সপ্তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০)  বর্তমানে প্রজাতিটির সংকটের উল্লেখ নেই। বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা আশংকা মুক্ত (lc)। বাংলাদেশে এটিকে সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি এবং বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ০৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৭-৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Judgefloro

Leave a Comment

error: Content is protected !!