বটভাসি বাংলাদেশে পার্বত্যঞ্চলের ভেষজ লতা

বটভাসি

বৈজ্ঞানিক নাম: Gouania tiliaefolia Lamk., Encyl. 3: 5 (1789). সমনাম: Gouania leptostachya DC. (1825). ইংরেজি নাম: Slender Spiked Gouania । স্থানীয় নাম: বটভাসি।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Rosales. পরিবার: Rhamnaceae. গণ: Gouania প্রজাতির নাম: Gouania tiliaefolia

ভূমিকা: বটভাসি (বৈজ্ঞানিক নাম: Gouania tiliaefolia) হচ্ছে রামনেসিয়া পরিবারের গাউনিয়া গণের এক প্রকারের লতানো গুল্ম। এই প্রজাতিটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে জন্মায়।

বটভাসি-এর বর্ণনা :

বটভাসি বৃহৎ শাখাহীন পার্শ্বীয় আকর্ষীযুক্ত লতানো গুল্ম। পাতা সরল, একান্তর, বৃন্তক, ডিম্বাকার, ৫-১০ × ৩-৬ সেমি, অর্ধচর্মবৎ, দন্তক ভোঁতা ও গোলাকার, দীর্ঘাগ্র, গোড়া অর্ধ- হৃৎপিন্ডাকার, পার্শ্ব শিরা ধনুকাকার, উপপত্র আয়তাকার, পর্ণমোচী। পুষ্প কাক্ষিক বা শীর্ষ রেসিম, মিশ্রবাসী। বৃতি ৫ বৃত্যংশক, খন্ড ত্রিকোণাকার, নিম্নভাগ যুক্ত, স্থায়ী। দলমন্ডল ৫ পাপড়ি বিশিষ্ট, ৫ কোণাকার বা তারকাকার চাকতির প্রান্তের নিম্নভাগে সন্নিবেশিত, মস্তকাবরণাকার।

পুংকেশর ৫টি, প্রতিমুখ পাপড়িতে সীমাবদ্ধ, পরাগধানী অনুদৈর্ঘ্য বিদারী। গর্ভাশয় অধোগর্ভ, চাকতিতে নিমজ্জিত, ৩-কোষী এবং ৩-কোণাকার। ফল সাইজোকার্প, মসৃণ, ৩- কোণাকার, অক্ষ থেকে ৩-অবিদারী ফলাংশে পৃথককৃত। বীজ বি-ডিম্বাকার। ক্রোমোসোম সংখ্যা: জানা নেই।

আবাসস্থল ও বংশবিস্তার:

ঝোপ জঙ্গল এবং আর্দ্র পত্রঝরা ও চিরহরিৎ বনাঞ্চলের ধার। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই-ডিসেম্বর মাস। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

বিস্তৃতি :

উষ্ণ হিমালয়, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন। বাংলাদেশের ঢাকা, হবিগঞ্জ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে।

উপকারিতা :

উদ্ভিদটি একটি অ্যালকালয়েড বহন করে যা ক্ষতে ব্যবহৃত হয়। কচিপাতা সব্জি হিসেবে খাওয়া হয় (Sengupta and Safui, 1997). জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার : বাকল এবং মূল চুল ধৌতকরণে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বটভাসি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত নয়। বাংলাদেশে বটভাসি সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি ইন-সিটু ও এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণের প্রয়োজন।

আরো পড়ুন:  কাকমারি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ গুল্ম

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১০ম, পৃষ্ঠা ০৭-০৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

[বি.দ্র: প্রবন্ধে ব্যবহৃত ছবিটি flowersofindia.net সাইট থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রী: Amit Kumar

Leave a Comment

error: Content is protected !!