ভূমিকা: তরুলতা বা কুঞ্জলতা, গেইটফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Ipomoea quamoclit, ইংরেজি নাম: Cypress Vine, Cardinal Vine, Star Glory) হচ্ছে কুয়ামোক্লিট পরিবারে Ipomoea গণের সপুষ্পক লতা। এই লতা ক্রান্তীয় আমেরিকান প্রজাতি; দেখতে হালকা ও ঝোপালো। অন্য গাছ, বেড়া বা মাচাকে আশ্রয় করে উপরে উঠে। বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়ে থাকে। অনেকে এটিকে বাড়ির দরজার সামনে লাগিয়ে থাকে।[১]
বর্ণনা: কুঞ্জলতা বর্ষজীবী রোমশ বিহীন বল্লী। পাতার মধ্যশিরা পর্যন্ত পক্ষৎ অতিখন্ডিত, উভয় পার্শ্বের প্রতিটি খন্ড রৈখিক থেকে। সূত্রবৎ, প্রায়শ ছদ্ম উপপত্রযুক্ত। ফুল ১ থেকে একাধিক অক্ষীয় মঞ্জরীতে বিন্যস্ত, মঞ্জরীদন্ড পত্রাপেক্ষা দীর্ঘতর। বৃত্যংশ অর্ধসম, দীর্ঘায়ত, স্থূলা, বাহিরের বৃত্যংশ অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র। দলমন্ডল থালিকাকার, লাল, দলনালি ২.০-৩.৫ সেমি লম্বা, মূলীয় অংশ সরু। ক্যাপসিউল। অনুদৈর্ঘ্য বিদারী কপাটিকা যুক্ত। বীজ ক্ষুদ্র রোমশ। [২]
ক্রোমাসোম সংখ্যা: 2n = ৩০ (Fedorov, 1969)।
বংশ বিস্তার ও চাষাবাদ: কুঞ্জলতা কোনো আশ্রয়কে পেঁচিয়ে বাঁচে ও বৃদ্ধি পায়। থাম, তারের বেড়া বা বারান্দার গ্রীলে তুলে দিলে সুন্দর দেখায়। পাতা চিরুনির কাটার মতো দেখতে। নরম মাটিতে এই লতা বৃদ্ধি পায়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফুল ও ফল ধরে। শুকনো বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।[৩]
বিস্তৃতি: উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চল। বাংলাদেশের বাহারি এ উদ্ভিদরূপে বিভিন্ন উদ্যানে চাষ করা হয় ।
গুনাগুণ: দুষ্ট ব্রণ, অর্শ প্রভৃতি রোগে এই গাছের পাতাচূর্ণ ব্যবহার করা হয়। এটি রেচক এবং নস্যরূপেও ব্যবহৃত। সাপের কামড় উপসমে কার্যকর।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কুঞ্জলতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে কুঞ্জলতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই ।[২]
তথ্যসূত্র:
১. দ্বিজেন শর্মা ফুলগুলি যেন কথা প্রথম সংস্করণ ২০০৩ ঢাকা, বাংলা একাডেমি, পৃষ্ঠা ৭৫। আইএসবিএন 984-07-4412-7
২. ড. মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ ফুলের চাষ প্রথম সংস্করণ ২০০৩ ঢাকা, দিব্যপ্রকাশ, পৃষ্ঠা ১২৭। আইএসবিএন 984-483-108-3
২. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ০৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৮০ । আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Rameshng
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।
এই ফুলটি চাষ করতে চাই, দেখি কেমন লাগে।