পরিচিতি: বিছুটি বর্ষজীবী লতা। রাস্তার ধারে ও জঙ্গলের পাশে এদের দেখা যায়। ঘন শাখা বিশিষ্ট লতা। দেড় মিটারের মতো বড় হয়। পাতা ডিম্বাকৃতি হয়ে থাকে। অগ্রভাগ ক্রমশ সরু। উভয় দিকে পশমের ন্যায় সাদা লোম থাকে। পাতার কিনারা করাতের মতো দাঁত থাকে। পুষ্পদণ্ড খাড়া হয় ও অনেক ফুল হয় থাকে। প্রত্যেক গাইট থেকে ফুল বের হয়।[১]
বিছুটি পরাশ্রয়ী লতা। রোমযুক্ত লতাগাছটি ভারত ও বাংলাদেশের শীতোষ্ণপ্রধান অঞ্চলের প্রায় সবখানেই পতিত জমিতে দেখা যায়। এছাড়া হিমালয়ের পাদদেশেও হয়ে থাকে। সমাজের বহু লোকের সঙ্গে এই লতাগাছটির পরিচয় আছে। কারণ কারো সাথে বিছুটির সংস্পর্শ হলেই যে জ্বালা হয় তা ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ভোগ করতে হয় এবং সেখানটায় ফুলেও ওঠে; আর যদি ভিজা গায়ে সঙ্গে দেন বা জলবিছুটি হয় তা হলে আর কথাই নেই। এর প্রচলিত নাম বিছুটিই, এছাড়া হিন্দিভাষী অঞ্চলে একে বলে ‘বারহন্ত’, উড়িষ্যার অঞ্চলবিশেষে বলে বিছুয়াতি।
এই লতাগাছটি বিশেষ লম্বা হয় না, পাতার আকার গাঁদাল পাতার মতো হলেও তার কিনারায় করাতের মতো কাটা। লতা ও পাতার সন্ধিস্থল অর্থাৎ গোড়া থেকে ফুল ও পরে ৩টি কোষীযুক্ত রোমাবৃত ফল হয়, এই ত্রিকোষীযুন্ত ফল হওয়াটা যেমন এই ফ্যামিলির প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য, তেমনি ফল পাকলেই ফেটেও যায়। এই লতাগাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। [২]
বিস্তৃতি: বাংলাদেশ, ভারতসহ নাতিশীতোষ্ণ দেশে জন্মে থাকে।
চাষ পদ্ধতি: অযত্নে পতিত জমিতে এটি জন্মে থাকে। বীজ থেকে গাছ হয়।
ব্যবহার্য অংশ: ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় মূল ও ফল। এরা বর্ষজীবী হলেও অনেক দিন বেঁচে। পাতা ও লতা সীম গাছ সদৃশ্য। | ছোট ছোট লোম দ্বারা ঢাকা পাতা। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাশাস্ত্রে বিছুটি বীজ ও শিকড় বলকারক এবং শুঁটি ক্রিমি রোগে ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র:
১ শেখ সাদি; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ২৮৩।
২ আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ২৩৪।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।