শতমূলী বা শতবরী বাংলাদেশের বর্ষজীবী ঔষধি বীরুৎ

ঔষধি বীরুৎ

শতমূলী

বৈজ্ঞানিক নাম: Asparagus racemosus Willd. সমনাম: Asparagus rigidulus Nakai; Protasparagus racemosus (Willd.) Oberm. সাধারণ নাম: satavar, shatavari, or shatamull বাংলা নাম: শতমূলী, বা শতমূল বা শতবরী  
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Monocots বর্গ: Asparagales পরিবার: Asparagaceae গণ: Asparagus প্রজাতি: Asparagus racemosus Willd.

পরিচয়: শতমূলী বা শতবরী লিলিয়াসি পরিবারের অ্যাসপারাগাস গণের একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। লতাটির প্রকৃতি স্বাভাবিক ভাবেই লতানো। তবে বলা যায় এটি বৃক্ষাশ্রয়ী এবং শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে। পাতাগুলি দেখলে মনে হয় যেন সবুজ সুতোর ঝিলিমিলি মালা গাঁথা, এইজন্য বহু সৌখীন লোক বাড়ীর উদ্যানের শোভাবর্ধন করার জন্য এটি রোপণ করেন। আর যে কারণে এর নাম শতাবরী বা শতমূলী তা কিন্তু এর মূলের পরিচয়ে; কারণ এর শিকড়গুলি গুচ্ছবদ্ধ সরু মূলো (Raphanus Sativus) এবং গাজরের (Daucus carota) মতো। এর লতায় বাঁকা কাঁটা হয়।

ফুলের মঞ্জরী হয়, সেগুলি ১ থেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা; সে দন্ডটি সরুও হয়। শরতেই এর ফুল ও ফল হয়, পাকে মাঘ ফাল্গুনে। ফলে একটা সুগন্ধও থাকে। ছোট মটরের মতো সবুজ ফল, পাকলে লাল হয়, গাছ বহুদিন বাঁচে, সাধারণত বেলে বা দোআঁশ মাটিতে এর মূলগুলি খুব পুষ্ট হয়। এক একটি পুরনো গাছে ১০ থেকে ১২ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মুল পাওয়া যায়। এটির বোটানিকাল নাম Asparagus recemosus Willd., পরিবার Liliaceae.[১]

 শতমূলী লতার ভেষজ গুণ

ব্যবহৃত অংশ: শতমূলী ঔষধার্থে ব্যবহার হয় মূল ও পাতা। আয়ুর্বেদে শতাবরী ও মহাশতাবরী নামে দুটি প্রকারভেদের উল্লেখ রয়েছে, তবে অনেকের মতে এটির বৈজ্ঞানিক নাম Asparagus Sarmentosus Linn. যৌন উত্তেজনা বাড়ায়, পাকস্থলীর ও জিহ্বার ঘা, ফুসফুসের পানি রোগ সারাতে ভালো কাজ করে। স্বরভঙ্গে ও রাতকানা রোগ সারাতে শতমূলী বেশ উপকারি।

বিস্তৃতি: শতমূলী বা শতবরী মহাশতাবরীর জন্ম বেশির ভাগই দক্ষিণ ভারতে; এর লতাও বেশ বড় হয়, এমনকি বড় গাছের উচ্চতা যতখানি প্রায় ততদূর এর বৃদ্ধি। এর আদিনিবাস ভারত এবং বাংলাদেশ। [২]

আরো পড়ুন:  পাতাহীন ডেনড্রোবিয়াম বা ফাসিয়া মাছ অর্কিড জাতীয় প্রজাতি

চাষ পদ্ধতি: শতমূলী বা শতবরী লতা বীজের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে থাকে। উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে  এবং বালুযুক্ত মাটিতে এই গাছ ভালো হয়। শতমূলী দো-আঁশ ও বালু মাটিতেও খুব ভালো হয়। বীজ বপনের আগে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। বীজের অঙ্কুরোদগম হতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। অঙ্কুরিত চারার বয়স ২ থেকে ৩ মাস হলে তা বপন করতে হয়।[৩]

তথ্যসূত্রঃ

১ আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৪, পৃষ্ঠা, ১৬৬।

২  শেখ সাদী; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ৩৫০।

২ এ বি এম জাওয়ায়ের হোসেন, ওষুধি গাছগাছড়া, গ্রন্থনা, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফাল্গুন ১৪১১, পৃষ্ঠা, ৭১।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: RaffiKojian

Leave a Comment

error: Content is protected !!