আসাম লতা বা জাপান লতা-এর ভেষজ গুণাগুণ

ঔষধার্থে পাতা ও নরম ডগা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বাহ্য ব্যবহার ছাড়া আভ্যন্তরীণ ব্যবহার করা এখনও সম্ভব হয়নি । লতাটি যে এলার্জিকারক, তা পূর্বেই বলা হয়েছে, এজন্য বাহ্যিক ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন অবশ্যই প্রয়োজন । তবে একদিন সামান্য ব্যবহারে যদি এলার্জি না হয়, তাহলে পরবর্তী স্তরে এলার্জি হবার সম্ভাবনা থাকে না। আর কারও যদি তা হয়ে যায়, তখন এলাজি-নাশক ঔষধ খেতে হবে এবং এটার ব্যবহার বাদ দিতে হবে। প্রবন্ধে আসাম লতা-র কয়েকটি ব্যবহারিক নিয়ম উল্লেখ করা হলও।

আসাম লতা-এর ভেষজ ব্যবহার

১. কাটা ঘায়ে: কোনো না কোনো ভাবে সামান্য কেটে বা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তপাত হতে থাকলে তখন আসাম লতার পাতা হাতে ঢলে নিংড়ে রস বের করে লাগিয়ে দিলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে রক্তপড়া বন্ধ হয় এবং ব্যথা কমে । তবে রক্তপাতের মাত্রা অধিক হলে সেক্ষেত্রে কাজ না হওয়াটাই স্বাভাবিক ।

২. পচা ঘায়ে: ক্ষত খুব গভীর নয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যহ পুঁজ বের করে  আসাম লতার (Mikania micrantha) পাতার রস দিয়ে ক্ষত মুছে দিয়ে ঐ রস লাগিয়ে দিতে হবে। প্রত্যহ ক্ষত একবার করে ধুয়ে রসটি দু’বার লাগাতে পারলে কয়েকদিনের মধ্যে আরাম হয় । অবশ্য রসটি হালকা গরম করে নিতে পারলে আরো ভাল ।

৩. চুলকানিতে: ঘামাচির মতো ছোট ছোট চুলকানি, অবশ্য তা ঘামাচিও না, আবার এলার্জি-ঘটিতও না, সেক্ষেত্রে রাবণ লতার পাতার রস ভালভাবে গরম করার পর অল্প গরম থাকতে থাকতে চুলকানিতে লাগালে (প্রত্যহ একবার করে) ৪/৫ দিনের মধ্যে উপদ্রবটা চলে যায় । তবে প্রথম দিন সামান্য একটু জায়গায় লাগানো দরকার । কোন অসুবিধা না হলে পরের দিন পুরো জায়গায় লাগানো যাবে ।

৪. বাতের ব্যথা ও ফোলায়: পাতা বেটে হালকা গরম করে প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা দুই-ই কমে । অবশ্য রস বের করে হালকা গরম অবস্থায় লাগালেও চলতে পারে কিন্তু প্রলেপ হলে ভাল ।

আরো পড়ুন:  সটি বা ফইল্লা দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ২৯৬-২৯৭।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Ks.mini

Leave a Comment

error: Content is protected !!