বিমলচন্দ্র ঘোষ (১২ ডিসেম্বর, ১৯১০ – ২২ অক্টোবর, ১৯৮১) একজন বাঙালি বামপন্থী কবি ছিলেন। তিনি জন্মেছেন ১৯১০ সালে কলকাতায়। তাঁর পিতার নাম ছিল নগেন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি ছিল হাওড়ার বালি শহরে।
বিমলচন্দ্র ১৯১৬ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত চক্রবেড়িয়া ইন্সটিটিউশনে পড়াশুনা করেন। এরপরে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মপুকুর ইন্সটিটিউটশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তাঁকে কলেজ ছাড়তে হয়। পরে আশুতোষ কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও তিনি তা সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে কেরানির চাকরি গ্রহণ করেন। একাদিক্রমে ১৭ বছর চাকরি করার পর তিনি সেই কাজে ইস্তফা দেন।
তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই এবং যৌবনেও রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে স্বদেশী মন্ত্রে দীক্ষিত হন। পরবর্তীকালে তিনি মারাঠি শ্রমিক নেতা কার্ডিলে ও বামপন্থী রাজনীতিবিদ মুজফফর আহমেদের সংস্পর্শে এসে বামপন্থায় আকৃষ্ট হন।
বিমলচন্দ্র ঘোষের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো জীবন ও রাত্রি, দক্ষিণায়ন, উলুখড়, দ্বিপ্রহর ও অন্যান্য কবিতা, ফতোয়া, নানকিং, সাবিত্রী, বিশ্বশান্তি, ভুখা ভারত, উদাত্ত ভারত, রক্তগোলাপ প্রভৃতি। নানকিং কাব্যগ্রন্থ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
প্রধানত কবি হিসাবে যশস্বী এই শিল্পী বাংলা গান রচনায় এক নতুন পথসন্ধান করেছেন। সাম্যবাদে বিশ্বাসী তার কাব্যপ্রত্যয় বাংলা গানের বাণী ও বক্তব্যে এক নবজীবনের উদ্দীপনা এনেছে। মূলত চলচ্চিত্রের প্রয়োজনেই তিনি গান লিখেছেন। ‘শোনো বন্ধু শোনো প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা’ বাচনের নতুনত্বে আশ্চর্য জনপ্রিয়তা পায়। তাঁর আরেকটি জনপ্রিয় গান হচ্ছে ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস। তার লেখা একটি কবিতা ‘উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা’ সলিল চৌধুরীর সুরে খুব বিখ্যাত হয়েছে। বাংলা গানের এই স্বয়ম্বশ স্বভাব গীতকার ১৯৬৮ সালে সোভিয়েত দেশ পুরস্কার পেয়েছেন । ১৯৮১ সালের ২২ অক্টোবর বিমলচন্দ্র ঘোষের প্রয়াণ ঘটে।
তথ্যসূত্র:
১. সুধীর চক্রবর্তী সম্পাদিত আধুনিক বাংলা গান, প্যাপিরাস, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৯৪, পৃষ্ঠা, ১৭৭।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।