দ্বাদশ শতকের ইংল্যান্ডের একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ছিলেন স্যালিসবারির জন (ইংরেজি: John of Salisbury ; ১১১৯- অক্টোবর ১১৮০ খ্রি.)। ফরাসি দেশ প্যারিসে তিনি শিক্ষালাভ করেন এবং রোম ভ্রমণ করেন। ১১৫৯ সনে তিনি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার উপর যে গ্রন্থ রচনা করেন তার নাম দিয়েছিলেন ‘পলিক্রাটিকাস’। এই গ্রন্থে মধ্যযুগের আবহাওয়াতেও জন শাসকের গুণাবলীর উপর যেসব মন্তব্য করেন তার মধ্যে যুগের প্রেক্ষিতে যুক্তি এবং সাহসের বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়।
জন শাসক বা রাজাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলে মনে করলেও শাসককে যে বিধানকে মান্য করে প্রজাসাধারণের জন্য ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, তার উপর তিনি বিশেষ জোর দেন। তাঁর মতে যে রাজা ঈশ্বরের ন্যায়ের বিধান ভঙ্গ করে শাসন করবে, তাকে প্রজাসাধারণ স্বৈরশাসক বলে বিবেচনা করবে। এবং এমন স্বৈরশাসকের হাত হতে মুক্তিলাভের জন্য প্রজাদের অধিকার আছে স্বৈরাচারী রাজাকে হত্যা করার।
স্বৈরশাসক প্রসঙ্গে তিনি প্রাচীন রোমের স্বৈরাচারী শাসকদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তাদের শোচণীয় পরিণতির বিবরণ দেন। এই সময়ে ইংল্যান্ডের সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় হেনরী। সম্রাটের সঙ্গে তাঁর অর্থমন্ত্রী চ্যান্সেলার টমাস বেকেটের (১১১৮-১১৭০) বিরোধ তীব্র হয়ে ওঠে এবং টমাস বেকেটের উপর যখন রাজরোষ নেমে আসে তখন জন টমাস বেকেটকে সমর্থন করেছিলেন। টমাস বেকেট রাজার অনুচরদের দ্বারা ১১৭০ সনে নিহত হন।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২৪৬-২৪৭।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।