প্রাচীন কালের গ্রিক দার্শনিক পিরহো বা এলিসের পিরহোকে (ইংরেজি: Pyrrho of Elis) সন্দেহবাদের প্রতিষ্ঠাতা বলে মনে করা হয়। পিরহোর প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল নীতিশাস্ত্র এবং ব্যক্তির সুখ দুঃখের সমস্যা। তাঁর কাছে সুখ যেমন দুঃখশূন্যতা, তেমনি তা ব্যক্তির নিস্পৃহতার মধ্যেও নিহিত। জ্ঞানের প্রশ্নে পিরহো সন্দেহবাদী ছিলেন। তাঁর অভিমতে, আমরা বস্তু বা সত্তা সম্পর্কে কিছু যথার্থভাবে জানতে পারি নে। সে কারণে কোনো কিছু সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করতে পারি নে। জীবনের সকল সমস্যার ব্যাপারে নিস্পৃহ এবং নিরুদ্বিগ্ন থাকাই হচ্ছে মনের শান্তির আসল উপায়।[১]
পিরহো তাঁর দার্শনিক নীতিগুলি বিশদে কোনও লিখিত রচনা তৈরি করেন নি। পিরহোর নীতি সম্পর্কিত বেশিরভাগ তথ্য তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুসারী টিমন থেকে এসেছে, যার পিরহোর শিক্ষাগুলির সংক্ষিপ্তসার এরিস্টোকলস প্যাসেজে সংরক্ষিত আছে। যাইহোক, এই অনুচ্ছেদে উপস্থাপিত ধারণাগুলির বিরোধী ব্যাখ্যা রয়েছে, যার প্রতিটিতেই পিরহো কী বোঝাতে চেয়েছেন তা নিয়ে আলাদা সিদ্ধান্তে নিয়ে যায়।
পিরহোর বেশিরভাগ জীবনী সংক্রান্ত তথ্য, পাশাপাশি তাঁর আচরণ ও আচরণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝি ক্যারিস্টাসের জীবনী লেখক অ্যান্টিগনাসের কাজ থেকে এসেছে। ডায়োজিনেস লিয়ার্টিসের থেকে পাওয়া জীবনীমূলক উপাখ্যানগুলিও প্রায়শই উদ্ধৃত করা হয়; পিরহোর জীবনের বিষয়ে তাঁর কাজটি মূলত অ্যান্টিগনাসের কাহিনি থেকেই এসেছে।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; ৫ম মুদ্রণ জানুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা ৩২৫।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।