তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়  (২৩ জুলাই, ১৮৯৮- সেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৭১) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তার মোট রচিত সাহিত্যকর্মের মধ্যে ৬৫টি উপন্যাস, ৫৩টি গল্পগ্রন্থ, ১২টি নাটক, ৪টি প্রবন্ধের বই, ৪টি আত্মজীবনী এবং ২টি ভ্রমণ কাহিনী রয়েছে। ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের সাথে মিশে ছিলেন। জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতাকে প্রয়োগ করেছিলেন নিজের সাহিত্যকর্মে।[১]

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়-এর শৈশব:

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুলাই (১৩০৫ সালের ৮ শ্রাবণ, শুক্রবার) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিদ্যানুরাগী ও চারুশীল মানুষ ছিলেন। তার শখ ছিল দুর্লভ সব ফুল সংগ্রহ করে ফুলের বাগান করা। এছাড়াও বঙ্গবাসী, হিতবাদী’, ‘মাসিক হিন্দু প্রভৃতি পত্রিকার নিয়মিত গ্রাহকও ছিলেন। পারিবারিক গ্রন্থাগারে ছিল ধর্মগ্রন্থ, রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবত, কালিদাস, এমনকি আধুনিকযুগের বঙ্কিমসাহিত্য। আবার, তারাশঙ্করের মা প্রভাবতী দেবী আধুনিক মনন, পরিশীলিত রুচি আর সুকুমার জীবনচর্চায় আগ্রহী ছিলেন। তাদের এই মানসিকতার প্রত্যক্ষ প্রভাব তারাশঙ্করের চরিত্রে লক্ষণীয়।

তারাশঙ্করের জন্মস্থান বীরভূম। মুণ্ডারি ভাষায় বীর শব্দের অর্থ জঙ্গল। জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চল বলেই রাঢ়ের এই অঞ্চলের নাম হয়েছে বীরভূম। বীরভূমের বিভিন্ন আদিবাসী-রাজবংশী, হাড়ি, ডোম, বাগদি, কাহার, লোহার, চামার প্রভৃতি জাতির সঙ্গে তারাশঙ্কর শৈশবসূত্রে নিবিড়ভাবে পরিচিত ছিলেন। আপন অভিজ্ঞতার আলোকে তারাশঙ্কর এই বিচিত্র সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখেছেন নিষ্ঠাশীল ছাত্রের মতো। তাই পরবর্তীকালে এসব জনসম্প্রদায় তার সাহিত্যে উপস্থাপিত হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে।

আবার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মস্থান লাভপুর ছিল জমিদার-প্রধান গ্রাম। পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা বার্ষিক আয়ের এসব জমিদারের ছিল প্রবল পরাক্রম। তারা বলতেন ‘মাটি বাপের নয়, দাপের; দাপতো আয়ে নেই, দাপ আছে বুকে’ । তারাশঙ্করের জন্মক্ষণে এই জমিদারগোষ্ঠীর মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হন কয়লাখনি ব্যবসায়ী নব্যধনিক যাদবলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। সামন্ততান্ত্রিক আভিজাত্যের সঙ্গে ধনতান্ত্রিক রজতকৌলীণ্যের সংগ্রাম তাই তারাশঙ্করের শৈশবপ্রত্যক্ষ বাস্তব অনুষঙ্গ। পরবর্তীকালে জলসাঘর’, রায়বাড়ি’ ছোটগল্প রচনায় এই বাস্তব অভিজ্ঞতাকেই তিনি প্রয়োগ করেছেন।

শৈশবে দেবতার কাছে মানত হিসেবে তারাশঙ্করের মাথায় দীর্ঘ চুল ছিল। বন্ধুরা পরিহাস করে তাকে ডাকতো তারাশঙ্করী’। অসামান্য ব্যক্তিত্বের অধিকারিনী পিসিমা শৈলজার স্নেহ ও শাসনে তার ছেলেবেলা কেটেছে। তাঁরই ইচ্ছানুক্রমে তারাশঙ্করের গলায় ও হাতে অসংখ্য মাদুলি ঝোলানো হয়েছিল; এমনকি ঠান্ডা-সর্দির ভয়ে পরিয়ে রাখা হতো জোব্বা-জামা। এরপর হাঁচি, টিকটিকি, অশ্লেষা, মঘা প্রভৃতি কুসংস্কারের বাধানিষেধে স্বভাব-বিরোধী তারাশঙ্করকে রাখা হতো রীতিমতো অস্বস্তিতে।

শিক্ষাজীবন:

তারাশঙ্কর তাঁর পিতার মতোই ছিলেন বিদ্যানুরাগী। শৈশবে পাঁচ বছর বয়সে বৈদ্যনাথধামে তাঁর হাতেখড়ি হয়। এরপর মাত্র আট বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ গাঁট এবং তাঁর রাজনৈতিক অনুরাগের কারণে শিক্ষাজীবনে একাধিকবার ছন্দপতন ঘটেছে। লাভপুর যাদবলাল এইচ.ই. স্কুল থেকে ১৯১৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন তিনি। এর অন্যতম কারণ ছিল ভগ্নস্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক তৎপরতা। তবে একই স্কুল থেকে দ্বিতীয়বারের মতো প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে তিনি প্রথম বিভাগে কৃতকার্য হন।

প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্যের পর তিনি কলেজে পড়ার উদ্দেশ্যে প্রথমে বহরমপুরে যান; কিন্তু সেখানে স্থান না পেয়ে সরাসরি কলকাতা মহানগরে চলে আসেন। বঙ্গবাসী কিংবা রিপন কলেজে বা মেট্রোপলিটনে পড়ার ইচ্ছা ছিল তার, কিন্তু সুযোগ না পেয়ে অবশেষে ভর্তি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। কিন্তু মাতুলসূত্রে প্রাপ্ত বিপ্লবীদের প্রতি অনুরাগ ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে তাঁকে পুলিশ কর্তৃক আটক হতে হয়, ফলে পড়াশুনায় ছেদ ঘটে। কিছুদিন পর কলকাতায় ফিরে ভর্তি হন সাউথ-আরবান কলেজে। কিন্তু ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখেই ফিরে যান নিজগ্রাম লাভপুরে।

বৈবাহিক জীবন:

লাভপুরস্থ কয়লা খনির মালিক লক্ষপতি স্বর্গীয় যাদবলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাতনি উমাশশীর সঙ্গে তারাশঙ্করের বিবাহ সংঘটিত হয় বাংলা ১৩২২ সালের ১২ই মাঘ। তখন তারাশঙ্করের বয়স সাড়ে-সতেরো আর উমাশশীর বয়স এগারো। এই বিয়ে ছিল ‘পরিবর্ত বিবাহ’; যাকে রাঢ় অঞ্চলে বলে ‘জায়-বদলে’ বিয়ে। কেননা একই সঙ্গে তারাশঙ্করের বোন কমলা আর উমাশশীর ভ্রাতা লক্ষীনারায়ণেরও বিবাহ সংঘটিত হয়েছিল। তবে তারাশঙ্করের বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। তারাশঙ্কর এর কারণ হিসেবে ‘কৈশোর-স্মৃতি’তে তার পিসিমা ও পত্নীর দিদিমাকে দায়ী করেছেন। তার স্বীকারোক্তি উল্লেখ্য : ‘এই দুটি মহিলাই একদা উদ্যোগী হয়ে… এক খাঁচাতে দুটি পাখি পোষার শখের মতো শখে দুজনকে বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওদের বিয়ের পরেই শুরু হলো এই দুই নারীর অধিকার আর মর্যাদাবোধের ঝগড়া যা পরিণত হলো বিচিত্র যুদ্ধপর্বে।

বিবাহিত জীবনের রোমান্টিক স্বপ্নময় দিনগুলি বিরোধ-বিচ্ছেদের উত্তাপে বিবর্ণ হয়ে গেল ।…পিসিমা ছিলেন জীবনে সর্বহারা। এই সর্বহারা নারীর জীবনে আমিই ছিলাম একমাত্র অবলম্বন, তাই আমাকে হারাতে, আমাকে ছাড়তে, কাউকে আমার মতো বস্তুটিকে হাতে তুলে দিতে তার শক্তি ছিল না। তার চেয়ে মৃত্যু তার ভালো ছিল।’ এই পারিবারিক কলহের জেরে তারাশঙ্করের দাম্পত্যজীবন হয়ে উঠেছিল বিষময়। পরিণত বয়সে এর জের কিছুটা কমলেও প্রাথমিক ছন্দপতনের রেশ ছিল আজীবন; এমনকি তারাশঙ্করের লেখনিতে এই বিরোধের ছাপ স্পষ্ট।

লেখক তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে একাত্তর বছর বয়সে আকাশবাণীতে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন: ‘দেহের ওজনে হালকা, ছোট্ট কৃশাঙ্গী মেয়েটি মনের ওজনে অত্যন্ত ভারী, অত্যন্ত শক্ত। তার উপর তার পিতৃকুলের মনোবৃত্তি ও মনের গড়ন আমার মনের গড়ন ও মনোবৃত্তির সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়ার জন্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে তার পরিচয় আমার রচনাকে ব্যাপ্ত করে রেখেছে।’ তারাশঙ্কর-উমাশশীর দুই পুত্র : সনকুমার, সরিকুমার এবং তিনকন্যা : গঙ্গা, সন্ধ্যা, বাণী।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কর্মজীবন:

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সমগ্র কর্মজীবনে সাহিত্যসাধনাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন; যদিও কৈশোর থেকেই তিনি ছিলেন রাজনীতিসচেতন সক্রিয় কর্মী। তবে যৌবনে তিনি অসহায় মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন অত্যন্ত সহানুভূতি সঙ্গে। মহামারি, বন্যা, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রামের সমাজ সেবক সমিতির উদ্যোগে মুষ্ঠিভিক্ষা সংগ্রহ ও অগ্নিনির্বাপণের কাজে তারাশঙ্কর সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন ।

‘আমার সাহিত্য জীবনে’-এ তিনি লিখেছেন, দেশ সেবার বাতিক যখন নেশা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তাতে আর কৃত্রিমতা থাকে না। বাংলা সাহিত্যে বাউণ্ডেলে চরিত্র অনেক আছে। কাজ কর্ম নেই, ঘুরে বেড়ায়, গাঁজা খায়, মদ খায় বা খায় না, মূর্খ, ঘৃণা অবজ্ঞার পাত্র; কিন্তু সকল বিপদ আপদের ক্ষেত্রে সে আছেই। … আমার চরিত্র তখন অনেকটা ঐরকম। সমাজসেবা আর অসহায়ের সহায় হয়েই তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন। তবে বিত্তশালী কয়লাখনির মালিক শ্বশুরকুল তাকে কয়লাখনির বিভিন্ন অফিসে বসিয়ে দক্ষ ব্যবসায়ী কিংবা চাকুরে করে তুলতে ছিলেন সচেষ্ট। কিন্তু তারাশঙ্কর সেখানে ঠিক সফল কর্মী হয়ে উঠতে পারেননি, তবে সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে রচনা করেছেন অনন্যসব সাহিত্যকর্ম।

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী তারাশঙ্কর ১৯৩০ সালে আইন। অমান্য আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। সেখানে মানুষের রাজনীতি, বাতিকগ্রস্ততা দেখে শঙ্কিত হয়ে রাজনীতি ত্যাগের ঘোষণা দিয়ে একমাত্র সাহিত্যসেবাকেই দেশসেবার পথ হিসেবে বেছে নেন। এরপর সারাজীবন তাই সাহিত্যসাধনাকে অবলম্বন করে পেটের খোরাক, মনের খোরাক উভয়ই মিটিয়েছেন। অর্থের-মোহের-কর্মের শত প্রলোভনও তাকে এ পথ থেকে কিছুতেই বিচ্যুত করতে পারেনি।

সাহিত্যজীবন:

‘পাখির ছানা মরে গিয়েছে
মা ডেকে ফিরে গিয়েছে
মাটির তলায় দিলাম সমাধি
আমরাও সবাই মিলিয়া কাঁদি।’

একটি পাখির বাচ্চার মাটিতে পড়ে মৃত্যুর দৃশ্য শৈশবে তারাশঙ্করের মনে গভীর রেখাপাত করে ; তখন আলোচ্য কবিতাটি রচনার মধ্যদিয়ে মাত্র আট বছর বয়সেই তারাশঙ্করের সাহিত্যজীবনের শুভ সূচনা ঘটে। তারপর সাহিত্যসাধনার আনন্দে বিভিন্ন উপলক্ষে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক কবিতা রচনা করলেও তা ছিল নিজগ্রাম লাভপুরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ১৯২৬ সালে স্থানীয় প্রেসের মাধ্যমে বাল্যসঙ্গী ৭ শ্যালক-ভগ্নিপতি লক্ষ্মীনারায়ণের সহায়তায় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ত্রিপত্র’ প্রকাশিত হয়। তবে তার এই বিবিধ সাহিত্যচর্চা প্রশংসার পরিবর্তে নিন্দিত হয় বেশি। সেসময় অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন এই বলে যে : ‘হরিবাবুর ছেলেটা ইচড়ে পেকে গেল’।

চুরি করে পদ্যলিখে ছাপিয়ে বিলোচ্ছে উচ্ছন্নে যাবে। কিন্তু উচ্ছন্নে যাবার পরিবর্তে পরবর্তীকালে তারাশঙ্কর সাহিত্যসাধনার কারণেই এই লাভপুরগ্রামবাসী কর্তৃক সংবর্ধিত হয়েছিলেন একাধিকবার। আটাশ বছর বয়সে লাভপুর থেকে প্রকাশিত ‘পূর্ণিমা’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন তিনি। এই পত্রিকায় ‘কামকন্দক’ ছদ্মনামে একাধিক রচনা প্রকাশ করেন তিনি। এরপর ছেলেবেলার ডাকনাম ‘হাবু’ ব্যবহার করে হাবু শর্মা নামে ১৯৪০ সালের দিকে ‘শনিবারের চিঠি’তে কিছু রচনা প্রকাশ করেন তারাশঙ্কর। কিন্তু সেগুলো তেমন পরিণত রচনা নয়। এই সময় রাজনীতিসংশ্লিষ্ট এক কাজে সিউড়ীতে গিয়ে ‘কালি-কলম’ পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় ঘটে তাঁর।

‘কালি-কলম’ পত্রিকায় প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘পোণাঘাট পেরিয়ে’ ও শৈলজানন্দের ‘বেনামীবন্দর : জনি ও টনি’ গল্প দুটি তাকে বিস্মিত ও মুগ্ধ করে; এবং তিনি জানতে পারেন আধুনিক ছোটগল্পের রূপ ও রীতি আসলে কেমন হওয়া উচিত। এই নতুন পরিচয় আর আত্মোপলব্ধিতে অনুপ্রাণিত লেখক অল্পদিন পরেই লিখে ফেলেন তার প্রথম সার্থক রচনা ও বিখ্যাত গল্প ‘রসকলি’। তাঁর একান্ত ইচ্ছা ছিল গল্পটি বিখ্যাত পত্রিকা ‘প্রবাসী’তে প্রকাশিত হোক; কিন্তু এই গল্পটি ‘প্রবাসী’ পত্রিকাগোষ্ঠী দ্বারা সমাদৃত হয়নি। প্রচণ্ড আত্মাভিমানে হতাশ লেখক এই সময়ে সাহিত্যসাধনা পরিত্যাগ করতেও সচেষ্ট হয়েছিলেন; কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই অপর বিখ্যাত পত্রিকা ‘কল্লোলে’ তাঁর গল্পটি ছাপা হয় এবং ‘কল্লোল’-সম্পাদক তার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘আপনি এতদিন চুপ করে ছিলেন কেন?’ এরপর আর তারাশঙ্করকে থেমে থাকতে হয়নি। ‘কালি-কলম’, ‘উত্তরা’, ‘উপাসনা’সহ অনেক বিখ্যাত পত্রিকাই তার সাহিত্যকর্মগুলো সানন্দে প্রকাশ করেছে। এমন কি ‘প্রবাসী’ পত্রিকাগোষ্ঠীও তাঁকে সাদরে গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। তারপর বাকিটা তো ইতিহাস; যা সবারই জানা।

মৃত্যু:

বাংলা ১৩৭৭ সালে তারাশঙ্করের দীক্ষাগুরু, সাহিত্যসাধনার অনুপ্রেরণাদাত্রী জননী মৃত্যুবরণ করেন। এর বৎসরখানেকের মধ্যেই মস্তিস্কের রক্তক্ষরণজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাগ্রহণ করেন তারাশঙ্কর। এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ অচেতন অবস্থায় থেকে ১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৩৭৮ সালের ২৭ ভাদ্র, মঙ্গলবার সকাল ছয়টা চব্বিশ মিনিটে অনিবার্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন তিনি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এই গুণী শিল্পীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় নিমতলা শ্মশানঘাটে। তার দীর্ঘ শোক মিছিলের ধারাবিবরণী প্রচারিত হয় আকাশবাণীতে।।

তথ্যসূত্র:

১. দোলন প্রভা, ২৫ মার্চ, ২০১৯ “তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বিংশ শতাব্দীর একজন বাংলা কথাসাহিত্যিক”, রোদ্দুরে ডট কম, ঢাকা, ইউআরএলঃ https://www.roddure.com/biography/tarashankar-bandyopadhyay/

২. ভাষাপ্রকাশ নির্বাচিত শ্রেষ্ট গল্পমালা , তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রেষ্ট গল্প; ভাষাপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ  ফেব্রুয়ারি, ২০১৬; পৃ: ২৭৬-২৭৯।

Leave a Comment

error: Content is protected !!